<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে। এক সপ্তাহ ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তারা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েকজনের ভাষ্য, ওএসডি হওয়া ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা নিজেকে সমন্বয়ক দাবি করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিচালকের অনুপস্থিতিতে কয়েকজন শিক্ষক ও অধ্যাপককে নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছেন। তাই তাঁদের এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই উপপরিচালক হলেন ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবির। গত ১ সেপ্টেম্বর তাঁকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু তিনি নিয়মিত ইনস্টিটিউটেই অফিস করছেন। হস্তক্ষেপ করেছেন একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও। কক্ষ দখল করে বহিরাগতদের নিয়ে অবস্থান করেন রাত পর্যন্ত। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইনস্টিটিউটের হাজিরা তথ্যে দেখা যায়, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত তিনি মোট ৩৫ দিন অফিস করেছেন। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করেছেন বেশ কয়েক দিন। বাকি দিনগুলোতে তিনি দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত অফিস করেছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে জানতে ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমন্বয়কের কথা বলে একজনের হাতে ফোন ধরিয়ে দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি বলেন, ইনস্টিটিউটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তাঁরা কাজ করছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) হওয়ার পর অফিস করা যায় কি না</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন প্রশ্নে ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবির বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর ওএসডির বিষয়ে জানতে চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এরপর কোনো কথা না বলে লাইন কেটে দেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইনস্টিটিউটের একাধিক সূত্র জানায়, শুরুতে তিন পক্ষ এক হয়ে পরিচালকসহ আওয়ামীপন্থী চার চিকিৎসককে অপসারণের পক্ষে লড়লেও আধিপত্য বিস্তারে এখন তাঁরা বিভক্ত। ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক, নার্সসহ সব পর্যায়ে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়েছে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। এতে রোগীর চিকিৎসাসেবা ও স্বাভাবিক কর্মপরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সকালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালের বিভিন্ন দেয়ালে পোস্টার সাঁটানো। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারের দালাল লিখে পোস্টার সাঁটিয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত এক সপ্তাহ ধরে ইনস্টিটিউটে মূল ফটকের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে একদল চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে। প্ল্যাকার্ডে লেখা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ওএসডি হয়েও অফিসে কেন? ভুয়া সমন্বয়ক মানি না, নব্য স্বৈরাচার নিপাত যাক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুপুরে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান ও মানববন্ধন হয়। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টসের (বিএপি) আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক ডা. মো. নিজাম উদ্দিন এবং যুগ্ম সদস্যসচিব ও কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের ডা. রাহেনুল ইসলাম। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে সপ্তাহব্যাপী চলমান আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএপির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) মো. আব্দুল ওহাব, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. নিলুফার আকতার জাহান, যুগ্ম সদস্যসচিব ও বিএসএমএমইউয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শামসুল আহসান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জুবায়ের মিয়া প্রমুখ।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><strong><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিচালক-উপপরিচালক পদ শূন্য</span></span></span></span></strong></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার পতনের পর স্বৈরাচারের দালাল অভিযোগ তুলে ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও ছয়জন শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। পরিচালকসহ আওয়ামীপন্থী চার চিকিৎসকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নামেন হাসপাতালের সর্বস্তরের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্দোলনের মধ্যে গত ১২ সেপ্টেম্বর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. অভ্র দাশ ভৌমিককে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর নতুন পরিচালকের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি দায়িত্বে ছিলেন মাত্র এক মাস সাত দিন। এরপর পরিচালক পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদায়ের আগে ইনস্টিটিউটে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে এবং ভবিষ্যতে ঘটার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে চিঠি দেন মন্ত্রণালয়কে। চিঠিতে বলা হয়, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইনস্টিটিউটে স্বল্পকালীন সময়ে আমার প্রতীয়মান হয় যে চারজন সিনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের মধ্যে স্পস্ট বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে এবং ভবিষ্যতে ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিঠিতে ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন যেসব প্রস্তাব দেন এগুলো হলো : পারস্পরিক অভিযোগ সংবলিত সব ধরনের ব্যানার অপসারণ করা; দ্রুত একজন উপপরিচালক পদায়ন করা; তদন্তের নিরিখে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স কর্মচারীদের বিষয়ে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার ডা. তয়েবুর রহমান রয়েল কালের কণ্ঠকে বলেন, পরিচালক-উপপরিচালকের পদ শূন্য থাকায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে। একদিকে অনেক সিনিয়র শিক্ষক ও চিকিৎসকরা বদলি হতে চেয়ে পারছেন না, আবার ঢাকার বাইরে অনেক যোগ্য চিকিৎসককে পদায়ন করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে শূন্যপদে পদায়ন জরুরি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""> </span></span></p> <p><strong><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৯ জন শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার হুমকি</span></span></span></span></strong></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী একাধিক চিকিৎসক জানান, ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. অভ্র দাশ ভৌমিক ছুটিতে দেশের বাইরে গেলে উপপরিচালক ডা. মোহাম্মদ সফিকুল কবিরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে যান। এর পরপরই তিনি রুটিন দায়িত্বের বাইরে ৯ জন শিক্ষক, অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপককে নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য চিঠি দেন। অন্যথায় অনভিপ্রেত ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে বলে হুমকি দেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিষয়টি জানিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দেন সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. অভ্র দাশ ভৌমিক। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা ডা. মোজাহেরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, অদক্ষতা, দুর্নীতি ও অপচয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই তিন কারণে দেশের স্বাস্থ্য খাত পিছিয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক কারণে যোগ্য ব্যক্তি যোগ্য পদ পান না। যাঁরা দায়িত্বে থাকেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। যোগ্যতায় ঘাটতি থাকায় স্বাস্থ্য খাতে সরকার যে অর্থায়ন করে, সেটা তাঁরা সঠিকভাবে ব্যয় করতে পারেন না, টাকা ফেরত যায়। এটা বন্ধ করতে হবে। এখানে যাঁরা সত্যিকারের পরিবর্তন আনাতে সক্ষম, ওই সব ব্যক্তিকে পদায়ন করতে হবে।</span></span></span></span></p>