<p style="text-align:justify">অটিজমের বৈশিষ্ট্য নিয়েই শিশু মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়। অর্থাৎ, অটিজম জন্মগত ব্যাপার। তাই শিশুর বয়স একটু একটু করে বাড়ার সাথে সাথে প্রকাশ পেতে থাকে এই লক্ষণগুলো। মা-বাবা একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারেন অন্য শিশুদের সঙ্গে তার নিজের বাচ্চার আচরণগত সমস্যা।</p> <p style="text-align:justify">অটিজম শব্দটি বলতে অনেকে মানসিক রোগ বুঝলেও এটি মূলত এক ধরণের স্নায়ুবিক বিকাশ-জনিত সমস্যা। অটিজম আক্রান্তদের অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকে।</p> <p style="text-align:justify">অটিস্টিক শিশুদের অকুপেশনাল থেরাপিস্ট কাজী আলামিন বলছিলেন, শিশুদের এক থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যেই অটিজমের লক্ষণগুলো ধরা যায়।</p> <p style="text-align:justify"><strong>সমবয়সীদের সাথে না থাকা</strong></p> <p style="text-align:justify">অটিস্টিক শিশুরা কখনই তার সমবয়সী শিশুদের সাথে মিশবে না। তাদের সাথে খেলা করা, গল্প করা বা তাদের সঙ্গ তার ভালো লাগবে না। কোনো আগ্রহ থাকবে না তার সমবয়সীদের সাথে। সে সব সময় একা একা থাকার চেষ্টা করবে। ঘরের একটা নির্দিষ্ট স্থানে নিজের মতো থাকার চেষ্টা করবে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ</strong></p> <p style="text-align:justify">আচরণের অনেক কিছুই শিশু বারবার করবে। যেমন আপনি তাকে একটা খেলনা দিলেন সেটা সে একভাবে খেলবে। তাকে আবার অন্য একটা খেলনা দিলেন সেটাও সে ওই একইভাবে খেলবে। অর্থাৎ, তার সব খেলনা নিয়ে খেলার প্যাটার্ন একই থাকবে।</p> <p style="text-align:justify">যদিও আপনি তাকে ভিন্ন নিয়মে খেলার দুটি খেলনা তাকে দিয়েছেন, বা তাকে একটা গ্লাসে পানি আনতে বললে একইভাবে সে বারবার পানি আনবে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>চোখে চোখ রেখে কথা না বলা</strong></p> <p style="text-align:justify">অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না। যদি আপনি তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন বা কাজ করার চেষ্টা করেন তাহলে সে আপনার চোখের দিকে তাকাবে না। তার ‘আই কন্টাক্ট’ থাকবে না।</p> <p style="text-align:justify"><strong>কথা বলায় জড়তা</strong></p> <p style="text-align:justify">কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে কথা বলায় জড়তা থাকতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যাবে শিশু একেবারে কথায় বলছে না। অথবা, একটা বয়স পর্যন্ত কথা বললেও পরে আস্তে আস্তে ভুলে যাচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>ধৈর্য কম থাকা</strong></p> <p style="text-align:justify">এই শিশুদের ধৈর্য কম থাকবে। এমনকি একটা খেলনা দিলে সেই খেলনার প্রতি ধৈর্য নিয়ে এক মিনিট খেলা করাটা তার জন্য কঠিন হবে। এক-দুই মিনিট পর তার মনোযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। তার কোন জিনিসের প্রতি মনোযোগের দুর্বলতা থাকবে।</p> <p style="text-align:justify"><strong>সামাজিকীকরণ অনুপস্থিত থাকবে</strong></p> <p style="text-align:justify">সামাজিকভাবে যেসব আচরণ শিশুদের শেখানো হয় সেগুলোর প্রতি তার চরম অনীহা থাকবে। পরিবেশ-পরিস্থিতিভেদে পরিবার-পরিজন বা বড়-ছোটদের সাথে কী আচরণ করতে হয় এটা তারা বুঝে উঠতে পারে না।</p> <p style="text-align:justify">কাজী আলামিন বলছিলেন, ‘এক কথায় বলতে গেলে দুই বা তিন বছর বয়সী একটা বাচ্চার যে আচরণ হওয়া উচিত, অটিজমে আক্রান্ত একটা বাচ্চার মধ্যে সেটা থাকবে না।’ তবে অনেকে অন্তর্মুখী এবং অটিজমে আক্রান্ত বাচ্চার বৈশিষ্ট্যের পার্থক্য করতে পারেন না।</p> <p style="text-align:justify">বাংলাদেশে এই অটিজম সম্পর্কে এখন কম বেশি ধারণা থাকলেও চিকিৎসার জন্য প্রথমে কী ধরনের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে সেটা নিয়ে অনেকেই বিড়ম্বনায় থাকেন।</p> <p style="text-align:justify">শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে প্রথমেই শিশুকে একটা স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। এরপর একজন শিশুর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এদিকে বিশ্ব-স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুসারে ধারণা করা হয়, বিশ্বজুড়ে প্রতি ১৬০ শিশুর মধ্যে একজন এএসডি আক্রান্ত। কিন্তু এই সমস্যা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে লিঙ্গ-গত বিশাল বৈষম্য রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">সূত্র : বিবিসি</p>