<p style="text-align:justify">দীপাবলির উৎসবে যখন মেতে উঠেছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীরা, ঠিক সেই সময় আতঙ্কের প্রহর গুনছিল ভারতের হিমাচল প্রদেশের হামিপুর জেলার একটি গ্রাম। ওই গ্রামের নাম সাম্মু। বছরের পর বছর কেটে যায়, কিন্তু এই পার্বত্য গ্রামের বাসিন্দারা কখনো দীপাবলি পালন করেন না! কারণ, এই গ্রাম নাকি ‘অভিশপ্ত’।</p> <p style="text-align:justify">ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, এই সাম্মু গ্রামকে ঘিরে শতাব্দীপ্রাচীন এক লোকগাথা, এক কিংবদন্তি। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সন্তানসম্ভাবনা ও সদ্য বিধবা এক নারীর যন্ত্রণা।</p> <p style="text-align:justify">গ্রামবাসীর দাবি, সে অনেক অনেক বছর আগের এক ঘটনা। দীপাবলি পালন করতে বাপের বাড়ি এসেছিলেন এক তরুণী বধূ। তখন দেশে রাজার শাসন চলত। সেই রাজার দরবারেই সৈনিকের কাজ করতেন ওই তরুণীর স্বামী। তরুণী ছিলেন গর্ভবতী। কিন্তু আলোর উৎসবে মেতে ওঠার আগেই সেই তরুণীর জীবনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। তিনি খবর পান, তার স্বামী মারা গিয়েছেন। প্রিয় মানুষটিকে চিরকালের মতো হারানোর যন্ত্রণা সহ্য করতে পারেননি সেই তরুণী।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে তার স্বামীর শেষকৃত্যের বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া চলাকালীনই এক ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন ওই নারী। তিনি স্বামীর চিতায় ঝাঁপ দিয়ে এক ভয়াবহ মৃত্যুর পথ বেছে নেন।</p> <p style="text-align:justify">গ্রামবাসীর দাবি, সেই তরুণীই নাকি মৃত্যুবরণের মুহূর্তে এই গ্রামকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এই গ্রামে আর কোনো দিন দীপাবলি পালিত হবে না। তারপর থেকে আর কোনো দিন সাম্মু গ্রামে দীপাবলির আয়োজন দেখা যায়নি।</p> <p style="text-align:justify">বাজি ফাটানো দূরে থাক, এই গ্রামের বাসিন্দারা দীপাবলি উপলক্ষে কোনো বিশেষ আয়োজনই করেন না। তারা ভয় পান, দীপাবলি পালন করলে তাদের পরিবারেও কোনো ভয়ংকর বিপর্যয় নেমে আসবে।</p> <p style="text-align:justify">কিংবদন্তি অনুসারে, বহু বছর আগে স্বামীর চিতায় আত্মঘাতী সেই তরুণী বধূকে এই গ্রামের মানুষ ‘সতী’ হিসেবে মান্য করে। এমনকি তার পূজাও করা হয়।</p> <p style="text-align:justify">সাম্মু গ্রামেরই বাসিন্দা পূজা দেবী ভোরাঞ্জ পঞ্চায়েতের প্রধান। পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বিয়ে হয়ে আসার পর থেকে এই গ্রামে কোনো দীপাবলি পালিত হতে দেখেননি তিনি।</p>