<p style="text-align:justify">রূপগঞ্জের সর্বত্র এখন গ্যাং পার্টির আতঙ্ক। কিশোরদের একটি অংশ এলাকার ‘প্রভাবশালী’ বড় ভাইদের হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অলিগলি। করছে নানা অপরাধ। গ্রুপের দ্বন্দ্বে খুনাখুনি হচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">দল বেঁধে মাদক সেবন করছে যত্রতত্র। পিছিয়ে নেই ধর্ষণের মতো অপরাধ করতেও। এসব গ্রুপ ভূমি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে হেন অপকর্ম নেই, যা করে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জে ২১টি গ্যাং সক্রিয় রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">এগুলোর মধ্যে কিং মাস্টার, ডি কম্পানি, টাইগার গ্যাং, টেনশন গ্যাং, ডেঞ্জার গ্রুপ, সুইচ গ্রুপ, স্যাভেজ গ্রুপ, কুড়াল গ্রুপ, লাদেন গ্যাং, বাবা গ্যাং উল্লেখযোগ্য। এসব গ্রুপের প্রায় সাড়ে ৪০০ সদস্য গোটা রূপগঞ্জ দাবড়ে বেড়াচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠেছে মাস্তান গ্রুপ। গত ১০ বছরে এসব দলের কিশোরদের হাতে ১৭ জন খুনের শিকার হয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ নভেম্বর ভোলাব পাইস্কা এলাকায় তিন কিশোর বন্ধু মিলে হত্যা করে কিশোর মাওলাকে। একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ঘুম ভেঙে দেওয়ায় দাউদপুরের দুয়ারা এলাকায় কিশোর ছোট ভাই জামিল পায়েল হত্যা করে তার বড় ভাই আশরাফুলকে। ২০১৪ সালের ৩ মে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মাদকাসক্ত কিশোর ছেলে আব্দুল কাদিরের হাতে খুন হয় তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম। ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে প্রেমসংক্রান্ত বিরোধে দুই কিশোরের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিজেদের বড় ও প্রভাবশালী বলে উপস্থাপন করতে দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো, বাইক রাইডিং, অনলাইন ক্যাম্পিং, দেয়াল লিখনের মাধমে গ্যাংগুলো গড়ে উঠছে।</p> <p style="text-align:justify">এরপর মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা, দল বেঁধে মাদক সেবন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এমনকি মাদক কারবারেও জড়িয়ে পড়ছে এসব গ্রুপ। প্রতিটি দলে ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন করে থাকছে। স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করে অপরাধ করতে মহল্লার বড় ভাই এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব দলের নেতাদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন। বস্তির দিনমজুর থেকে শুরু করে ধনীর দুলাল সবাই এই চোরাবালিতে পা দিচ্ছে।</p> <p style="text-align:justify">রূপগঞ্জের কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা সবচেয়ে বেশি। এই ইউনিয়নে অন্তত পাঁচটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। মুড়াপাড়ায় রয়েছে চারটি কিশোর গ্যাং, তারাব পৌরসভায় পাঁচটি এবং কাঞ্চন পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে গড়ে উঠেছে অন্তত তিনটি কিশোর গ্যাং। এ ছাড়া ভুলতা  ইউনিয়নে দুটি কিশোর গ্যাং সক্রিয়। গোলাকান্দাইল ইউনিয়নে অন্তত দুটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নে ৩০০ ফুট সড়ককেন্দ্রিক নানা অপরাধে জড়াচ্ছে দুটি কিশোর গ্যাং। ভোলাব ইউনিয়নে দুটি এবং দাউদপুর ইউনিয়নে দুটি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে।</p> <p style="text-align:justify">নারায়ণগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল বাশার রুবেল বলেন, কিশোর সংশোধন আইন আছে। কিন্তু যে হারে কিশোর গ্যাং বেড়েছে আরো কঠোর আইন হওয়া দরকার।</p> <p style="text-align:justify">রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত হোসেন বলেন, কিশোর গ্যাং অনেকটা কমে গেছে। বেশ কিছু অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আরো অভিযান পরিচালনা করা হবে।</p>