<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মার্কিন প্রেসিডেন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে নির্বাচিত হন না, ইলেকটোরাল কলেজ নামে একটি ব্যবস্থার মাধ্যমে নির্বাচিত হন। কিন্তু কী এই ইলেকটোরাল কলেজ? এটা কিভাবে কাজ করে? অনেকের কাছেই ইলেকটোরাল কলেজ একটি জটিল বিষয় মনে হতে পারে। এমনকি অনেক মার্কিন নাগরিকও এই বিষয়টিকে সহজে বুঝে উঠতে পারেন না। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন মার্কিন এই ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? ১৭৮৭ সালে মার্কিন সংবিধান প্রণেতারা এই পদ্ধতি চালু করেন। ব্রিটেন থেকে যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা পাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ছিল একেবারে নতুন একটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্রে ফাউন্ডিং ফাদার্স হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিরা এমন একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন, যা ক্ষমতাকে একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত করবে না। রাজতন্ত্রের মতো কাঠামো তৈরি করতে পারে এমন ব্যবস্থা থেকে তাঁরা নিজেদের মুক্ত করতে চেয়েছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কিন্তু সম্পূর্ণরূপে জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার ধারণাটি এই ইলেকটোরাল ব্যবস্থার ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই ব্যবস্থার প্রণয়নকারীরা উদ্বিগ্ন ছিলেন যে ভোটাররা যথেষ্ট জানাশোনার মাধ্যমে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট শিক্ষিত কি না। তখন জাতীয় সাক্ষরতার হার কম ছিল এবং সেই সময় অন্য কোনো দেশই জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নেতাদের বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনগণের সরাসরি ভোটের এবং একক কারো হাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মধ্যবর্তী একটি পন্থা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এই ইলেকটোরাল কলেজকে। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, প্রতিটি রাজ্যে নিযুক্ত ইলেকটোরালরাই প্রেসিডেন্টকে ভোট দেবেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইলেকটোরাল কলেজ কিভাবে কাজ করে : তাত্ত্বিকভাবে মার্কিন সরকার সমন্বিত নির্বাহী বিভাগ (প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভা), বিচার বিভাগীয় বিভাগ (সুপ্রিম কোর্ট) এবং আইন প্রণয়ন বিভাগ (কংগ্রেস) নিয়ে গঠিত। কংগ্রেস আবার গঠিত দুটি সত্তা নিয়ে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেট।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সিনেটে প্রতিটি রাজ্যের দুজন করে সদস্য থাকেন। তাঁরা ফেডারেল স্তরে সমগ্র রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। হাউসের প্রতিনিধিরা একটি রাজ্যের মধ্যে পৃথক জেলার প্রতিনিধিত্ব করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটি রাজ্যের কংগ্রেসের কতজন প্রতিনিধি থাকবেন, সেটা আদমশুমারির মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। দেশটিতে ১০ বছর পর পর আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্যালিফোর্নিয়া হলো সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য, তাই এর প্রতিনিধির সংখ্যাও সর্বোচ্চ ৫২। অপেক্ষাকৃত ছোট জনসংখ্যার রাজ্য যেমন আলাস্কায়, কংগ্রেসের প্রতিনিধি মাত্র একজন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিটি মার্কিন রাজ্য তার কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের প্রত্যেক সদস্যের জন্য একটি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট পায়। এর মানে, ক্যালিফোর্নিয়ায় ৫৪টি ইলেকটোরাল কলেজের ভোট রয়েছে ৫২টি হাউস প্রতিনিধিদের জন্য এবং দুটি সিনেটরদের জন্য।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলাস্কার রয়েছে তিনটি ভোট, একটি তার হাউস প্রতিনিধির জন্য এবং দুটি সিনেটরদের জন্য। সব মিলিয়ে কংগ্রেসের ৫৩৫ জন সদস্য রয়েছেন এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে রয়েছেন তিনজন নির্বাচক। অর্থাৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন এর অন্তত ২৭০টি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:Vrinda">৷</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমেরিকানরা তাহলে কাকে ভোট দেন : মার্কিন নাগরিকরা যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন, তখন তাঁরা আসলে সেই প্রার্থীর ইলেকটোরালদের ভোট দেন। বেশির ভাগ রাজ্যে কোনো প্রার্থী সাধারণ জনগণের ভোটে জয়ী হলে পুরো রাজ্যের ইলেকটোরালের ভোট পান। উদাহরণস্বরূপ, ক্যালিফোর্নিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে কমলা হ্যারিস বিজয়ী হলে তিনি সেই রাজ্যের ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোটই পাবেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাইন এবং নেব্রাস্কাতে অবশ্য পদ্ধতি ভিন্ন। এই দুই রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীকেই সব ভোট দেওয়া হয় না। এই দুই রাজ্যে জনগণের ভোটের হারের ওপর ভিত্তি করে ইলেকটোরাল ভোটও প্রার্থীদের মধ্যে ভাগ করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন কোনো সাংবিধানিক আইন নেই, যেখানে রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পাওয়া প্রার্থীকেই ভোট দিতে ইলেকটোরাল ভোটাররা বাধ্য। তবে রাজ্যের ভোটারদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ইলেকটোরাল কলেজের ভোট দেওয়া একেবারেই বিরল। ইউএস অফিস অব ফেডারেল রেজিস্ট্রার অনুসারে, মার্কিন ইতিহাসে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৯৯ শতাংশেরও বেশি ইলেকটোরাল ভোটাররা তাঁদের অঙ্গীকার অনুযায়ীই ভোট দিয়ে এসেছেন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জনপ্রিয় ভোটে হেরেও কি কেউ প্রেসিডেন্ট হতে পারেন : হ্যাঁ। মার্কিন ইতিহাসে পাঁচবার এমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১৬ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প জনপ্রিয় ভোটে প্রায় ৩০ লাখ ভোটে পিছিয়ে থাকলেও ইলেকটোরাল কলেজে জিতেছিলেন। জর্জ ডব্লিউ বুশ জনপ্রিয় ভোটে হেরে গেলেও ২০০০ সালে আল গোরের বিরুদ্ধে ইলেকটোরাল কলেজে জয়ী হন। ১৮০০ শতকেও এমন ঘটনা তিনবার ঘটেছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোনো প্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে কী হবে : দুই প্রার্থীই ২৬৯টি করে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন, এমন ঘটনা ঘটলে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসকে বিজয়ী নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিটি রাজ্য প্রতিনিধি একটি ভোট পান এবং জয়ের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ (২৬) ভোট প্রয়োজন হয়। মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে অবশ্য কখনোই ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে দুই প্রার্থীর সমান সমান ভোট পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিজয়ী কখন ঘোষণা করা হয় : কংগ্রেস ৬ জানুয়ারি ভোট গণনা করে এবং ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের দিন ফলাফল আসার সময়ই সাধারণত বিজয়ী কে, সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। ফলে ৬ জানুয়ারির ঘোষণা সাধারণত আনুষ্ঠানিকতাতেই পর্যবসিত হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে ভোট গণনা করতে কিছুক্ষেত্রে বাড়তি সময়ও লাগতে পারে। ২০০০ সালে জো বাইডেনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয় ৭ নভেম্বর নির্বাচনের দিন ৩ নভেম্বরের চার দিন পর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুইং স্টেট কী? কেন গুরুত্বপূর্ণ : যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ রাজ্য বছরের পর বছর একই দলকে ভোট দিয়ে এসেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৯৯২ সাল থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্যালিফোর্নিয়ায় ডেমোক্র্যাট জিতে এসেছে। ১৯৮০ সাল থেকে মিসিসিপি জিতেছে রিপাবলিকানরা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যদিকে সুইং রাজ্যগুলো কখনো ডেমোক্র্যাট, কখনো রিপাবলিকান প্রার্থীদের নির্বাচিত করে। এই রাজ্যগুলোতে প্রার্থীরা ভোটের জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালান। কারণ এই রাজ্যগুলোই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের ফল নির্ধারণ করতে ভূমিকা রাখে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই বছরের মূল নির্বাচনী লড়াই হবে আরিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া, উত্তর ক্যারোলাইনা, উইসকনসিন ও মিশিগানে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২৪ সালে মার্কিনিরা আর কোন কোন ভোট দিচ্ছেন : প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন রয়েছে এ বছর। ৫ নভেম্বর সিনেট এবং হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য নির্বাচনে ভোট হবে। সিনেটে ৩৩টি এবং হাউসে ৪৩৫টি, মোট ৪৬৮টি আসনে লড়াই হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনেক রাজ্যে ৫ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি রাজ্যের আরো নানা স্তরের নির্বাচনেও ভোট দেবেন। ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের ওপর নির্ভর করে ইস্যুও আলাদা হবে। নভেম্বর মাসে বেশ কয়েকটি রাজ্যের ব্যালটে সবচেয়ে বড় এবং রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত বিষয়গুলোর একটি হিসেবে গর্ভপাতের অধিকারটিও থাকবে। সূত্র : এএফপি</span></span></span></span></p>