<p>গ্রামের এক কোণে ছোট্ট একটি মাটির বাড়ি। বাড়ির জানালাটি যেন প্রকৃতির রঙিন ক্যানভাস। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকে তন্বী, ১৫ বছরের মেয়ে। তার প্রতিটি সকাল শুরু হয় এই জানালার দিকে তাকিয়ে।</p> <p>জানালার ওপারে দেখা যায় ঝকঝকে সবুজ কলাগাছ, উজ্জ্বল আলো আর নীলাকাশের মাঝে লাল গোলাকার সূর্য। জানালার ঠিক নিচে একটি ছোট্ট টেবিল, যেখানে আরাম করে ঘুমিয়ে থাকে তার প্রিয় পোষা বিড়াল—চাঁদনী। বিড়ালটি যেন তন্বীর মতোই কল্পনাবিলাসী; কখনো কখনো মনে হয় সে স্বপ্ন দেখছে, যেখানে তার সাথি একটি টিয়াপাখি।</p> <p><img alt="যেন জীবনের আয়না " height="175" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11.November/18-11-2024/Rif/25-11-2024-p6-9.jpg" style="float:left" width="250" />তন্বীর সেই টিয়াপাখির নাম টুনি। টুনিকে তন্বী নিজেই ছোট্ট অবস্থায় রক্ষা করেছিল এক ঝড়ের দিনে। এখন টুনি জানালার গ্রিলের পাশে বসে সারা দিন তন্বীকে সঙ্গ দেয়। সকালে যখন সূর্যের আলো ঘরের মেঝেতে পড়ে, টুনি মিষ্টি গান গেয়ে ঘরকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে।</p> <p>তন্বীর দিন শুরু হয় এই দৃশ্য দেখে। তার মনে হয়, এটি শুধু জানালা নয়, যেন তার জীবনের আয়না। প্রকৃতি যেন তার সঙ্গে কথা বলে। গাছের পাতার দোল খাওয়া, পাহাড়ের আড়াল থেকে সূর্যের উঁকি দেওয়া—সব কিছুই যেন তাকে নতুন দিনের অনুপ্রেরণা দেয়।</p> <p>তন্বী যখন জানালার দিকে তাকায়, তার কল্পনারা ডানা মেলে। সে ভাবে জানালার গল্পগুলো সবার জানা উচিত। তাই একদিন সে রংতুলি নিয়ে বসে। কাগজে রং দিয়ে তৈরি করে  জানালার রূপ। জানালার চারপাশের দেয়ালে রঙিন নকশা, গ্রামে বয়ে চলা নদীর ছবি আর ছোট্ট ফুলের বাগান তার সৃষ্টিকে পূর্ণতা দেয়।</p> <p>ছবিটির দিকে তাকালে তন্বীর মনে হয় সে শুধু জানালা নয়, সে যেন তার জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছে। এই জানালার গল্প প্রকৃতির সঙ্গে তার বন্ধুত্বের গল্প। সে ঠিক করে, ছবিটি শহরের প্রদর্শনীতে নিয়ে যাবে, যেন সবাই জানতে পারে গ্রামীণ জীবনের সৌন্দর্য আর প্রকৃতির শক্তি।</p> <p>তন্বীর স্বপ্ন, তার আঁকা জানালার গল্প একদিন সবার কাছে পৌঁছাবে। কারণ এটি কেবল তার গল্প নয়, এটি প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের গভীর সংযোগের প্রতীক।</p> <p> </p>