<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মেঘনা নদীর ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে ছোটবেলায় মা-বাবার সঙ্গে জন্মস্থান ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের নাদের মিয়ারহাট এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে মো. বাবুল (৪০)। ঢাকার মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বরে থেকে এক ব্যাংকারের প্রাইভেট কার চালাতেন। বড় মেয়ে লিজা আক্তারকে বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে মো. শুভ একটি হেফজ মাদরাসায় ও ছোট মেয়ে নুরজাহান প্রথম শ্রেণিতে পড়ালেখা করে। মা-বাবা, স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে ছিল বাবুলের সুখের সংসার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৮ জুলাই ঢাকার উত্তরায় তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং ১৯ জুলাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। শহীদ বাবুলের মৃত্যুতে সুখের সংসার নিমিষেই দুঃখের সাগরে পরিণত হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বামী হারিয়ে স্ত্রী সুরমা বেগমের দুঃখের শেষ নেই। সংসারের খরচ জোগাতে ফুটপাতে চায়ের দোকান করছেন তিনি। শহীদ বাবুলের স্ত্রী সুরমা বেগম জানান, ছোটবেলায় মা-বাবার সঙ্গে ঢাকায় যান তাঁর স্বামী বাবুল। গত ১৮ জুলাই সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে সকালের নাশতা খেয়ে গাড়ি চালাতে যান। যাওয়ার সময় ছেলে শুভকে বলেছেন, </span></span><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাইরের অবস্থা ভালো না। ঘর থেকে বের হওয়ার দরকার নেই</span></span><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এটিই ছিল পরিবারের সঙ্গে তাঁর শেষ কথা। এরপর গাড়ির মালিককে নিয়ে ঢাকার উত্তরা এলাকায় পৌঁছে দেন তিনি। দুপুর ১টার দিকে পাশের মসজিদে নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। পরে এক পরিচিত ব্যক্তি তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই হাসপাতালেই ১৯ আগস্ট দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবুল। পরদিন সকালে মিরপুর দুয়ারিপাড়া কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুরমা বেগম আরো জানান, বাসার পাশে ফুটপাতে তাঁদের একটি চায়ের দোকান ছিল। স্বামী বাবুল প্রাইভেট কার চালানো শেষে অবসর সময়ে দোকানটি চালাতেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর তাঁর পরিবার এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায়। পরে বাধ্য হয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া চায়ের দোকানের হাল ধরেন তিনি। বর্তমানে ওই চায়ের দোকানের আয় দিয়েই কোনোমতে তাঁদের সংসার চলছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর শুধু ভোলা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছেন। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি কোনো লোকই তাঁদের খবর রাখেনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span dir="ltr" lang="HR" style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে ছেলে বাবুল মারা যাওয়ায় তাঁর বৃদ্ধ বাবা আবুল কাশেম ও মা রাবেয়া বেগম বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। বড় ছেলে মারা যাওয়ায় সংসারে অভাবের কারণে মা-বাবা ছোট ছেলে আলমগীরের কাছে চলে গেছেন।</span></span></span></span></span></p>