<p>মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ৫ আগস্টের পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সাতটি সিএনজি অটোরিকশা, একটি প্রাইভেট কার ও চারটি মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে। গাড়ির মালিকরা এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলেও এখনো কোনো গাড়ি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।<br />  <br /> জীবিকা নির্বাহের একমাত্র এই সম্বল হারিয়ে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। হঠাৎ করে গাড়িগুলো রহস্যজনকভাবে চুরি হওয়ায় কুলাউড়ায় গাড়ি মালিকরা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল।</p> <p>যাদের সিএনজি অটোরিকশা চুরি হয়েছে তাদের অনেকেরই শোরুমে কিস্তি রয়েছে। গাড়িগুলো চুরির পর থেকে শোরুমের মাসিক কিস্তি বহন করাসহ পরিবার খরচ চালাতে অকেনেই হিমশিম খাচ্ছেন। </p> <p>খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির (একাংশ) সহসভাপতি আজিজুর রহমান মনিরের একটি স্টারলেট কার গাড়ি (সিলেট মেট্রো ক- ০২-০১৪২) ১২ আগস্ট গভীর রাতে তার বাসা থেকে চুরি হয়। ২৭ আগস্ট একই রাতে উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন থেকে তিনটি সিএনজি অটোরিকশা চুরি হয়। তাদের মধ্যে সাদিকুর রহমান তুয়েলের মালিকানাধীন সিএনজি (মৌলভীবাজার থ- ১২-৯২৫৪), সাইদুল ইসলাম লাকির সিএনজি (মৌলভীবাজার থ-১১-৬৫১৩) ও মোর্শেদ খান মালিকানাধীন সিএনজি (মৌলভীবাজার থ- ১১-৭৩০১)। ১ সেপ্টেম্বর রাতে ব্রাহ্মণবাজার হিঙ্গাজিয়া এলাকার সাবেক মেম্বার শফিকুর রহমান কুদ্দুছের সিএনজি (মৌলভীবাজার থ- ১২-৪৯৩৩) এবং টিলাগাঁও ইউনিয়নের ভেজাবন এলাকার মনির মিয়ার একটি নতুন (অনটেস্ট) সিএনজি গাড়ি গ্যারেজের তালা ভেঙে চোররা নিয়ে যায়। </p> <p>সর্বশেষ ১৭ সেপ্টেম্বর একই রাতে আরো দুইটি সিএনজি অটোরিকশা চুরির ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কৌলা এলাকার সাঈদ মিয়ার মালিকানাধীন সিএনজি গাড়ি (মৌলভীবাজার থ- ১২-৯৯০৯) ও হাজীপুর ইউনিয়নের পাবই এলাকার মো. কালাম মিয়া মালিকানাধীন সিএনজি গাড়ির (মৌলভীবাজার থ- ১১-৭৩০৩) চোররা গ্যারেজের তালা ভেঙে নিয়ে যায়। </p> <p>গত দেড় মাসে কুলাউড়া শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওষুধ কম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিসহ চারজনের চারটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শাহাদাত হোসেন মনির বাড়িতে কয়েক লাখ টাকার মালপত্র চুরি হয়। </p> <p>কুলাউড়ায় একের পর এক এসব গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটলেও এখনো কোনো গাড়ি উদ্ধার না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন গাড়ির মালিকরা। তাদের দাবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন দ্রুত গাড়ি চোরদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে অনেক সিএনজি মালিককে পথে বসতে হবে। </p> <p>হতদরিদ্র সিএনজিচালক সাঈদ জানান, অনেক কষ্টে ঋণ করে কিস্তিতে শোরুম থেকে একটি সিএনজি ক্রয় করে চালাতেন। এখনো বেশির ভাগ কিস্তির টাকা বাকি রয়েছে। কিন্তু তার গাড়িটি চুরি হওয়ায় বর্তমানে তাকে মানবেতর দিন যাপন করতে হচ্ছে। এক দিকে শোরুমের কিস্তির জন্য চাপ আর অন্যদিকে সংসার চালাতে তার হিমশিম খেতে হচ্ছে। </p> <p>কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম আপছার বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকজন চোর-ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাড়ি চুরির বিষয়ে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ চোর-ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তারে প্রতিদিন অভিযান চালাচ্ছেন তারা। আর কোনো গাড়ি চুরির ঘটনা যেন না ঘটে সেই জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।</p>