<p style="text-align:justify">স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় প্রাথমিক কিছু বিদ্যালয়ে চলছে দায়সারা পাঠদান। এতে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ অনেকেই কিন্ডারগার্ডেন, প্রাইভেট কিংবা কোচিং শিক্ষার দিকে ঝুকে পড়ছে। এমন অভিযোগ করেছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার অভিভাবক মহলে।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, একটিতে চলমান আইনী জটিলতা ছাড়া ২৪৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি শিশু কল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪টি কিন্ডারগার্ডেন বিদ্যালয়, সাতটি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা, ৬৫টি বেসরকারি বিদ্যালয়, ১৬টি এনজিও বিদ্যালয় ও একটি ব্রাক বিদ্যালয় আছে। এছাড়া বিভিন্ন অসঙ্গতিতে অনুমোদিত হয়নি এমন বেসরকারি ২১টি, ১৪টি কিন্ডারগার্ডেন, ০৬টি ইবতেদায়ী মাদ্রাসা ও একটি ব্রাক বিদ্যালয় রয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/20/1732086158-f2de2cff76c453f1e91897ca0e26e262.jfif" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>বৃহস্পতিবার ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না রাজধানীর যেসব এলাকায়</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/dhaka/2024/11/20/1448684" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি স্কুল ঘুরে দেখা যায়, পশ্চিম কাঠালী কালির ডাংগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে তৃপ্ত ও সৌরভ নামে দু’জন শিক্ষার্থী বসে আছে। </p> <p style="text-align:justify">অপরদিকে ৫ম শ্রেণিতে পল্লব ও বিথী রানীকে নিয়ে ক্লাশ নিচ্ছেন শিক্ষকা জান্নাতুল আর শিক্ষিকা সোমা রানী। ৪র্থ শ্রেণিতে তার একমাত্র উপস্থিত শিক্ষার্থী রত্না রানীকে ছাত্রী হিসাবে পরিচয় করে দিলেও পরে বেড়িয়ে আসে সে তার বাড়ির কাজের মেয়ে। </p> <p style="text-align:justify">ওই স্কুলের শিক্ষিকা শাহানাজ পারভীন জানান, আমরা প্রধান শিক্ষকসহ ৫ জন কর্মরত আছি। একজন শিক্ষক আজ আসেন নাই আর প্রধান শিক্ষক বাইরে আছেন। </p> <p style="text-align:justify">গত সোমবার পুর্ব গোলমুন্ডা আনন্দ কানন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিল্লাত, লাকী ও মিশু জানায়, রোদের কারণে আমাদের সমাবেশ ক্লাশ হয় না। তাই দুপুর ১২ টায় আমাদের ২য় শিফট শুরু হয়। ওই শিফটে ৪র্থ শ্রেনিতে ২ জন ও ৫ম শ্রেণিতে ৪ জন শিক্ষার্থী দেখা গেলেও সেখানে ঘাড়ির কাটা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনো শিক্ষককে ক্লাশে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের অফিস কক্ষে তারা খোশ গল্পে ব্যস্ত ছিলেন। </p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="আরো কয়েক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সালমান-আনিসুল-পলকদের" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/20/1732085173-df5de4cdd6c661f2f652dedd56727320.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>আরো কয়েক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো সালমান-আনিসুল-পলকদের</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/11/20/1448681" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ঘড়ির কাটায় দুপুর ১.১৫মিনিটে হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওই প্রতিষ্ঠানের ৫ম শ্রেনির একমাত্র উপস্থিত শিক্ষার্থী বিজয় চন্দ্র, ৩য় শ্রেণিতে কোনো শিক্ষার্থী নেই। </p> <p style="text-align:justify">৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাবিবা মৌনতা, তানজিম ও আরফিন জানায়, যোহরের আজানের পর আমাদের ২য় শিফটের ক্লাশ শুরু হয়। তারপর ক্লাশ শেষ হলে কখন ছুটি হয় জানতে চাইলে তারা বলতে পারে না। দ্বিতল ভবনের নীচ তলায় অফিস কক্ষে বসেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক এনামুল হক। তিনি জানান, 'এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৭৮জন। আমিসহ এখানে তিনজন শিক্ষক কর্মরত আছি। আর শিক্ষার্থী না আসলে আমি কি করব। ধান কাটার মৌসুমে অনেকে ক্ষেতের মাঠে যেতে পারে।'</p> <p style="text-align:justify">ডাউয়াবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনজন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও সুলতান নামে একজন শিক্ষক তৃতীয় শ্রেনির ক্লাশ নিচ্ছেন। ৪র্থ শ্রেনির শিক্ষার্থীরা ফজলুল হক স্যারের অপেক্ষায়। আর প্রধান শিক্ষক আইনুল হক না থাকায় ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা চলে গেছে। </p> <p style="text-align:justify">দক্ষিণ হলদিবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ক্লাশ নিচ্ছেন আব্দুল কুদ্দুস নামে একজন শিক্ষক। ৩য় শ্রেণিতে কোনো শিক্ষার্থীর উপস্থিতি মেলেনি। আসাদুজ্জামান নামে একজন শিক্ষক অনুপস্থিত। সংবাদকর্মীদের আসার সংবাদে ছুটে আসেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হালিমুর রহমান। তিনি শিক্ষার্থী উপস্থিতির জন্য অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন বলে জানান।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মামুন ছিলেন গণহত্যার সুপ্রিম কর্মকর্তা : চিফ প্রসিকিউটর" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/11/20/1732084945-d2c3e4fe392f545b9482906d09993497.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মামুন ছিলেন গণহত্যার সুপ্রিম কর্মকর্তা : চিফ প্রসিকিউটর</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/Court/2024/11/20/1448680" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify"><br />  <br /> এসব প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক ও এলাকাবাসী জানান, আমরা সন্তানদের শিক্ষাজীবন নিয়ে খুবই চিন্তিত। বাচ্চাদের ভিত্তিটা যদি ঠিক না হয়। তাহলে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন কিভাবে দেখব? প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলো অনেকটা কাজির গোয়ালের মতো। কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকি নাই। সহকারী শিক্ষা অফিসার অনেকেই অত্র উপজেলায় থাকেন না। তারা বিভাগীয় শহরে বাস করেন। কর্ম এলাকা হতে যার দুরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ এসব সহকারী শিক্ষা অফিসার নিজ দপ্তরে আসতে প্রায় দুপুর হয়। তাই শিক্ষকও তার মর্জি মতো প্রতিষ্ঠানে আসেন। তারপর শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতায় তার মতো উপস্থিত-অনুপস্থিত চিহ্ন মারেন। মাস শেষে উপজেলা পর্যায়ে তাদের কাজের প্রতিবেদন দিয়ে তাদের বেতন জায়েজ করেন।</p> <p style="text-align:justify">সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অনির্বাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, সবাই আন্তরিক না হলে কোন কাজই সফল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব না। সংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা মূলক পরিদর্শন বাড়ানো উচিত। আর শিক্ষাটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলে এমন সমস্যা নিরসন করা সম্ভব।</p> <p style="text-align:justify">উপজেলা শিক্ষা অফিসার শরিফা আখতার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখানে দাপ্তরিক কাজ বেশি। তারপরেও আমি স্কুল গুলো পরিদর্শন করে থাকি। শিক্ষকদের নিয়ে মিটিং করা হচ্ছে। নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থী আনতে আমরাতো পরামর্শ দিচ্ছি। মা সমাবেশসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালু আছে। শিক্ষার্থীতো নিয়ে আসতে হবে। সবখানে এমন অবস্থা নাই। তবে এরকম থাকতে পারে। শিক্ষার্থী কেন নাই অবশ্যই জবাবদিহিতা আছে। স্কুল গুলোর নাম অনুযায়ী তথ্যগুলো দেন আমরা ব্যবস্থা নিব।’</p>