<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় উপস্থিত হয়ে একটি আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। দূরদর্শী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। হিজরতের পর তিনি ৪৭ ধারা সংবলিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মদিনার সনদ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> <span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Charter of Madina) </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তৈরি করেন। এর মধ্যে দিয়েই কার্যকরভাবে প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই সংবিধান জনসাধারণের সুরক্ষা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, নারীদের সুরক্ষা, মদিনার অভ্যন্তরে শান্তিপূর্ণ গোত্রীয় সম্পর্ক, সংঘাতের সময় জনগণের উপযোগী করব্যবস্থা, বহিরাগত রাজনৈতিক জোটগুলোর স্থিতিস্থাপক, ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিতের ব্যবস্থা, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিচারব্যবস্থা এবং নিয়ন্ত্রিত রক্তপণ ব্যবস্থার প্রবর্তন করেছিল।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নববী রাষ্ট্রের মূলনীতি</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহানবী (সা.) প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের মূলনীতি ছিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয়তা, ধর্ম, বর্ণ ও বংশ নির্বিশেষে মানবসভ্যতার কল্যাণে কাজ করা এবং ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে প্রত্যেকের অধিকার ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। এক কথায়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""> ‘The strong and the weak, the big and the small are equal in the eye of law.’ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই ছিল মহানবী (সা.)-এর শাসননীতি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রে প্রত্যেকের বাক ও বিবেকের স্বাধীনতা উন্মুক্ত ছিল। পরধর্মে তিনি যেমন ছিলেন সহিষ্ণু, তেমনি পররাষ্ট্রের প্রতি তাঁর বাণী ছিল শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাসুল (সা.)-এর রাষ্ট্রব্যবস্থায় কিছু মৌলিক নীতি ছিল, যা শুধু ধর্মীয় নয়, বরং আজকের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাবশালী। যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১. ন্যায় ও সমতা</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২. শুরাভিত্তিক জনসাধারণের অংশগ্রহণ</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩. মানবিক মূল্যবোধ</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৪. সামাজিক নিরাপত্তা</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সমাজব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহানবী (সা.) ছিলেন একজন মহান সমাজসংস্কারক। ঐতিহাসিক রেমন্ড লার্জ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">The founder of islam is in fact the promoter to the first social and international</span></span> <span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">revolution of which history gives mention.</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে সামাজিক ও আন্তর্জাতিক বিপ্লবের সূচনাকারী হিসেবে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তকের নাম ইতিহাসে প্রথম উল্লেখ করা হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নিম্নে ইউরোপীয়দের লেখনীতে নবীজির সংস্কারের সামান্য নমুনা পেশ করা হলো</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১. তাওহিদের আদর্শে সমাজের পত্তন : ধর্মীয় ক্ষেত্রে নানা অনাচার, পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের মূলোৎপাটন করে সব ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্বের উৎস একমাত্র আল্লাহকেই মেনে নিয়ে সমাজের সব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার ব্যবস্থা করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২. সামাজিক পরিবর্তন : এ সম্পর্কে  জন এস্পোসিতো মুহাম্মদ (সা.)-কে এমন এক সংস্কারক হিসেবে দেখেন, যিনি কন্যাশিশু হত্যা, দরিদ্রদের শোষণ, সুদ, হত্যা, মিথ্যা চুক্তি, পরকীয়া, ব্যভিচার ও চুরির মতো পৌত্তলিক আরবের প্রচলিত প্রথাগুলোর কঠোর নিন্দা করেছিলেন। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে গোত্রীয় রীতিনীতিভিত্তিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধ নয়, বরং এক ঐশ্বরিক আইনের প্রতি দায়বদ্ধ।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(John L. Esposito, ‘Islam : The Straight Path’)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৩. দাসত্ব প্রথার সংস্কার : লুইস বলেছেন যে ইসলাম প্রাচীন দাসত্বের ক্ষেত্রে দুটি বড় পরিবর্তন এনেছিল, যা সুদূরপ্রসারী প্রভাব তৈরি করেছিল। এর মধ্যে একটি হলো স্বাধীনতার সম্ভাব্যতা; অন্যটি কঠোরভাবে নির্দেশিত পরিস্থিতি ছাড়া মুক্ত ব্যক্তিদের দাসত্বের ওপর নিষেধাজ্ঞা। এটি সে সময়ে দাসত্ব সম্পর্কিত সবচেয়ে প্রগতিশীল আইন ছিল। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(BERNARDLEWIS, Race and Slavery in the Middle East )</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৪. নারী অধিকার : মজিদ খাদদুরি লিখেছেন, আরবে প্রাক-ইসলামী আইনি মর্যাদা অনুযায়ী, নারীদের কোনো অধিকার ছিল না, যেখানে শরিয়া (ইসলামী আইন) নারীদের বেশ কয়েকটি অধিকার প্রদান করেছিল। জন এস্পোসিতো বলেছেন, বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ এবং উত্তরাধিকার ইসলামী সংস্কারগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। কারেন আর্মস্ট্রংয়ের মতে, পশ্চিমে এবং অন্য অনেক সংস্কৃতিতেই বহু শতাব্দী পরও নারীদের উত্তরাধিকার ও বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার দেওয়া হয়নি। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Majid  Khadduri, ‘Marriage in Islamic Law : The Modernist Viewpoints’) </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৪. সম্পদ ও উত্তরাধিকার :  অ্যানিমারি শিমেল লিখেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নারীদের প্রাক-ইসলামী অবস্থানের তুলনায় ইসলামী আইনের মধ্য দিয়ে এক ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে; আইনি বিধান অনুযায়ী, নারী পারিবারিকভাবে প্রাপ্ত সম্পদ কিংবা নিজের উপার্জিত সম্পদ উভয়ই নিজস্ব ইচ্ছা অনুযায়ী পরিচালনার অধিকার রাখেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> <span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Annemarie Schimmel, The Metropolitan Museum of Art Bulletin)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৫. সমাজতাত্ত্বিক পরিবর্তন : সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট এন. বেল্লা যুক্তি দেন যে সপ্তম শতাব্দীতে ইসলাম তার সূচনাকালে তখনকার সময় ও স্থান উভয়ের বিবেচনায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উল্লেখযোগ্যভাবে আধুনিক ... কারণ তা সম্প্রদায়ের সর্বস্তরের জনগণের প্রতিশ্রুতি, সম্পৃক্ততা ও অংশীদারি প্রত্যাশা করেছিল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তাঁর মতে, এর কারণ ইসলাম সব মুসলমানের সমতার ওপর জোর দিয়েছে। নেতৃত্বের অবস্থানগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৬. নৈতিক পরিবর্তন :  কেলসির মতে, প্রাক-ইসলামী আরবের নিম্নোক্ত প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলোর বিরুদ্ধে পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ পরিচালিত হয়েছিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক. আরবদের বিভিন্ন গোত্রীয় বিভাজন </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খ.জশ-খ্যাতির অন্ধত্ব </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ. পূর্বপুরুষের ভ্রান্ত ঐতিহ্যের অনুবর্তী হওয়ার রীতি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুহম্মদ (সা.)-এর প্রচারের ফলেই ধর্মের নিষেধাজ্ঞা এবং আল্লাহ ও শেষ বিচারের ভয়ের ভিত্তিতে নৈতিক মূল্যবোধের আমূল পরিবর্তন ঘটেছিল এবং আরবদের প্রাক-ইসলামীয় গোত্রীয় রীতিনীতিগুলো সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়েছিল। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Lawrence Calsy, Encyclopedia of ethics )</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৭. অর্থনৈতিক পরিবর্তন : মাইকেল বোনার কোরআনে দারিদ্র্য ও অর্থনীতি সম্পর্কে লিখেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">“</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইসলামী তত্ত্বে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দারিদ্র্যের অর্থনীতি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবং ১৩ ও ১৪ শতাব্দী পর্যন্ত এর অনুশীলন অব্যাহত ছিল। এর মূল উদ্দেশ্য</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অংশত দানের মধ্য দিয়ে সম্পদ প্রচার ও পবিত্র করার একটি ধারণা, যা দাতব্য, উদারতা ও দারিদ্র্যের ধারণার একটি স্বতন্ত্র ইসলামিক পদ্ধতিকে উপস্থাপন করে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">”</span></span>  </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কোরআনে রিবা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সুদ গ্রহণকে বোঝানো হয়। সেই সঙ্গে জাকাত ও ভিক্ষা দেওয়ার কথা বলেছে। সদকা গ্রহণকারীদের মধ্যে অনাথ, পিতা-মাতা,  আত্মীয়-স্বজন, দরিদ্র ও মুসাফিরদের উল্লেখ সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাক-ইসলামীয় আরব সমাজের বিপরীতে, কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী পণ্য বিনিময় ও বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত অর্থনৈতিক প্রবাহ ব্যবস্থাটি ছিল সবার জন্য প্রযোজ্য।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেহেতু দরিদ্ররা এই অর্থনৈতিক মহাবিশ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, তাই দারিদ্র্য সম্পর্কে কোরআনের শিক্ষা আরব, নিকট-পূর্ব এবং এর বাইরেও ব্যাপক পরিবর্তনে প্রভাব রেখেছিল। </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Michael Bonner, ‘Poverty and Economics in the Quran’) </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৮. নাগরিক পরিবর্তন : মরু অঞ্চলে কূপ নির্মাণ ও ক্রয়ের আকারে ইসলামে সমাজকল্যাণ শুরু হয়েছিল। কূপ ছাড়াও মুসলিমরা বহু ট্যাংক ও খাল নির্মাণ করেছিল। কিছু খাল ভিক্ষু ও অভাবীদের ব্যবহারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল (যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তালহা কর্তৃক কিনে নেওয়া একটি ঝরনা) এবং বেশির ভাগ খাল জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্ভিক্ষের সময় উমর (রা.) মিসরে একটি খাল নির্মাণ করে নীল নদকে লোহিত সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেন।  আবদুস সালাম নাদিব লিখেছেন, এর মধ্য দিয়ে আরব সর্বকালের দুর্ভিক্ষ থেকে মুক্তি পেয়েছিল।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(Nadvi (2000), pg. 405-6)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৯. রাজনৈতিক পরিবর্তন : নবীজির পরে মাত্র এক দশকের মধ্যেই মুসলিমরা পারস্য বিজয়ের সময় মেসোপটেমিয়া ও পারস্য এবং প্রথম বাইজেন্টাইন-আরব যুদ্ধের সময় রোমান সিরিয়া ও রোমান মিসর দখল করে নেয়। এই বিজয়গুলো তেমন কোনো ক্ষতির কারণ হয়নি, বরং এর মাধ্যমে মানুষ শান্তি ও সমৃদ্ধির ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বার্নার্ড লুইস লিখেছেন, এমনকি সিরিয়া ও মিসরের খ্রিস্টানদের মধ্যে কেউ কেউ বাইজেন্টাইনদের চেয়ে ইসলামের শাসনকে অগ্রাধিকার দিতেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(John L.  ‘Islam : The Straight Path’)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১০. সামাজিক নিরাপত্তা : উইলিয়াম মন্টগোমেরি ওয়াট বলছেন, মুহাম্মদ (সা.) একজন সামাজিক ও নৈতিক সংস্কারক ছিলেন। তিনি দৃঢ়ভাবে দাবি করেন যে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুহাম্মদ সামাজিক সুরক্ষার একটি নতুন ব্যবস্থা এবং একটি নতুন পারিবারিক কাঠামো তৈরি করেছিলেন, যা পূর্ববর্তী অবস্থার তুলনায় বিরাট উন্নয়ন ছিল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> <span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(W. Montgomery Watt, ‘Muhammad : Prophet and Statesman’)</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এভাবে রাসুল (সা.) বিশ্বসভ্যতায় একটি জান্নাতি সমাজব্যবস্থার গোড়াপত্তন করেন। রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর এই প্রতিভার কথা উল্লেখ করে জর্জ বার্নার্ড শ যথার্থই বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘If all the world was united one leader, then Muhammad (sm) would have been the best fitted man to lead the peoples of various creeds, dogmas and ideas to peace and happiness.’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">(The Genuine Islam Vol. 1, pg. 8)</span></span></span></span></p>