<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রবীণ নাগরিকদের মতে, ফেনীতে গত ১০০ বছরে এমন বন্যা দেখেননি কেউ। গত ২১ আগস্ট পরশুরামের সলিয়া, মীর্জানগর ও চিথলিয়া এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে উজানের পানি। সেই সঙ্গে চলতে থাকে অবিরাম বৃষ্টি। প্রথমে প্লাবিত হয় পরশুরাম ও ফুলগাজী। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর, দাগনভূঞা ও সোনাগাজীতে। এখনো পানি জমে আছে দাগনভূঞার বেশ কয়েকটি গ্রামে। জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বন্যায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা ফেনীতে এসে বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালান। ১২ দিন ধরে টানা তৎপরতা চালাচ্ছেন বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা। বন্যার শুরুতেই সোনাগাজী থেকে নৌকা এনে জেলা স্বেচ্ছাসেবী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একত্র হয়ে উদ্ধার তৎপরতা চালান বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা। এরপর বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আটকে পড়া মানুষের মাঝে তিন দিনে ৬০০ প্যাকেট রান্না করা খিচুড়ি, পানি, বিস্কুট ইত্যাদি বিতরণ করা হয়। ভয়াবহ বন্যায় ২২ ও ২৩ আগস্ট বিভিন্ন এলাকা থেকে ফেনী সদরে ছুটে আসে প্রায় দুই লাখ মানুষ। কেউ আশ্রয় নেয় আশ্রয়কেন্দ্রে, কেউ বা খোলা আকাশের নিচে। তাদের মধ্যে ১০০ জনের মাঝে নগদ বিতরণ করা হয় ৩০ হাজার টাকা। পানি কিছুটা কমতে শুরু করতেই শুরু হয় খাদ্য সহায়তা বিতরণ। এ পর্যন্ত জেলার ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা, ফেনী সদর ও পরশুরামের ২০০ পরিবারকে দেওয়া হয়েছে খাদ্য সহায়তা। এসব প্যাকেটে ছিল চাল, ডাল, আলু, তেল, চিনি, লবণ, পেঁয়াজ ও বিশুদ্ধ পানি। সর্বশেষ গত ১ সেপ্টেম্বর ফেনী সদরের মোটবী ইউনিয়নের ১০০ পরিবারকে দেওয়া হয় ৫০০ কেজি চাল। এসব কাজের নেতৃত্ব দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের জেলা সভাপতি ফয়জুল হক বাপ্পি, সহসভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, মহিম উদ্দিন পৃথ্বী ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আনোয়ার জাকি। দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেন সংগঠনের সদস্য আমের মক্কী, সমর দেবনাথ, মিজানুর রহমান, উসায়িদ আনোয়ার, দিলরুবা আক্তার রুমা, পিটুল চৌধুরি, রেহানা পারভীন, রাসেল চৌধুরিসহ একঝাঁক তরুণ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা বন্যার শুরু থেকে এই পর্যন্ত নানা তৎপরতায় ফেনীবাসীর প্রশংসা পেয়েছেন। বিশিষ্ট সাংস্কৃৃতিক সংগঠক নাসির উদ্দিন সাইমুম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুরু থেকেই যেভাবে বসুন্ধরা শুভসংঘ নানা কর্মসূচি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, তা আমাদের সবার জন্য অনুকরণীয়। এত বড় দুর্যোগ সবাই মিলে মোকাবেলা না করলে মানুষের কষ্ট আরো বেশি হতো।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> উচ্চ আদালতের আইনজীবী মিনহাজুল হক মিটুল বলেন, স্বেচ্ছাসেবী কর্মী-সংগঠকরা আমাদের শক্তি। গত কয়েক দিনে বসুন্ধরা শুভসংঘের সদস্যরা যেভাবে কাজ করছেন, তা দেখে অনেক ভালো লাগল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> জেলা কমিটির সভাপতি ফয়জুল হক বাপ্পি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে ছাগলনাইয়ায় আমাদের একটি মেডিক্যাল ক্যাম্প হওয়ার কথা রয়েছে। স্কুল খোলা হলে আমরা শিশুদের জন্য কিছু শিক্ষা উপকরণ প্রদান করব, যাতে তারা আবার পড়াশোনায় ফিরতে পারে। শুভসংঘের তৎপরতায় যারা সহায়তা দিচ্ছেন, সবাইকে ধন্যবাদ। আগামী দিনে কয়েকটি ধসে পড়া ঘর মেরামতেরও পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>