<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জ্ঞানভিত্তিক দায় ও দরদের সমাজব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমেই নানামুখী বৈষম্য ও স্বৈরাচারী আচার-আচরণ থেকে জাতিকে মুক্তির ব্যবস্থা করার মধ্য দিয়েই আমাদেরকে বর্তমানে চলমান রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়াকে বেগবান করতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আমরা যদি শিক্ষাকে জাতির মেরুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করি, তবে সেই মেরুদণ্ডকে সোজা না করে অন্য ক্ষেত্রগুলোকে আমরা যতই প্রাধান্য দিই না কেন, আমাদের সব আয়োজন ব্যর্থ হবে। শিক্ষা নামক জাতির এই মেরুদণ্ড সুদৃঢ়, সংহত এবং স্থিতিশীল করতে হলে শিক্ষা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। সে জন্যই আগের একটি লেখায় আমরা শিক্ষা প্রশাসনের পুনর্গঠন ও বিকেন্দ্রীকরণ অপরিহার্যতা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ লেখায় সেসবের পুনরাবৃত্তি না করে শিক্ষা নিয়ে সরকারের গতাগতিক চিন্তাভাবনাপ্রসূত কয়েকটি সিদ্ধান্তের বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করব। আরো আমরা বলার চেষ্টা করব,  শিক্ষার মাধ্যমে আমরা কেন এবং কিভাবে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে আমাদের সক্রিয় হওয়া উচিত, যা দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনকে আরো বেগবান করবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তথা দেশের বর্তমান রাষ্ট্র্রীয় নীতিনির্ধারকরা রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অন্যান্য খাতের পাশাপাশি শিক্ষা খাতকে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা আশা করেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথাগত চিন্তাভাবনার বাইরে এসে নতুন করে রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে সংস্কার করবেন, যাতে জাতির জন্য একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। সংস্কার প্রক্রিয়াকে গতিশীল ও টেকসই করার জন্য শিক্ষা হলো প্রধান নিয়ামক এবং ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খাত। আমাদের মনে রাখতে হবে যে শিক্ষাই মূলত আমাদের রাষ্ট্রীয় জাতীয়তার দর্শন, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও আদর্শের ভিত্তিতে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সৃষ্টির মূলসূত্র হিসেবে কাজ করবে। একটি সুশিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হতে পারে, এটি যেমন সবার জানা কথা, তেমনি বাস্তবে শিক্ষার বিকাশে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে দূরদর্শিতার অভাব আমাদের সামনে প্রতিনিয়ত স্পষ্ট হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/06-11-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" height="294" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/06-11-2024/2/kalerkantho-ed-1a.jpg" style="float:left" width="350" />দুঃখজনক হলেও সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলোতে যা ঘটেছে তা ছাত্র-জনতার </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা পরিপূরণের সহায়ক হবে বলে মনে হয় না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা অপেক্ষায় ছিলাম, দুটি মন্ত্রণালয়কে এক করে একজন নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হবে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সম্মিলিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তথা আমাদের শিক্ষা উপদেষ্টা হবেন এমন একজন প্রাজ্ঞ মানুষ, যিনি শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তাঁর পেশাগত জীবনে একটা উল্লেখযোগ্য অংশ শিক্ষাব্যবস্থায় কিংবা শিক্ষাব্যবস্থার নানা দিক নিয়ে কাজ করেছেন এবং শিক্ষা নিয়ে তাঁর বিশেষ গবেষণা বা প্রকাশনা আছে। একই সঙ্গে তিনি হবেন দেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো বিশিষ্টজন এবং যিনি শিক্ষার আদর্শিক ও প্রায়োগিক দিকগুলো সম্পর্কে গভীরভাবে অবগত আছেন। আমাদের এটা বোঝা জরুরি যে শিক্ষক হিসোব কাজ করলেই শিক্ষাবিদ হওয়া যায় না। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখেছি, গুরুত্বপূর্ণ এই খাতের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এমন ব্যক্তিদের, যাঁরা তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে অত্যন্ত সফল হলেও শিক্ষার মৌলিক ও মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়গুলো নিয়ে তাঁদের পেশাগত জীবনে কাজ করেননি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের বর্তমান শিক্ষাবিষয়ক দুই উপদেষ্টার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, তাঁরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দিকপাল, তাতে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু কেউ প্রশ্ন তোলেনি যে কেন দুটো মন্ত্রণালয়কে এখনো পৃথক রাখা হলো এবং কেন শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের মধ্য থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়নি। মূলত সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রথাগত চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে না আসায় সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যাশিত পরিবর্তন আসেনি। শিক্ষা খাতের নানা দিকের টেকসই পরিবর্তনের জন্য একজন দক্ষ শিক্ষাবিদকে শিক্ষা উপদেষ্টা করে শিক্ষা সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া উচিত ছিল। শুধু একজন দক্ষ শিক্ষাবিদের নেতৃত্বে অন্যান্য শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা ত্রিশঙ্কু অবস্থায় পতিত শিক্ষা খাতকে উদ্ধার করতে পারি। আর এ পথেই রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ার অনিবার্য মাধ্যম হিসেবে শিক্ষা খাতে একটি দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা সম্ভব, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অব্যাহত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে আধুনিক, জীবনমুখী ও যুগোপযোগী করে তুলবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষাবিজ্ঞান একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি বিষয়। এ কারণে বিশ্বের অনেক দেশেই শিক্ষাবিজ্ঞানকে এডুকেশন স্টাডিজ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। শিক্ষার মতো একই সঙ্গে তাত্ত্বিক ও ফলিত একটি বিষয় সম্পর্কে ব্যাপক ও গভীর পড়াশোনা, গবেষণা এবং মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলে শিক্ষাব্যবস্থার নানা দিক ও বিষয় সম্পর্কে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব নয়। শিক্ষাবিজ্ঞানকে আমাদের জটিল ও বহুমাত্রিক সামাজিক প্রপঞ্চের ধারক ও বাহক হিসেবে শিক্ষাব্যবস্থার নানা খুঁটিনাটিসহ শিক্ষার প্রাণশক্তি শিক্ষকদের পেশাগত এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন ও আগ্রহ অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণে নানা সমস্যা ও শেখার অভিযাত্রায় তাদের অগ্রগতি অর্জনের নানা দিক নিয়ে কাজ করতে হয়। শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে শিক্ষাবিজ্ঞানের বহু বর্ণিল ও বহুমাত্রিক ধরন এবং ধারার জ্ঞানের ও মুক্তচিন্তার আবশ্যকতাকে অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। শুধু একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেই একজন ব্যক্তি শিক্ষাবিদ হয়ে যান না। শিক্ষাবিদ হওয়ার জন্য প্রয়োজন শিক্ষাবিজ্ঞানের মৌলিক অধীত জ্ঞানের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞতা, বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে শিক্ষা নিয়ে গবেষণা, বিভিন্ন শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে কাজ করা এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করা। এ ছাড়া একজন আধুনিক শিক্ষাবিদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শিক্ষার উন্নত মডেলগুলো নিয়ে গবেষণা এবং সেগুলোকে দেশীয় প্রেক্ষাপটে অভিযোজন করার সক্ষমতা থাকতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ কথাটা আমাদের ভুললে চলবে না যে শিক্ষা জাতি গঠনের মৌলিক হাতিয়ার। সরকারের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের কথা উঠলেও শিক্ষাকে সে প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা ও ব্যবহার করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি এখন পর্যন্ত। শিক্ষা খাতে বিগত সরকারগুলোর দলীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো যাচাই-বাছাই করার সময় এসেছে। ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা ছিল গণ-অভ্যুত্থান-উত্তর অন্তর্বর্তী সরকার চলমান কাঠামোকে পুনর্বিন্যাস্ত করে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যহীন ও স্বৈরাচারমুক্ত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কাঠামো পুনর্গঠনের প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা খাতকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে শিক্ষা সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রথাগত চিন্তাধারার গণ্ডি থেকে বের হতে পারেননি। শিক্ষা শুধু পাঠদান কিংবা পরীক্ষা গ্রহণের বিষয় নয়, বরং শিক্ষা একটি জাতির ভবিষ্যৎ তৈরি করার প্রক্রিয়া। জাতি গঠনের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> গড়ে তোলার যে মূলসূত্র শিক্ষা হতে পারে, তা আমাদের নীতিনির্ধারকরা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। শিক্ষাব্যবস্থা জাতির চেতনার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যা আমাদের রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্য ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলবে রাষ্ট্রের আদর্শ নাগরিক হিসেবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষা খাতের প্রতি আমাদের অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতার পরিণতি কী হবে সেটা এখনই ভাবা উচিত। শিক্ষার প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উদাসীনতা চলতে থাকলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে অসুবিধায় পড়তে হবে। বহুধা বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য প্রস্তুতি নিতে প্রয়োজন একটি বিজ্ঞানভিত্তিক ও মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা, যা শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত করবে। শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষা গ্রহণ নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য একটি সম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করা প্রয়োজন। অথচ আমরা এমন একটি সময়ে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে আমাদের শিক্ষার সংস্কার ও উন্নয়ন নিয়ে উল্লেখযোগ্য দৃঢ় কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লক্ষণীয় যে ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়ার মতোই শিক্ষার জন্য একটি স্থায়ী কমিশন গঠন না করে শিক্ষাক্রম সংশোধনের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটিতে আমরা দেখতে পাইনি দেশে শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনা করা, শিক্ষাবিজ্ঞানে পাঠদানে অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তিকে। যাহোক পরবর্তীতে সে কমিটি বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষা খাতে এই উদাসীনতা শুধু শিক্ষার্থীদেরই ক্ষতি করছে না, বরং এটি পুরো জাতির অগ্রগতি এবং ভবিষ্যেকও প্রভাবিত করছে। তাই এখনই সময় শিক্ষা খাতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার এবং বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করে জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারণের উদ্যোগ গ্রহণ করার। প্রয়োজন প্রথমে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করা, তারপর সে কমিশনের তত্ত্বাবধানে নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা ও নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কমিটি গঠন করা। নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়ন কমিটি চলমান শিক্ষাক্রমের পরিমার্জন ও পরিবর্তনের কাজটি এগিয়ে নিয়ে যাবে, যাতে পূর্বের শিক্ষাক্রমগুলোর ভালোমন্দ ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নে তাঁরা জাতীয় আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল ঘটাতে পারেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রথাগত চিন্তাধারার গণ্ডি থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতি গঠনের কথা ভাবতে হবে। তাদের সে ভাবনায় শিক্ষা হবে টেকসই রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতি গঠনের মৌলিক হাতিয়ার। আধুনিক শিক্ষা শুধু শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদান ও পরীক্ষা গ্রহণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শিক্ষা জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সমঝোতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে জ্ঞানীয় অর্থনীতির প্রাধান্যের এ যুগে টিকে থাকার প্রধান মাধ্যম। একটি উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা জাতিকে অব্যাহত শিক্ষা-গবেষণা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং বিশ্বমানে শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজের অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে সহায়তা করে। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে সঠিক ব্যক্তিদের নিয়োগ, প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার পুনর্বিন্যাস এবং শিক্ষার উন্নয়নে ধারাবাহিক ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করবে। আমরা আশা করছি, প্রথাগত চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে এসে সরকার শিক্ষা সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত বাস্তবসম্মত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">mahruf@ymail.com</span></span></span></span></p>