<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যশোরে সাড়ে ১৫ বছর ধরে অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নাগাল পাচ্ছে না আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এই সন্ত্রাসীচক্রের প্রধানরা ৫ আগস্টের পর রাতারাতি উধাও হয়ে গেছে। তবে বাহিনীগুলোর পেছনের সারির সদস্যদের সন্তর্পণে চলাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশের বিশেষ কোনো উদ্যোগও দৃশ্যমান নয়। ফলে তারা আবার  <br /> স্বরূপে আবির্ভূত হতে পারে বলে জনমনে আশঙ্কা রয়েছে। তবে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারে আশাবাদী পুলিশ সুপার।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, আওয়ামী রেজিমের প্রথম দিকে যশোর শহর ও শহরতলিকেন্দ্রিক সন্ত্রাসীদের একক নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত ছিলেন দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হন। এরপর যশোর শহরকেন্দ্রিক রাজনীতিতে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়তে থাকেন চাকলাদার। সেই স্থান দখল করে নেন সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের সময় পর্যন্ত যশোর শহর ও শহরতলিকেন্দ্রিক সন্ত্রাসীরা স্পষ্ট দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। এক পক্ষ শাহীনপন্থী, অন্য পক্ষ নাবিলপন্থী।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একটি গোয়েন্দা সংস্থার তৈরি করা প্রতিবেদনে বর্ণনা করা হয়, যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা এলাকায় ভুট্টো, শাওন, হাফিজ, আরবপুর এলাকায় সাইদুজ্জামান বাবু ওরফে দাঁতাল বাবু, পুরাতন কসবা এলাকায় শেখ জাহিদুল ইসলাম মিলন ওরফে টাক মিলন, শঙ্করপুর ও ষষ্ঠীতলাপাড়া এলাকায় আলমগীর কবির ওরফে হাজি সুমন, বড়বাজার এলাকায় তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, উপশহর এলাকায় মনসুর ও নান্নু ওরফে কাঠ নান্নু, পালবাড়ি এলাকায় লিখন নিজ নিজ নামে বাহিনীর নামে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। এসব বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি, সম্পত্তি দখল, টেন্ডারবাজির মতো গুরুতর অপরাধে যুক্ত। এ ছাড়া শহরতলির কিসমত নওয়াপাড়া এলাকায় নবাব, চাঁচড়া ভাতুড়িয়া এলাকায় পান্নু, ভেকুটিয়া এলাকায় ফকির শাহারুল ইসলাম, চুড়ামনকাটি এলাকায় আব্দুল মান্নান মুন্না, বিরামপুর এলাকায় কেরামত সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনা করতেন। তাঁরা জমি দখল, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় জড়িত।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে নাম আসা ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন প্রতিপক্ষকে এলাকাছাড়া করে অথবা কেন্দ্র দখল করে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে ভোট কেটে। আলোচিত সন্ত্রাসীদের মধ্যে জাহিদুল ইসলাম মিলন ও আলমগীর কবীর যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর। ফন্টু চাকলাদার যশোর সদর উপজেলার এবং ফকির শাহারুল আরবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। আব্দুল মান্নান মুন্না চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ সূত্র বলছে, যশোর পৌরসভার বিলুপ্ত পরিষদে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সাইদুর রহমান রিপন ওরফে ডিম রিপন, শাহেদ আলম নয়ন ওরফে হিটার নয়নসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে লেবুতলার আলিমুজ্জামান মিলন, রামনগরের মাহমুদ হাসান লাইফ, নরেন্দ্রপুরের রাজু আহমেদসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বাহিনী লালনসহ নানা অপকর্মে যুক্ত থাকার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর বাইরে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল ও সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহীর বিরুদ্ধে খুন, টেন্ডারবাজি, দখলবাজির অভিযোগ আছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন যশোর জেলা বিএনপি অফিসে তাণ্ডব চালায় তৎকালীন শাসকদলের ক্যাডাররা। পুলিশি কার্যক্রম কিছুটা স্বাভাবিক হলে এক মাসেরও বেশি সময় পর দলটির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয় (মামলা নম্বর ২৩, তারিখ ৮/৯/২৪)। এই মামলায় এজাহারভুক্ত ৬৩ আসামি ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৭০ থেকে ৭৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এজাহারভুক্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই যশোর সদর এলাকায় আওয়ামী লীগ আশ্রিত সন্ত্রাসী হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশের তালিকাভুক্ত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন যশোর শহরের ঘোপ এলাকার সুজন, রাসেল, রেজওয়ান, বারান্দি এলাকার মনির ওরফে কসাই মনির, তৌসিফুর রহমান রাসেল, আনোয়ার হোসেন সবুজ, কামাল হোসেন, গোলাম কিবরিয়া সানি, জাকির হোসেন রাজিব, সনি, শঙ্করপুরের হিটার নয়ন (পৌর কাউন্সিলর), জুয়েল, মানিক, বিপ্লব, রাজু ওরফে লুই, শয়ন, পুরাতন কসবার মাহমুদ হাসান বিপু, আনোয়ার হোসেন বিপুল (জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক), জাহিদ হোসেন মিলন, রবীন্দ্রনাথ সড়কের ফারুক ওরফে কালো ফারুক, পল্টু, এজাজ আহমেদ, টিপু সুলতান, রায়পাড়ার রিয়াজ, চঞ্চল ওরফে ট্যারা চঞ্চল, বাপ্পি, অম্বিকা বসু লেনের মোস্তফা ওরফে ট্যারা মোস্তফা, সিটি কলেজপাড়ার নাহিদ, সাদ্দাম, বেজপাড়ার রোহান, শহরতলির মুড়লি এলাকার মাহমুদ হাসান লাইফ, উপশহরের সাগর, বালিয়াডাঙ্গার রবিউল ইসলাম, বাদশা মিয়া, ভাতুড়িয়ার শফিয়ার রহমান, আজাদ, নূরপুরের মো. সাগর খাঁ, চাঁচড়ার সোহান, হামিদপুরের সুজন ওরফে ট্যারা সুজন, বিরামপুরের শাহাজান আলী ওরফে কসাই শাহাজান, হাদিউজ্জামান ওরফে চিমা, সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলার আব্দুল মান্নান মুন্না, জিরাটের রাজু আহমেদ, আন্দোলপোতার আলিমুজ্জামান মিলন (ইউপি চেয়্যারম্যান), বালিয়া ভেকুটিয়ার ফকির শাহারুল ইসলাম, আলমনগরের টিপু সুলতান, ছোট হৈবতপুরের সিদ্দিকুর রহমান, তালবাড়িয়ার আসমত আলী চাকলাদার, ফিরোজ, শালিয়াটের ইমলাক, সুলতানপুরের দিপু ওরফে ডেঞ্জারাস দিপু, তফশিডাঙ্গার মামুন ও মিরাজুল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেন ধরা যাচ্ছে না তা জানতে যোগাযোগ করা হয় জেলার পুলিশ সুপার জিয়াউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে। পটপরিবর্তনের পর যশোরে যোগ দেওয়া এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিস্থিতিগত কারণে দেশজুড়ে পুলিশি কার্যক্রমে স্থবিরতা ছিল। পুলিশ সদস্যদের মনোবলেরও ঘাটতি ছিল। এরই মধ্যে আমরা সেটা কাটিয়ে উঠেছি। পূর্ণোদ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখনকার ফোকাস অল্প সময়ের মধ্যে পলাতক সন্ত্রাসীদের ধরা। শিগগির তাদের বিচারের আওতায় আনতে পারব বলে আশা করি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>