<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দক্ষিণ আফ্রিকার অনুশীলনে একটি জিনিসের ব্যবহার যে কারো দৃষ্টি কাড়তে বাধ্য। নেটে ট্রাইপডে চারকোণা স্ক্রিন দাঁড় করিয়ে রেখেই ব্যাটিং-বোলিং চলছিল তাদের। অভিনব বলে মনে হলেও এখন এর ব্যবহার বিশ্বের আরো কয়েকটি দলও করে আসছে। আদতে যা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের লেন্থ বুঝে ব্যাটিং করানো হচ্ছিল এইডেন মারক্রামের দলের ব্যাটারদের। যদিও আজ থেকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টে তো আর প্রোটিয়াদের এআইয়ের সুবিধা নিয়ে নামার সুযোগ নেই। মাঠের লড়াইয়ে বরং উপস্থিত বুদ্ধির প্রয়োগই পার্থক্য গড়ে দেয়। নিজেদের মাঠের সুবিধা নিয়ে সেই লড়াইয়ে বাংলাদেশ নিজেদের কতটা এগিয়ে রাখতে পারছে? </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্য কোনো সময় হলে অবলীলায় স্বাগতিকদের ফেভারিটের আসনে বসিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও হয়তো কোনো কার্পণ্য হতো না। বিশেষ করে এই তরুণ দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটারেরই যেখানে ভারতীয় উপমহাদেশে খেলার তেমন কোনো অভিজ্ঞতা নেই। সেই সঙ্গে গত ১০ বছরের রেকর্ড এই অঞ্চলে তাঁদের বিভীষিকার কথাই মনে করিয়ে যায়। ২০১৪ সালে শেষবার তাঁরা টেস্ট জিতেছিল শ্রীলঙ্কার গলেতে। এরপর গত এক দশকে আরো ১৪ ম্যাচ খেলে জয়ের দেখা তো পায়ইনি, উল্টো ১০ হারের ৯টিই টানা। চারটি টেস্ট ড্র করার মধ্যেও কোনো বীরত্ব নেই। এর প্রতিটিতেই যে ছিল বৃষ্টির সৌজন্য। ঘরের মাঠে এ রকম একটি দলের মুখোমুখি হওয়ার আগে সেসব নিয়ে অনেক বেশি চর্চা হওয়ার কথা থাকলেও হলো এর সামান্যই। কারণ ম্যাচপূর্ব নানা নাটকীয় ঘটনায় এমনিতেই জেরবার বাংলাদেশ দল মাঠের ক্রিকেটে পুরো মনোযোগ ফেরাতে পেরেছে কি না, তা-ও কম বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন ঝুলিয়ে রাখেনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বরখাস্ত হওয়া চন্দিকা হাতুরাসিংহের জায়গায় আসা নতুন হেড কোচ ফিল সিমন্সকেও তাই </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফোকাস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ঠিক রাখার দিকে সর্বোচ্চ জোর দিতে হচ্ছে। কিন্তু এই ম্যাচটি যাঁর বিদায়ি টেস্ট ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল, সেই সাকিব আল হাসানকে ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হওয়ার লক্ষণ গতকালও ছিল না। সকালে অনুশীলনে আসা বাংলাদেশ দল দুপুরে অনুশীলন সেরে মাঠ ছেড়ে যায়, চলে আসে প্রোটিয়ারা। ভেতরে যখন তাঁদের অনুশীলন চলছে, তখন পূর্ব ঘোষণানুযায়ী স্টেডিয়ামের ত্রিসীমানায় চলে আসে সাকিবভক্তরা। সাকিবকে দেশে এনে খেলতে দেওয়ার দাবিতে জড়ো হতে থাকা ভক্তদের অবশ্য স্টেডিয়ামের মূল গেটের দিকে যেতে দেয়নি নিরাপত্তা বাহিনী। তবে একাডেমি ভবন সংলগ্ন এক নম্বর গেটের সামনে স্লোগানে মুখর </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাকিবিয়ান</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দের ওপর এক পর্যায়ে বাঁশ-লাঠি নিয়ে অতর্কিতে চড়াও হয় ৮-১০ জনের একটি দল। তাতে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হতেও সময় লাগেনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাইরে এ রকম কিছু ঘটার আগেই দুই দলের ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলন হয়ে গেছে। তাতে না থেকেও সাকিব কতটা ছিলেন, সেটি বোঝাতে দুই অধিনায়কের প্রশ্নোত্তর পর্বে তাকালেই হচ্ছে। প্রোটিয়া অধিনায়ক মারক্রামকে করা এক-তৃতীয়াংশ প্রশ্নই ছিল দেশে আসার পথে দুবাই থেকে ফিরে যাওয়া অলরাউন্ডারকে ঘিরে। এবার বুঝুন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের অবস্থা। তাঁর সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকেন্দ্রিক জিজ্ঞাসা ছিল আধাডজনেরও বেশি। সতীর্থদের মতো তিনিও সাকিবের বিদায় রাঙানোর নানা পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সরকারের পক্ষ থেকে দেশে না ফেরার পরামর্শ পাওয়া সাকিবের জন্য সেসব </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পেন্ডিং</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> রয়ে গেল বলে জানানো নাজমুল এটি স্বীকারেও অকপট যে এই অবস্থায় খেলায় মনোযোগ ফেরানো সত্যিই মুশকিল। যদিও বিষয়টি তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নেই বলে এটি নিয়ে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময় নষ্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> না করার কথাও বলতে শোনা গেল তাঁকে।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাজমুল এ রকম বললেন বটে। কিন্তু সাকিবকে ঘিরে তাঁর ভাষায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুর্ভাগ্যজনক</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ঘটনা যে দলের মনোবলহানির কারণ হয়েছে, সেটিও স্পষ্ট ছিল অধিনায়কের একাধিক বক্তব্যে। সিরিজ শুরুর মাত্র কয়েক দিন আগে কোচ বদলের ধাক্কা না হয় সামলে নেওয়া গেছে দ্রুতই। তবে বিদায়ি টেস্টের মঞ্চে এসে দাঁড়ানোর আগে সাকিব বিয়োগ বেদনার ভার নামিয়ে নিজেদের মেলে ধরার চ্যালেঞ্জটিই এখন সবচেয়ে বেশি তাঁদের। এটি তাই শুধু বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচ নয়, সাকিবের না থেকেও থাকার টেস্টও!</span></span></span></span></p>