<p style="text-align:justify">বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘চিন্ময় গ্রেপ্তার হয়েছেন দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী। হঠাৎ করে ইসকন নামের একটি সংগঠনের বিভিন্ন তৎপরতা দেখা গেল। সেই তৎপরতার মধ্যে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য যত রকম পদ্ধতি নেওয়া দরকার সেটা করা হচ্ছে।’</p> <p style="text-align:justify">আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে ‘ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।</p> <p style="text-align:justify">ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রুহুল কবীর রিজভী বলেন, ‘আজকে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর চিন্ময়কে মুক্তি দেওয়ার জন্য বলে। শেখ হাসিনার পোষ্য সন্তান যুবলীগ-ছাত্রলীগ যখন কিশোর বিশ্বজিৎকে হত্যা করল, কই সেদিন তো আমরা ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরকে কোনো স্টেটমেন্ট দিতে দেখলাম না। তখন তারা নিশ্চুপ থাকল কেন? যখন উত্তর-পূর্বাঞ্চল বানের পানিতে ভেসে গেল, সেখানে তো শুধু মুসলমানের বাড়ি ভাসেনি, হিন্দুদের বাড়িও ভেসে গেছে। সেদিন তো ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরের মায়া-দয়া দেখলাম না।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘চিন্ময় বাংলাদেশি নাগরিক। সে অপরাধ করুক বা না করুক, আদালত সেটা দেখবেন। আপনাদের এত আগ্রহ কেন? জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দুই হাজারের মতো শিশু, তরুণ, কিশোরকে নির্বিচারে হত্যা করল যে শেখ হাসিনা, তাকে আপনারা সেখানে আশ্রয় দিলেন। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আপনারা পার পাবেন না। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র দিয়ে বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখা যাবে না।’</p> <p style="text-align:justify">রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদের (রাকস) সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে শেখ হাসিনা অত্যন্ত দুঃখ প্রকাশ করে তার মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন। মুগ্ধর মতো তারুণ্যদীপ্ত ছেলে, তার আরেক সতীর্থ গুলি খাচ্ছে, তার মধ্যে বলছে পানি লাগবে পানি। আপনি কি সেই মুগ্ধকে হত্যা করতে পারেন? রংপুরের আবু সাঈদের বুকে পুলিশ দিয়ে গুলি করে তাকে হত্যা করতে পারেন? আর আজকে চিন্ময় গ্রেপ্তার হয়েছে বলে আপনি কুমিরের কান্না কাঁদছেন। এইটার জন্য আপনি কী পুরস্কার পাবেন ভারতের কাছ থেকে?’</p> <p style="text-align:justify">তিনি বলেন, ‘আজকে সারজিস ও হাসনাতের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে, তারা বলেছে এখানে ইসকনের সংযোগ থাকতে পারে। এগুলো কিসের আলামত। এগুলো কী ঘটনা ঘটছে। আপনারা কি মনে করছেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে আপনারা পার পেয়ে যাবেন। ১৮ কোটি মানুষের দেশে অস্থিতিশীল করে আপনারা কিছু করতে পারবেন না। এ দেশের মানুষ সচেতন। এ দেশের মানুষ যুদ্ধ করে তাদের স্বাধীনতা এনেছে। দেশকে বাঁচাতে কিভাবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করতে হয়, সেটা এদেশের মানুষ জানে।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন কোনো একক কৃতিত্বের ফসল নয়। এর আগে বিএনপির দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের অধ্যায় রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের অন্যতম কারণ প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কার করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু তারা তাদের মূল কাজ ভুলে ফুটপাতের দোকান উৎখাত ও পলিথিন নিষিদ্ধ করছে। এ ধরনের কাজে তারা অভিজ্ঞ নয়। ফলে দেশ অস্থিতিশীল হচ্ছে। আমরা তাদের বলতে চাই, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিপদে পড়লে আমরা সবাই বিপদে পড়ে যাব। আপনাদের বিপদে ফেলতে দেশি-বিদেশি অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আশা করছি, এদিকে নজর দেবেন।’</p> <p style="text-align:justify">রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী। এ সময় আরো বক্তব্য দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলিম, জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক এনামুল হক ও নওগাঁ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাছানাত আলী প্রমুখ।</p>