<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্ষমতার মাত্র একটা কর্তব্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনগণের সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> (বেঞ্জামিন ডিজরাইলি, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী)।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সামাজিক সুরক্ষা বা বৃহত্তর অঙ্গনে সামাজিক কল্যাণ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেনের নাম আপনা-আপনি এসে যায়। প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক কল্যাণ নিয়ে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদের চিত্তাকর্ষক চিন্তা এবং ক্ষুরধার যুক্তি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গুরুত্ব নিহিত তার নিজের জন্য নয়, বরং প্রবৃদ্ধি হচ্ছে মানুষের হাতে একটা অস্ত্রের মতো, যা পছন্দমতো কিছু করার জন্য তাকে সামর্থ্যবান করে তোলে। এটা সামাজিক কল্যাণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যার মতো বিষয় মানুষের জীবনের গুণগত মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে এগুলো মানুষকে নিজের এবং বড় পরিসরে সমাজের চাহিদা ভালোভাবে পূরণে সক্ষম করে তোলে। দিনের শেষে, প্রবৃদ্ধির প্রয়োজন একটা উদ্দেশ্য সাধনের জন্য এবং সেই উদ্দেশ্যটা হচ্ছে মানবজীবনের মান উন্নীত করা। বাংলাদেশ গেল কয়েক দশকে সন্তোষজনক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, কিন্তু প্রবৃদ্ধির সুফল সবার ঘরে পৌঁছায়নি বলে অরক্ষিত ও বঞ্চিতদের জন্য সরকারিভাবে বিশেষ বন্দোবস্তের অপর এক নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সামাজিক নিরাপত্তা জাল কর্মসূচি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, সংক্ষেপে সামাজিক সুরক্ষা (সোশ্যাল প্রটেকশন)। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুই.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দারিদ্র্য ও বৈষম্য হ্রাসে এবং জনসাধারণের জীবনমানের উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যয়ের প্রকাশ পাওয়া যায় বিভিন্ন সরকারি দলিলে বিধৃত কৌশল ও নীতিমালায়; যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রূপকল্প ২০২১, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২০২১) এবং বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। তবে স্বীকার্য যে দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হলেও জনগণের উল্লেখযোগ্য একটা অংশ নানা রকম কারণে এখনো দারিদ্র্যঝুঁকিতে রয়ে গেছে। যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে অবস্থান করছে, সেই জনগোষ্ঠী ছাড়াও দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে অবস্থানকারী জনগণ বিবিধ কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে ঝুলছে। বলা বাহুল্য, দরিদ্র ও প্রায় দরিদ্র মানুষের পক্ষে প্রদেয় সম্পদ দিয়ে এসব ঝুঁকি ও বিপর্যয় মোকাবেলা করা সম্ভব হয় না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অতএব, মূলত এসব ঝুঁকি মোকাবেলায় দরিদ্র ও ঝুঁকিপ্রবণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তাকল্পে সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির সূত্রপাত ঘটে। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির একটা দীর্ঘ ইতিহাস আছে, যার শুরু সত্তরের দশকের গরিবের জন্য রিলিফ ও ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিডি) কর্মসূচির মাধ্যমে। আশির দশকে মূল ফোকাসে ছিল দুর্যোগে সাড়া দেওয়া এবং রিলিফ কার্যক্রম। এই সময়ে খাদ্য সাহায্য ছাড়াও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে উন্নয়নের অংশটুকু ছিল উল্লেখযোগ্য। নব্বইয়ের দশকে বিশেষ গোষ্ঠীকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে; যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বয়স্ক, বিধবা এবং অক্ষম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়, যেগুলোর সঙ্গে প্রায়ই উন্নয়ন অংশীদার এবং এনজিও জড়িত ছিল। ক্রমে ক্রমে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নগদ হস্তান্তরের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে এবং ২০০০ সাল নাগাদ বিভিন্ন ধরনের নাজুকতা ও ঝুঁকি মোকাবেলায় বিভিন্ন কর্মসূচির আবির্ভাব ঘটতে থাকে। দরিদ্রকে টেকসইভাবে টেনে তোলার জন্য গ্র্যাজুয়েশন কর্মসূচি অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এসব নিরাপত্তা জাল কর্মসূচি দৃঢ়তর করা হয়। প্রসঙ্গত, জানান দেওয়া দরকার যে স্বাধীনতার পর থেকে সার্বিক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জনগণের প্রয়োজনের নিরিখে ক্রমবর্ধিষ্ণু</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যখনই সংকট, তখনই বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে; কখনো বিদ্যমান কর্মসূচির সম্প্রসারণ ঘটেছে। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ঝুঁকি মোকাবেলায় একটা সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন অনুভূত হলে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সামাজিক সুরক্ষায় একটা কৌশলগত এবং সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময়ের বিবর্তনে প্যারাডাইম পরিবর্তন ঘটে। দারিদ্র্য ও নাজুকতা নিরসনে সরকারি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বিভিন্ন রকমের নিরাপত্তা জালের মধ্যেই সীমিত ছিল এবং নিরাপত্তা জালের উদ্দেশ্য সংকটকালে অব্যবহিত মৌলিক প্রয়োজন মেটানো অর্থাৎ স্বল্পকালীন লক্ষ্য হলো অভিঘাতের তাত্ক্ষণিক প্রভাব হ্রাস এবং ভোগ মসৃণ করা। অনেকগুলো খণ্ডিত কর্মসূচি সমেত, ২৩টি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব জটিল। বর্তমানে বাজেট কর্তৃক অর্থায়িত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার কর্মসূচির সংখ্যা ১৪৩। জিডিপির হিস্যায় ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ ২.৫ শতাংশ, যা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের (এনএসএস) লক্ষ্যমাত্রা ৩ শতাংশের নিচে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা জাল কর্মসূচি চারটি বড় দাগে শ্রেণিভুক্ত করা চলে : ক. অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমে হতদরিদ্রদের ক্ষমতা বৃদ্ধি, খ. ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচির মাধ্যমে স্বনিয়োজিত কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, গ. দরিদ্রদের খাদ্য নিরাপত্তার খাতিরে স্বল্পমূল্যে খাদ্য বিতরণ এবং অন্যান্য কর্মসূচি। যা হোক, সামাজিক নিরাপত্তামূলক কর্মসূচিতে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যাকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার একটি সমন্বিত ও ব্যাপকভিত্তিক জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগকে (জিইডি) জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএসএস) প্রণয়নের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলের লক্ষ্য হলো বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিগুলোর পরিমার্জন ও সংশ্লেষণের মাধ্যমে এগুলোকে আরো নিখুঁত, দক্ষ ও কার্যকর করে তোলা এবং ব্যয়িত অর্থ থেকে সবার্ধিক সুবিধা অর্জন নিশ্চিত করা। এটি সনাতনি ধারণার পরিবর্তে একটি ব্যাপক ও বিস্তৃত পরিধির আধুনিক সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটাবে। এই নতুন ব্যবস্থায় ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশের (যখন অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা হবে ৫ শতাংশের চেয়ে কম) বাস্তবতায় কর্মসংস্থান নীতি ও সামাজিক বীমা ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আওতা ও পরিধি বিস্তৃত করার মাধ্যমে এবং কর্মসূচির নকশা ও আদলের উন্নয়ন ঘটিয়ে এ কৌশল একদিকে যেমন আয়বৈষম্য কমাতে সহায়তা করবে, তেমনি অন্যদিকে এটি মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখবে। সামাজিক নিরাপত্তার এই জাতীয় কৌশলে কেবল বাংলাদেশের বাস্তবতাই প্রতিফলিত হয়নি, পাশাপাশি এতে প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক দৃষ্টান্তলব্ধ জ্ঞান ও ধারণাও অধিগ্রহণ করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চার.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দরিদ্র ও দারিদ্র্যঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য গৃহীত এসব কর্মসূচির আওতা ও পরিধি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সত্যি, তবে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য অংশ এখনো এসব কর্মসূচির আওতায় আসেনি, নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচিগুলো থেকে প্রাপ্ত গড় সুবিধার পরিমাণ খুবই কম। কর্মসূচি বাস্তবায়নে নিশানা নির্ধারণে রাজনৈতিক বিবেচনা এবং প্রকৃত মূল্যে সুরক্ষার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এমনতর এন্তার অভিযোগ উঠছে। ফলে একটি কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে গৃহীত দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচিতে ব্যয়িত অর্থের যে প্রভাব থাকা উচিত সে তুলনায় এসব কর্মসূচিতে ব্যয়িত অর্থের প্রভাব অনেক কম। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সানেমের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক বজলুল হক খন্দকার মনে করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ অরক্ষিত। তারা যেকোনো ধাক্কায় হঠাৎ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে, কভিডের সময় যা দেখা গেল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষকে নিয়ে আসা উচিত এবং এই বাস্তবতায় দেশের মধ্যবিত্তদের জন্যও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রয়োজন বলে মনে করেন বজলুল হক খন্দকার। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মালয়েশিয়ার মতো দেশে দেখা গেছে, কভিডের অভিঘাতে সে দেশের দরিদ্রদের তুলনায় মধ্যবিত্তরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের দেশেও মধ্যবিত্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="সামাজিক সুরক্ষায় ভাবনা" height="313" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/08.July/30-08-2024/Untitled-1.jpg" style="float:left" width="320" />তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার দুটি কাজ করতে পারে। প্রথমত, সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতা বৃদ্ধি করে দেশের অন্তত ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষকে এর আওতায় নিয়ে আসা। তবে সরকারের সীমাবদ্ধতা আছে, তার পক্ষে এটা করা সম্ভব না-ও হতে পারে। দ্বিতীয়ত, মানুষের যখন অবস্থা ভালো থাকে, তখন পেনশন, বেকারত্ব বীমা বা স্বাস্থ্য বীমার মতো সুরক্ষা মানুষ নিতে পারে। দুর্যোগের সময় মানুষ যেন সেখান থেকে ঋণ নিতে পারে, সে রকম ব্যবস্থা থাকতে হবে। এই দুটি মাধ্যমে দেশে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে যেতে পারে, সরকার সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ২.৫ থেকে ৩ শতাংশ বরাদ্দ দিয়েছে। তবে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন বাদ দিলে তা ১.৫ থেকে ১.৭ শতাংশে নেমে আসে, ...আবার সুবিধাভোগী নির্বাচনেও নানা ধরনের সমস্যা আছে। যত মানুষ সরকারের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আছে, তাদের মধ্যে ৭১ শতাংশ ভুল মানুষকে দেওয়া হয়। আবার ৪৬.৫ শতাংশ আছে, প্রয়োজন না থাকলেও যারা ভাতা পাচ্ছে। সে জন্য সঠিক মানুষ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ...অন্যদিকে দেশের শহরাঞ্চলে দরিদ্রের সংখ্যা ১৮.৯ শতাংশ হলেও সুরক্ষা পাচ্ছে ১০.৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষ। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে দরিদ্রের সংখ্যা ২৬.৪ শতাংশ হলেও সুরক্ষা পাচ্ছে ৩৫.৭ শতাংশ মানুষ। এ ধরনের সমস্যার কারণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি অতটা কার্যকর হচ্ছে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঁচ.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেষ বিচারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সংস্কারে রাজনৈতিক ইচ্ছা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করতে এর বিকল্প নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থনীতির পরিধি ও কর্মকাণ্ড বাড়ছে এবং জিডিপি ও কর্মসংস্থানে আধুনিক শিল্পভিত্তিক ও সংগঠিত সেবা খাতের অংশ বাড়ছে, সেহেতু সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় চাহিদায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। সামাজিক সেবা প্রদানের পদ্ধতি সুরক্ষাবেষ্টনী থেকে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিস্তৃত করা প্রয়োজন হবে এবং একে জীবনচক্র পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত করে এতে কর্মসংস্থান নীতি ও সামাজিক বীমা ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে একে আধুনিক নগরভিত্তিক অর্থনীতির চাহিদার সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">লেখক : অর্থনীতিবিদ, সাবেক উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়</span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p>