<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক রাষ্ট্রপতি ও খ্যাতিমান চিকিৎসক অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী আর নেই। গত শুক্রবার রাত ৩টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর উত্তরা মহিলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। গতকাল শনিবার বদরুদ্দোজা চৌধুরীর প্রেসসচিব জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ফুসফুসে সংক্রমণ হওয়ায় গত ২ অক্টোবর তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, দুই মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। আজ রবিবার বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হবে। তাঁর প্রয়াণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শোক প্রকাশ করেছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী খ্যাতিমান চিকিৎসক ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরে (প্রখ্যাত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুন্সেফবাড়ি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">)  নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহসভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার মজিদপুর দয়হাটা গ্রামে। ১৯৪৭ সালে ঢাকার বিখ্যাত স্কুল সেন্ট গ্রেগরি থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। তিনি ১৯৫৪-৫৫ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন। সব পরীক্ষায়ই তিনি মেধাতালিকায় ছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বদরুদ্দোজা চৌধুরী যুক্তরাজ্যের তিনটি রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস লন্ডন, এডিনবরা ও গ্লাসগো থেকে নির্বাচিত  ফেলো-এফআরসিপি এবং বাংলাদেশের (সম্মানিত) এফসিপিএস। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি রোগ বিজ্ঞানে দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় অধ্যাপক ছিলেন। একসময় বিটিভিতে তাঁর উপস্থাপনায় প্রচারিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আপনার ডাক্তার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> অনুষ্ঠানটি অগণিত দর্শকের মন জয় করে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সফল পার্লামেন্টারিয়ান বদরুদ্দোজা চৌধুরী জাতিসংঘে তিনবার বক্তব্য দেন। তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং বহু গ্রন্থের প্রণেতা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বি. চৌধুরী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের অনুরোধে ১৯৭৮ সালে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ১৯৭৯ সালে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং কেবিনেট মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ও পরে সংসদ উপনেতা হন। ১৯৯৬ সালে তিনি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন। বি. চৌধুরী ২০০৪ সালের ৮ মে বিকল্প ধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁর প্রয়াণে এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে ক্ষতি হলো, তা অপূরণীয়। রাষ্ট্রপ্রধান মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। তিনি একই স্তরের একনিষ্ঠতা নিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন। সংসদে তাঁর বক্তৃতা সব মতের রাজনীতিবিদদের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শোকবার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বদরুদ্দোজা চৌধুরী একজন দক্ষ ও প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন জাতীয় রাজনীতির একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। দেশ ও মানুষের প্রতি সহমর্মী বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতির পাশাপাশি একজন প্রসিদ্ধ চিকিৎসক হিসেবেও মানুষের সেবা করে গেছেন।</span></span></span></span></p>