<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাচীনকাল থেকে এই অঞ্চলে পিতলের তৈজসপত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি শুধু আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ নয় বরং আবহমান বাংলার ঐতিহ্য ধারণ করে। পিতলের তৈজসপত্রের মূল উপাদান পিতল। এটি কোনো মৌলিক ধাতু নয়। এটি এক প্রকারের সংকর ধাতু, যা তামা ও দস্তার সংমিশ্রণে তৈরি হয়। সাধারণত পিতলে ৬৭ শতাংশ তামা ও ৩৩ শতাংশ দস্তা থাকে। ইতিহাসে পিতলের তৈজসপত্র ব্যবহারের সঠিক সময়কাল পাওয়া যায় না। তবে চীনে খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দেও পিতলের কিছু তৈজসপত্র ব্যবহারের কথা জানা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে পিতলের তৈজসপত্রের প্রসার ঘটে মোগল আমলে। প্রাচীনকালে রাজা-বাদশা ও ধনাঢ্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের ব্যবহার্য তৈজসপত্র হিসেবে পিতলের চাহিদা ছিল। থালা বাসন, গ্লাস, জগ, কলস, কুপিবাতি, বদনা, হাঁড়ি-পাতিল, পানের বাটা, চালুনসহ বিভিন্ন ধরনের পিতলের সামগ্রী ব্যাপক আকারে ব্যবহৃত হতো। বছর ত্রিশেক আগেও এসব পণ্যের ছিল রমরমা ব্যবসা। অবিভক্ত বাংলার টাঙ্গাইলের তামা, কাঁসা ও পিতল শিল্প একসময় বেশ প্রসিদ্ধ ছিল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পিতলের থালা ও গ্লাসে খাবার পরিবেশন আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতির অংশই শুধু নয়, বেশ স্বাস্থ্যকরও। পিতলের পাত্রে রান্না ও পরিবেশন করা খাবার শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাপের ভালো পরিবাহী হওয়ার কারণে পিতলে রান্না করা খাবার দীর্ঘ সময় গরম থাকে, ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর। পরিবেশগত দিক থেকেও পিতলের তৈজসপত্রের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য ধাতু, যা গলিয়ে নতুন জিনিসপত্র তৈরি করা যায়। এই পুনর্ব্যবহার প্রক্রিয়া পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনে ও পরিবেশ সংরক্ষণে সাহায্য করে। ধর্মীয় বিশ্বাসেও যুক্ত আছে পিতল। পিতলের তৈরি প্রদীপ, মূর্তি ও ঘণ্টা হিন্দু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সময়ের সঙ্গে পিতলের তৈজসপত্রের নকশায় এসেছে পরিবর্তন। বর্তমানে পিতলের তৈরি জিনিসপত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া দেখা যায়। ঘরবাড়ির সাজসজ্জায় পিতলের তৈরি ল্যাম্প, মোমবাতির স্ট্যান্ড ও অন্যান্য ডেকোরেটিভ পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। আধুনিক ডিজাইনের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মের মিলন ঘটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নতুন নতুন পণ্য, যা বাজারে বিশেষ চাহিদা সৃষ্টি করেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আল সানি</span></span></span></span></span></p>