<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের এখন পর্যন্ত সাতটি বিদেশি বহুজাতিক কম্পানি দরপত্র কিনেছে। দরপত্রে আরো অংশগ্রহণ বাড়াতে এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক দরপত্র জমার মেয়াদ আরো তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। বহুজাতিক কম্পানির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দরপত্রে অংশ নেওয়ার সময় তিন মাস বাড়িয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পেট্রোবাংলা। শেভরন, এক্সন মবিল দরপত্রে অংশ নিতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।   </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে গত ১০ মার্চ আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে পেট্রোবাংলা। একই সঙ্গে দরপত্রে অংশ নিতে বিশ্বের শীর্ষ পর্যায়ের ৫৫টি কম্পানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এরই মধ্যে দরপত্র কিনেছে সাতটি বহুজাতিক তেল-গ্যাস কম্পানি। দরপত্র জমার সময় ছিল ছয় মাস, সেটি গত ৯ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। শর্ত শিথিল করে আরো প্রতিষ্ঠানকে নিলামে টানার পরামর্শ দিয়েছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে বছরে বিনিয়োগের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ফেরত পাওয়ার সুযোগসহ উৎপাদন-অংশীদারি চুক্তির বেশ কিছু ধারা সংশোধনের তাগিদও দিয়েছেন তাঁরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বেশ কয়েকটি বহুজাতিক কম্পানির অনুরোধে দরপত্র জমার সময় আরো তিন মাস বাড়িয়েছি। এতে আরো কয়েকটি কম্পানির অংশগ্রহণ বাড়বে বলে আশা করছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অংশে গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লকসহ ২৬টি ব্লক রয়েছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সমুদ্রে দুটি ব্লকে কাজ নেয় কনোকোফিলিপস। দ্বিমাত্রিক জরিপ চালালেও পরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায় তারা। একইভাবে চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার সান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। এখন একমাত্র কম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কম্পানি ওএনজিসি। এই দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বহুজাতিক কম্পানিগুলোকে আগ্রহী করে তোলার জন্যই আকর্ষণীয় করা হয়েছে প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি)। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবার আগের চেয়ে বেশ কিছু সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। দরপত্রে দেশের স্বার্থের পাশাপাশি বিনিয়োগকারী কম্পানির স্বার্থও দেখা হয়েছে। আগের পিএসসিগুলোতে গ্যাসের দর স্থির করে দেওয়া হলেও এবার গ্যাসের দর নির্ধারণ করা হয়নি। ব্রেন্ট ক্রুডের আন্তর্জাতিক বাজারদরের সঙ্গে ওঠানামা করবে গ্যাসের দর। প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে ব্রেন্ট ক্রুডের ১০ শতাংশ দরের সমান। অর্থাৎ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৮০ ডলার হলে গ্যাসের দাম হবে ৮ ডলার। দামের পাশাপাশি সরকারের শেয়ারের অনুপাতও কমানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সমুদ্রাঞ্চলে গ্যাস হাইড্রেট ও মেরিন জেনেটিক রিসোর্সে বিপুল সম্ভাবনা</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট সুনীল অর্থনীতির উন্নয়নকে বেগবান করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক, বাণিজ্যিক ও পরিবেশগত প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণপূর্বক সুনির্দিষ্ট ৯টি খাত চিহ্নিত করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সুনীল অর্থনীতি উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনা</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> প্রণয়ন করা হয়েছে এবং জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীনে ব্লু-ইকোনমি সেল কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের প্রতিনিধিসহ নেদারল্যান্ডসভিত্তিক গবেষক ২০২০ সালে বাংলাদেশের সমুদ্র এলাকায় মাঠ পর্যায়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। উক্ত গবেষণা থেকে বাংলাদেশের একান্ত অর্থনৈতিক এলাকায় (ইইজেড) এমজিআরের সার্বিক অবস্থান চিহ্নিত করা, বিবিধ প্রজাতি চিহ্নিত করাসহ অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করে। সেই ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ২২০ প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবাল, ৩৪৭ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, ৪৯৮ প্রজাতির ঝিনুক, ৫২ প্রজাতির চিংড়ি, পাঁচ প্রজাতির লবস্টার, ছয় প্রজাতির কাঁকড়া, ৬১ প্রজাতির সি-গ্রাস ইত্যাদি চিহ্নিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে এসব প্রজাতির ওপর প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি টেস্ট নেদারল্যান্ডসে সম্পন্ন করা হয়। কভিড-১৯-জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গবেষণা কার্যক্রমে সাময়িক বিরতির পর ২০২১ সালে তা পুনরায় শুরু হয়। ওই কার্যক্রমে বিশেষ করে বাংলাদেশে সামুদ্রিক শৈবালের সম্ভাবনা ও বাণিজ্যিকীকরণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রাপ্ত বহুসংখ্যক প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবালের মধ্যে কয়েকটি প্রজাতির ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে সক্ষম। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সূত্র বলছে, সমুদ্রাঞ্চলে গ্যাস হাইড্রেট ও মেরিন জেনেটিক রিসোর্সের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। ২০১২ ও ২০১৪ সালের মায়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণসংক্রান্ত বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তির ফলে এখন এই অপারসম্ভাবনা কাজে লাগানোর সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ তার মূল ভূখণ্ডে ৮১ শতাংশ পরিমাণ রাষ্ট্রীয় জলসীমা অর্জন করে, অর্থাৎ সমুদ্রে মোট ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার জলরাশির জলস্তম্ভ, সমুদ্রতল ও অন্তমৃত্তিকায় বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এই অর্জন দেশের মেরিন ও উপকূলীয় অঞ্চলে সব প্রকার সমুদ্রসম্পদ আহরণ, বাণিজ্যিক জাহাজ, জ্বালানি, পর্যটন ইত্যাদি ঘিরে কর্মসংস্থান ও প্রবৃদ্ধির নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p> </p> <p> </p>