<p style="text-align:justify">চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে খবর বের হয়, নরওয়ের উপকূলে একটি বেলুগা প্রজাতির তিমি মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ধারণা করা হয়, রাশিয়া এ তিমিটিকে গুপ্তচর হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। গত ৩১ আগস্ট তিমিটির মৃত্যু হয় বলে জানা যায়।</p> <p style="text-align:justify">ভলদিমির নামক এই প্রাণিটির মৃতদেহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর রিসাভিকায় ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিমিটিকে নিকটস্থ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।</p> <p style="text-align:justify">ভলদিমিরের মৃত্যুর মাসখানেক পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, তিমিটি গুপ্তচর নয়। সেটি আসলে পাহারাদারের কাজ করত। ব্লেয়ার আর্ভিন নামের এক সমুদ্র বিশেষজ্ঞর বরাতে এসব কথা জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।</p> <p style="text-align:justify">ওই বিশেষজ্ঞের দাবি, ডলফিনের মতো প্রাণীদের প্রশিক্ষণ দেয় সেনারা। রাশিয়া ডলফিনদের কৃষ্ণসাগরে পাহারার কাজে ব্যবহার করে। ধারণা করা হচ্ছে, এই তিমিটিকেও সেই কাজেই ব্যবহার করা হতো।</p> <p style="text-align:justify">স্ক্যান্ডিনেভিয়ান উপকূলের পাশাপাশি সুইডেনের উপকূলেও ভাসতে দেখা গেছে ভলদিমিরকে। গত বছর তাকে বাণিজ্যিক ও বিপজ্জনক এলাকাতেও সাঁতার কাটতে দেখা যায়। কিন্তু বিজ্ঞানীদের দাবি, মৃত্যুর আগে তার শরীরে কোনো সমস্যা ছিল না।</p> <p style="text-align:justify">বলা হচ্ছিল, বিতর্কের ইতি টানতে রুশ সেনারা গুলি করে মেরেছে ভলদিমিরকে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার যে, এমন কিছু হয়নি। তিমিটির মুখে একটি লাঠি আটকেই মৃত্যু হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">পাঁচ বছর আগে প্রথম তিমিটিকে নরওয়ের সমুদ্রে দেখা যায়। সে সময় এটির সঙ্গে একটি ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেটির গায়ে ‘সেন্ট পিটার্সবার্গের যন্ত্র’ লেখা ছিল। এতেই গুজব ছড়িয়েছিল যে এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি একটি গুপ্তচর তিমি হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অতীতেও এমন ঘটনা ঘটেছে।</p> <p style="text-align:justify">যদিও মস্কো কখনো এ ধরনের অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি। মেরিন মাইন্ড নামের একটি সংগঠন সপ্তাহের শেষে ভলদিমিরের নিথর দেহটি খুঁজে পায়। এ সংগঠনটি বছরের পর বছর ধরে তিমিটির গতিবিধি অনুসরণ করছিল।</p> <p style="text-align:justify">সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সেবাস্টিয়ান স্ট্রান্ড বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিমিটির মৃত্যুর কারণ অজানা বলে জানিয়েছিলেন। এমনকি ভলদিমিরের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।</p> <p style="text-align:justify">তিমিটির বয়স ১৫ বছর হতে পারে। যদিও একটি বেলুগা তিমির জন্য এটা তেমন কোনো বয়স নয়। কারণ এ ধরনের তিমি ৬০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।</p> <p style="text-align:justify">২০১৯ সালের এপ্রিলে ইনগোয়া দ্বীপের কাছে নরওয়েজিয়ান নৌকাগুলোর কাছাকাছি প্রথম তিমিটিকে দেখা যায়। যা রাশিয়ার উত্তর নৌবহর মুরমানস্ক থেকে ৪১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।</p> <p style="text-align:justify">এ ঘটনা সে সময় সবার নজরে এসেছিল কারণ, নর্দান আইল্যান্ডের এত দক্ষিণে এ ধরনের বেলুগাস তিমি খুব কমই দেখা যায়। নরওয়ের গোয়েন্দা সংস্থা ওই সময় এ ঘটনা তদন্ত করেছিল।</p> <p style="text-align:justify">পরে তারা জানিয়েছিল যে তিমিটি রাশিয়ান সেনাবাহিনীর দ্বারা প্রশিক্ষিত বলে মনে হচ্ছে। কারণ সে মানুষের সঙ্গে মিশতে অভ্যস্ত। স্থানীয়ভাবে তিমিটিকে ভলদিমির বলে ডাকা হতো। ‘ভল’ একটি নরওয়েজিয়ান শব্দ, মূলত মজা করার জন্য এ নামে ডাকা হতো।</p> <p style="text-align:justify">একই সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের নামও যেহেতু ভ্লাদিমির পুতিন তাই মজা করেই তিমিটিকে ওই নামে ডাকা হতো।</p>