<p>পাড়ার নামের সঙ্গে বিএনপির নাম যুক্ত থাকায় প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের হুমকিসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার একটি গ্রামের মানুষের। ভয় দেখিয়ে তাদের পাড়ার নাম, সাইনবোর্ড ও দেয়ালের লেখাও মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন তারা। কিন্তু এলাকাবাসী প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তার জাতীয়তাবাদী আদর্শকে ধারণের জন্য সে নাম মুছতে দেননি। এমনটাই জানিয়েছে এলাকাবাসী।</p> <p>‘বিএনপিপাড়া’ নাম হওয়ায় পাড়ার মানুষজন সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হলেও মন থেকে তাদের কোনো কষ্ট নেই। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কাচারী গ্রামের একটি পাড়া হচ্ছে এই ‘বিএনপিপাড়া’।</p> <p>সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উন্নয়নের ছোঁয়াবঞ্চিত মাটির সরু আঁকাবাঁকা পথ। টিন-খড় কোথাও-বা আধাপাকা বাড়ি। এলাকাটি সমতল হওয়ায় অধিকাংশ পুরুষই মাঠে কর্মব্যস্ত। পথের ধারেই চোখে পড়ে উত্তর কাচারী ‘বিএনপিপাড়া’ বাইতুন নুর নামে একটি জামে মসজিদ।</p> <p>কথা হয় পাড়ার প্রথম বাসিন্দা বৃদ্ধ নছিয়তুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার পাঁচ ছেলে। তার মধ্যে এজাজুল হক বড়। সে বিএনপি করত। সে একদিন দিনাজপুর বড় মাঠে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জনসভায় অংশ নেয়। সেদিন জিয়াউর রহমান মাঠভর্তি নেতাকর্মীদের মাঝ থেকে তাকে মঞ্চে তুলে নেন এবং পুরস্কৃত করেন। তার পর থেকে বাইরের লোকজন এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা এখানে বিভিন্ন সময় আসতেন। আমার ছেলেকে খুঁজতে এলে অন্যপাড়ার মানুষ বিএনপিপাড়া বলে বাড়ি দেখিয়ে দিত। যেহেতু ছেলে বিএনপি করে তাই অনেকে তাচ্ছিল্য বা অবহেলার কারণেই হোক, পাড়াকে এই নাম দেয়। সেই থেকে এই পাড়ার নাম ‘বিএনপিপাড়া’।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৫ নেতাকে কোপাল কিশোর গ্যাং" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/02/1730517706-f8cbae6aa3235bdcd64c7ab023bf4ff9.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৫ নেতাকে কোপাল কিশোর গ্যাং</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/02/1441800" target="_blank"> </a></div> </div> <p>পাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম, লুৎফর রহমান ও সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘এজাজুল হকের বদৌলতে এই পাড়ার নাম ‘বিএনপিপাড়া’। অনেকেই তাকে এজাজুল বিএনপি বলে ডাকতেন। তিনি আজ আমাদের মাঝে বেঁচে নাই। প্রায় ১৫ বছর আগে তিনি মারা গেছেন। তিনি না থাকলেও তার কর্ম-স্মৃতি আমাদের মাঝে বেঁচে আছে। আমাদের পাড়ায় প্রায় তিন শ পরিবারের বসবাস। তার কারণেই পাড়ার সবাই আমরা বিএনপি করি। ‘বিএনপিপাড়া’ নাম থাকায় আমরা পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা বিভিন্ন সময়ে হুমকি ও হয়রানির শিকার হয়েছি।’</p> <p>তারা আরো বলেন, ‘এই পাড়া দিয়ে কখনো কোনো পুলিশ সদস্য কিংবা প্রশাসনের কেউ গেলে তারা গাড়ি থামিয়ে বার বার বিএনপি নামটি মুছে ফেলতে বলেন। নাহলে আমাদের পরিণতি ভালো হবে না বলেও জানান। তাদের হুমকির কথা ও পুলিশি আতঙ্কে আমরা অগণিত বিনিদ্র রাত কেটেছি। বিগত হাসিনা সরকারের আমলে এই ‘বিএনপিপাড়া’ ছিল শতভাগ সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত।’ </p> <p>উত্তর কাচারী ‘বিএনপিপাড়া’ বাইতুন নুর জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন শরিফুল ইসলাম বলেন, “এ নামের কারণে আমরা দীর্ঘদিন থেকে হয়রানি-বঞ্চনা ও অবহেলার শিকার। সে অবহেলায় বঞ্চিতের হিসাব থেকে বাদ যায়নি আমাদের উত্তর কাচারী ‘বিএনপিপাড়া’ বাইতুন নুর জামে মসজিদটিও। উপজেলাটির অনেক মসজিদে সরকারি বরাদ্দে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও বিএনপি নাম থাকায় আমাদের মসজিদটির দিকে কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কারো সুদৃষ্টি মেলেনি।”</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="নীলফামারীতে জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/14/1728908740-e06d061a77a7bde916b8a91163029d41.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>নীলফামারীতে জামায়াতের রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/14/1435081" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি নামটি ভুলাতে চাইলেও এলাকাবাসী সেই নাম ভুলে যাননি। আমরা আশা করি, বিএনপির কর্ণধার আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান দেশে এসে দুর্দিনে টিকিয়ে রাখা বিএনপিপাড়ায় তার পদধূলি দেবেন। আমাদের এই ‘বিএনপি পড়া’কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়নের তালিকায় রাখবেন। দেশে বিএনপির জন্য যা হতে পারে একটি মডেল পাড়া।”</p> <p>এ বিষয়ে জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘জলঢাকায় বিএনপিপাড়া আছে। সেখানকার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে নিপীড়িত-নির্যাতিত। আগামীতে তারেক জিয়া ক্ষমতায় এলে আমরা তাদের পুনর্বাসনসহ সব সহযোগিতা করব। আমি আমার ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে পাড়াটি সম্পর্কে অবহিত করব।’</p>