<p>বিভাগ প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পরও রংপুর নগর এখনো অগোছালো। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একটি বিভাগীয় শহর। যত্রতত্র বহুতল ভবন নির্মাণ, পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই নগর। </p> <p>জানা যায়, নগরের শাপলা চত্বর ও স্টেশন রোড, মেডিক্যাল পর্বগোট হাজীপাড়া এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া না লাগলেও এই এলাকা ছিল অনেকটাই পরিপাটি। কিন্তু দিনবদলের সঙ্গে বদলে গেছে এখানকার পরিবেশ। মানুষের বসবাস বেড়েছে। অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। নগর উন্নয়নে মাস্টারপ্ল্যান না থাকায় পুরো নগরে যত্রতত্রভাবে বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে। নগরের রাস্তাঘাটের কিছুটা উন্নয়ন হলেও হিসাব মিলবে না দৈর্ঘ্য-প্রস্থতে। কাগজ-কলমে নগরের  প্রধান সড়কটি ৬৫ ফুট প্রশস্ত হলেও স্থানভেদে কোথাও ৪০ আবার কোথাও আরো কম। বিদ্যুতের পোল কোথাও রাস্তার ওপর, আবার কোথাও বা রাস্তার মাঝেই। একই পোলে ঝুলছে বিদ্যুৎ, টেলিফোন, ইন্টারনেট ও ডিশের সংযোগ লাইন। এ ছাড়া কোনো কোনো এলাকায় ড্রেনের চেয়ে রাস্তা উঁচু, আবার কোথাও খালের চেয়ে রাস্তা নিচু।</p> <p>সাড়ে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস নগরে। সচেতন মহল বলছে, আবাসিক, বাণিজ্যিক ভবন কোথায় হবে—এ ধরনের কোনো নির্দেশনাও নেই। যত্রতত্র ইচ্ছামতো চলছে নগরায়ণ। এ ছাড়া ক্রমবর্ধমান হারে আশপাশের জেলা থেকে মানুষ আসছে রংপুরে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগরজুড়ে বাড়ছে যানজট।</p> <p>অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘরের পাশাপাশি বাণিজ্য প্রসারে হোটেল, মোটেল, মার্কেট, ছোট-বড় কলকারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে শহরের সৌন্দর্য বাড়ছে না, বরং বাড়ছে ইট-বালু আর রড-সিমেন্টের জঞ্জাল। মহানগর পরিণত হচ্ছে  অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা নগরে।</p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পরিকল্পিত নগরায়ণে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে লাল ফিতায় বন্দি ‘রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’। দীর্ঘ ১০ বছরেও এই প্রকল্পটি আলোর মুখ না দেখায় রংপুর নগরকে নিয়ে কোনো মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালে  রংপুরসহ তিনটি উন্নয়ন (রংপুর, সিলেট ও বরিশাল) কর্তৃপক্ষ গঠনের খসড়া আইন প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এর কাজ শুরু হয়নি। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশন থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।</p> <p>এ ব্যাপারে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, রংপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়নের ব্যাপারে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার কথা থাকলেও সেটা হয়নি। জনবল কাঠামো অনুমোদন হয়নি। এ কারণে অপরিকল্পিত নগরায়ণ বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।</p>