<p>পিটিআই এবং ছাত্রদের বিক্ষোভের সম্ভাব্য আন্দোলনের দ্বৈত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে পাঞ্জাব সরকার প্রদেশজুড়ে সকল জনসমাবেশ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে।</p> <p>পিটিআই আজ শুক্রবার প্রস্তাবিত সাংবিধানিক সংশোধনী এবং দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের কারাবাসের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। অন্য দিকে লাহোরে একটি কলেজ ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। এরপর কর্তৃপক্ষ প্রদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুক্রবার থেকে বন্ধ ঘোষণা করে। চতুর্থ দিনের মতো চলছে এই প্রতিবাদ।</p> <p>একটি বিজ্ঞপ্তিতে পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র বিভাগ বলেছে, সকল ধরণের বিক্ষোভ, মিছিল এবং জনসাধারণের কার্যক্রম দুই দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাঞ্জাবজুড়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শুক্র ও শনিবার এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।</p> <p>বিজ্ঞপ্তিতে আরো যোগ করা হয়েছে, ‘বিরাজমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে, যে কোনো ধরনের প্রতিবাদ মিছিল সন্ত্রাসবাদী ও দুর্বৃত্তদের টার্গেটে পরিনিত হতে পারে। যা শুধুমাত্র গুরুতর নিরাপত্তা হুমকির কারণ নয় বরং জনসাধারণের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। শান্তি ও শৃঙ্খলার পাশাপাশি জনসাধারণের অসুবিধার জন্য এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।’</p> <p>গত কয়েক মাসে ফেডারেল এবং পাঞ্জাব সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে, যখন পিটিআই বিক্ষোভ বা সমাবেশের পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছিল।</p> <p><strong>শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ</strong></p> <p>উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং স্কুল শিক্ষা বিভাগ থেকে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার (আজ) সকল সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। যদিও বিজ্ঞপ্তিতে শাটডাউনের কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, ক্রমবর্ধমান ছাত্র বিক্ষোভের কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি শহরে সহিংস বিক্ষোভ চলছে।</p> <p>এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, লাহোরের একটি কলেজে এক নারী ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তবে এই অভিযোগের তদন্তের জন্য গঠিত একটি তদন্ত দল ধর্ষণের কোনো প্রমাণ পায়নি। অভিযুক্ত, ভিকটিম এবং তার পরিবারও এ দাবিকে বানোয়াট বলে উড়িয়ে দিয়েছে বলে ডন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছ। </p> <p>ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার কারণে পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকার অনেকে গ্রেপ্তার করেছে। বিভিন্ন শহরে রাস্তা অবরোধ, নিরাপত্তা কর্মীদের আহত করা এবং ভাঙচুরের জন্য কয়েকশ ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে। এক কর্মকর্তার মতে, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যর্থতার কারণে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে।</p> <p><strong>পাঞ্জাবে বিক্ষোভ অব্যাহত </strong></p> <p>গতকাল বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডিতে কথিত ধর্ষণের ঘটনার বিরুদ্ধে ছাত্রদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ ৩৮০ জনেরও বেশি গ্রেপ্তার করেছে বলে একজন কর্মকর্তা বলেছেন।</p> <p>প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৫০ জন বিক্ষোভকারীকে পাথর ছোড়া এবং সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। পরে সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে আরো ২০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল বরে একজন পুলিশ মুখপাত্র বলেছেন।</p> <p>সহিংসতার সঙ্গে জড়িত অনেক প্রতিবাদকারী ‘ছাত্র ছিল না’ বলে এক কর্মকর্তা দাবি করেছেন এবং প্রতিবাদের পিছনে উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।</p> <p>বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। রাওয়ালপিন্ডির বারানি ইউনিভার্সিটির ছাত্ররাও ক্যাম্পাস চত্বরে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের পর গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ দল গঠন করা হয়েছিল। </p> <p>ছয়টি তদন্তকারী দল সোশ্যাল মিডিয়ায় লোকেদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে জড়িতদেরও চিহ্নিত করবে। রাওয়ালপিন্ডির ছয়টি থানায় বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আটটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের পরিধি বাড়ানো হয়েছে এবং সিসিটিভি ফুটেজের সাহায্যে আরো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। রাওয়ালপিন্ডি পুলিশ প্রধান এক বিবৃতিতে এই খবর দিয়েছেন। </p> <p>সূত্র: ডন</p>