<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্ম গুরুসদয় দত্তের। জন্মেছিলেন জমিদার পরিবারে। ওই সময় শহরে, গঞ্জে গড়ে উঠেছিল বাবু সম্প্রদায়। তাঁর পিতা রামকৃষ্ণ দত্ত চৌধুরীও ছিলেন সম্ভ্রান্ত জমিদার। তবে তিনি সমাজের উচ্চশ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করলেন না। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামকে বেগবান করতে ও বাঙালি জাতীয়তাবোধকে উজ্জীবিত করার জন্য মিশে গেলেন উঁচু-নীচু দুই শ্রেণির সঙ্গেই। পরবর্তী সময়ে যোগ দেন সরকারি চাকরিতে, পাশাপাশি শুরু করেন লোকসাহিত্য গবেষণা এবং লেখালেখি। চাকরির সুবাদে ও নিজের প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির কারণে ১৯২৯-৩৯ সালে তৎকালীন বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন পুরাতাত্ত্বিক ও লোকশিল্পের নিদর্শন সংগ্রহ করতে শুরু করেন গুরুসদয় দত্ত। ওই সময় কলকাতার অদূরে জোকা নামক একটি এলাকায় ১০১ বিঘা জমি কিনে সেখানে ব্রতচারী গ্রাম গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। সেখানে এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন যেখানে মানুষ নিজেদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও লোকশিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারে। নিজের সেই স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে পারেননি গুরুসদয়। ১৯৪১ সালে মাত্র ৫৯ বছর বয়সে আকস্মিকভাবেই তাঁর মৃত্যু হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুরুসদয়ের মৃত্যুর দুই দশক পর ১৯৬৩ সালে তাঁর ব্যক্তিগত সংগ্রহ নিয়ে সেই স্মৃতিবিজড়িত স্থানে একটি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়। দশম থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর নানা প্রস্তরমূর্তি, পুতুল, ছবি, টেরাকোটার কাজ, পটচিত্র, কাঁথাশিল্প, কাঠশিল্প, মুখোশ, ডোকরা শিল্পসহ অসংখ্য সামগ্রী এখানে রক্ষিত আছে। প্রাচীন মন্দিরের দরজার ফ্রেম, ষোড়শ শতাব্দীর বেশ কিছু দুর্লভ পুথি, দশমহাবিদ্যা ও দশাবতার তাসের সংগ্রহও দেখতে পাওয়া যায়। সুজানি, দুরজানি, বায়তান, আরশিলতা, রুমাল, লেপ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই ছয় ধরনের হারিয়ে যাওয়া কাঁথাশিল্প দেখে অবাক হতে পারে যে কেউ। সব মিলিয়ে জাদুঘরে আছে চার হাজারের বেশি সামগ্রী। ১১০টি কাঁথার সঙ্গে হাজার দুয়েক বইও সংরক্ষিত আছে। এসবের বেশ কিছু সংগ্রহ গুরুসদয় নিজেই করেছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাদুঘরটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৯৮৪ সালে ভারতের কেন্দ্রীয় বস্ত্রশিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে জাদুঘর কর্মীদের বেতন ও রক্ষণাবেক্ষণের অর্থ আসত কেন্দ্রীয় বস্ত্রশিল্প মন্ত্রণালয় থেকে। তবে অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হওয়ার কারণে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার এই চুক্তি বাতিল করে। নিজস্ব অর্থায়নে আরো পাঁচ বছর এটি পরিচালিত হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য জাদুঘরটি বন্ধ আছে।</span></span></span></span></p>