<p>গাইবান্ধায় ছাত্রলীগ নেতাকে দিয়ে জমি দখল ও ১৪৪ ধারা ভেঙে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছিলেন গত ১০ জুন। অভিযোগ উঠেছে, তার পরেও জমিটিতে অবকাঠামো নির্মাণ করে যাচ্ছেন কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রেজাউল করিম। তবে ঢাকার খামারবাড়িতে কর্মরত অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।</p> <p>সরেজমিনে গাইবান্ধা সদর থানার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের রিফাইতপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, বিরোধপূর্ণ জমিটিতে ২২ বছরের পুরনো প্রাচীর ভেঙে তোলা হয়েছে নতুন দেয়াল। পাশেই স্তুপ করে রাখা হয়েছে আরো নির্মাণসামগ্রী। ভুক্তভোগি পরিবার ও প্রতিবেশিদের অভিযোগ, ২০০২ সালে ওহিদুল ইসলাম জমিটি কিনে নেন কৃষি কর্মকর্তা রেজার মামা মোফাজ্জেল হোসেনের কাছ থেকে। চারপাশে সীমানা প্রাচীরও বসান ওহিদুল ইসলাম। তবে গত মার্চ মাসে জায়গার মালিকানা দাবি করে বাগানের ভেতর অবৈধভাবে প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেন রেজা।</p> <p>রেজার মামী নার্গিস বেগম জানান, তার পাঁচ শতাংশ জায়গাও দখল করে রেখেছেন এই রেজা। এজন্য তিনিও গাইবান্ধা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।</p> <p>রিফাইতপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, জমির মালিক ওহিদুল ঢাকার বাসিন্দা। গত জানুয়ারিতে শ্বশুরের মৃত্যুর পর সেখানে আর তার কেউ থাকে না। এই সুযোগে রেজা আইনের তোয়াক্কা না করে সম্পদ হাতিয়ে নিচ্ছেন।</p> <p>জমির মালিক ওহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রেজা অর্ধেক দামে জমিটা কিনতে চেয়েছিল। রাজি না হওয়ায় গত ১০ জুন তার আপন ভাইয়ের শালা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী জোয়ার্দার ও তার ক্যাডারদের উপস্থিতিতে সীমানা প্রাচীর ভেঙে নতুন দেয়াল তোলার চেষ্টা করে। ৬ সেপ্টেম্বর থেকে আবারো নতুন করে ইচ্ছেমতো ভাঙাগড়ার কাজ করছে তারা।’</p> <p>জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ জোয়ার্দার এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এর সাথে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি ঘটনার কিছুই জানেন না।</p> <p>মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, গত ২০ এপ্রিল গাইবান্ধা থানায় সব পক্ষকে নিয়ে বসেছিল থানা কর্তৃপক্ষ। সেখানে ইউসুফকে ব্যবহার করে  রেজা সরাসরি প্রভাব বিস্তার করেন। এমনকি তিন দিনের ভেতর তাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। এ ঘটনার পরই তার বদলি হয় বলেও জানান জসিম।</p> <p>আইনজীবী আবু শাহীন বলেন, ১৪৪ ধারা ভঙ্গের বিপরীতে ১৫ জুলাই দণ্ডবিধির ১৮৮ নথিভুক্ত করেন আদালত। কিন্তু অজানা কারণে তদন্তের নির্দেশ দীর্ঘদিন আটকে ছিল। এই সুযোগে রেজা জমিতে ভাঙাগড়ার কাজ চালায়। যা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।</p> <p>এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কৃষি কর্মকর্তা রেজা ২২ বছর ধরে ভোগ করে আসা জায়গায় ১৪৪ ধারা ভেঙে স্থাপনা নির্মাণের উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারেননি। মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে রেজা বলেন, দলিলপত্র অনুযায়ী ওই জমিটি তার। সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেই তার সম্পর্ক রাখার সুযোগ নেই।</p> <p>এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, ‘অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনা হাতে পৌঁছেছে। দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।’</p> <p> </p> <p> </p>