<p>দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। একই সঙ্গে কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণে একটি গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনায় সেন্ট মার্টিনে যেতে হলে পর্যটকদের নিবন্ধনসহ নানা বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। মন্ত্রণালয়ের গঠিত যৌথ কমিটি এসব বিষয় দেখভাল করবে।</p> <p>কমিটির সদস্যরা হলেন টেকনাফ এবং কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় অথবা ট্যুরিজম বোর্ড, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ও কোস্ট গার্ডের একজন করে প্রতিনিধি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা, বাদীই অস্ত্র মামলার আসামি" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/20/1732117291-978ffdee4f2c89fbd57c13df3d9df191.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা, বাদীই অস্ত্র মামলার আসামি</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/11/20/1448848" target="_blank"> </a></div> </div> <p>গতকাল মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে কমিটি গঠন ও বিভিন্ন গাইডলাইন উল্লেখ করে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।<br />  <br /> চিঠিতে কমিটির কর্মপরিধি হিসেবে বলা হয়েছে, পর্যটক এবং অনুমোদিত জাহাজ কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগ এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্রব্যাদি পরিবহন না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। পর্যটকগণ কোন হোটেলে অবস্থান করবে তার রেজিস্টার সংরক্ষণ করতে হবে। জাহাজ ছাড়ার এন্ট্রি পয়েন্টে শুধু বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত অ্যাপস থেকে সংগ্রহকৃত ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে। জাহাজ ছাড়ার পয়েন্টে এবং সেন্ট মার্টিনে এন্ট্রি পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়ে বিলবোর্ড স্থাপন করতে হবে।</p> <p>অফিস আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান বলেন, ‘সেন্ট মার্টিন দ্বীপ রক্ষার জন্য সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক দল আসা প্রয়োজন : সারজিস" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/20/1732116561-62bf1edb36141f114521ec4bb4175579.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে নতুন রাজনৈতিক দল আসা প্রয়োজন : সারজিস</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Politics/2024/11/20/1448843" target="_blank"> </a></div> </div> <p>জানা যায়, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন বর্তমানে হৃমকির মুখে পড়েছে। গত দুই যুগে এসব হুমকি তৈরি হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছরের পুরোনো দ্বীপটির মাটি, পানি ও বাতাস বিষাক্ত হয়ে উঠছে।</p> <p>অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকের কারণে সৃষ্ট এসব বিপদের ফলে দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় দ্বীপের তাপমাত্রা কমপক্ষে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকছে।<br />  <br /> গত ১৫ এপ্রিল এনভায়রেনমেন্টাল অ্যাডভান্স নামের একটি বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় বলা হয়েছে, পর্যটনের কারণে উচ্চ তাপমাত্রার পাশাপাশি লবণাক্ততা বৃদ্ধি, বন উজাড়, দূষণ, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, কচ্ছপের আবাস ধ্বংস, প্লাস্টিকের ব্যবহার, মিঠাপানির সংকট, জোয়ারে সমুদ্রভাঙনসহ নানা বিপদ দেখা দিয়েছে। দ্বীপে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ১০ হাজার থাকলেও সারা বছর সেখানে কয়েক লাখ পর্যটক অবস্থান করে। </p> <p>বিশেষজ্ঞরাও সেন্ট মার্টিনের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অপরিকল্পিত পর্যটনকে দায়ী করছেন।</p> <p>তাদের মতে, মৌসুমি পর্যটকদের অনিয়ন্ত্রিত আচরণ ও পরিবেশ বিধ্বংসী বিনোদনের ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। গত এক যুগে দ্বীপটি রক্ষায় সরকার তিন দফায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু পর্যটন ব্যবসায়ীদের চাপে ওই অবস্থান থেকে সরে আসে সরকার।</p> <p>সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সর্বশেষ ২০২০ সালের আগস্টে সেখানে পর্যটক নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সরকারের তরফে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেসকে (সিইজিআইএস) একটি সমীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণা শেষে জানায়, দ্বীপটিতে কোনোভাবেই পর্যটকদের রাতে থাকার অনুমতি দেওয়া ঠিক হবে না। শীতকালে পর্যটন মৌসুমে দিনে ১ হাজার ২৫০ জনের বেশি পর্যটক যেতে দেওয়া ঠিক হবে না।</p> <p>সিইজিআইএসের নির্বাহী পরিচালক মালিক ফিদা আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ও অন্যান্য গবেষণায় বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে, এই দ্বীপ রক্ষায় পর্যটন নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। পর্যটন ব্যবসায়ীদের চাপ ও অন্যান্য কারণে সরকারের পিছু হটলে চলবে না।’<br />  <br /> পরিবেশ অধিদপ্তর জানায়, জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদপ্তর ১৯৯৯ সালে সেন্ট মার্টিনকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, সেন্ট মার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।</p> <p>পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা দ্বীপটি বাঁচাতে চাই। এটি সবার সম্পদ। পর্যটকরা দায়িত্বশীল আচরণ করলে দেশের ওই সম্পদ রক্ষা পাবে।’ </p>