<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহীতে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কাজে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার প্রকাশ্যে দেখা গেলেও সে অস্ত্রগুলো উদ্ধার হয়নি এখনো। বিশেষ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের ওপর যেসব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ তাদের বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের সন্ত্রাসীরা সেসব অস্ত্র উদ্ধার হয়নি মোটেও। আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি দেশি যেসব ধারালো অস্ত্রের ব্যবহার দেখা গেছে, সেগুলোও উদ্ধার হয়নি এখনো। ৪ ও ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে অন্তত শতাধিক অস্ত্রের প্রকাশ্যে ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছে নগরবাসী। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা চালিয়ে শতাধিক আহত ও দুজনকে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। প্রকাশ্যে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া আসামিদের মধ্যে এজাহারনামীয় ৬০ জনের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে মাত্র তিনজন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার দুজনকে রিমান্ডে নিলেও মেলেনি অস্ত্রের কোনো সন্ধান। রিমান্ডে তারা স্বীকার করেছে এসব অস্ত্র তারা নগর আওয়ামী লীগের অফিস থেকে সরবরাহ পেত এবং প্রয়োজনে ব্যবহার করত ও কাজ শেষে সেখানেই ফেরত দিত। আওয়ামী লীগের মহানগর দলীয় কার্যালয়ই ছিল অস্ত্রাগার।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেছে ৫ আগস্টের হামলায় শহীদ আলী রায়হান ও সাকিব আনজুমের পরিবার। আলী রায়হানের মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে ৫০ জনকে, আর অজ্ঞাতপরিচয় আসামি দুই হাজার জন। অন্যদিকে সাকিব আনজুমের খুনের মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে নামভুক্ত আসামিদের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও যুবলীগ নেতা জহিরুল ইসলাম রুবেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কয়েক দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে তাদের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো সম্পর্কে কোনো তথ্য পুলিশকে দেননি বলে কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্দোলন দমনে অংশ নেওয়া কয়েক শ সন্ত্রাসী পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। গত ৪ ও ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধীদের দমন করতে প্রকাশ্যে অংশ নিতে দেখা যায়, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রমজান, সিটি করপোরেশনের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনারুল হক আনার আলীসহ প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী। হ্যান্ড মাইকে প্রকাশ্যে হামলা চালানোর নির্দেশ দেন ডাবলু সরকার। তাদের মধ্যে দুজন ছাড়া গ্রেপ্তার হয়নি কেউ-ই এবং অবৈধ অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র ও এমপি মিজানুর রহমান মিনু বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহী শহর ছিল আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শান্তির শহর, সেই শহরকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দীর্ঘদিন ক্ষমতা দখল করে লাশের শহর বানিয়েছে। তারা বারবার পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে ক্ষমতা দখলে রেখেছিল। বিরোধীদের দমন, চাঁদাবাজি আর নিজেদের মধ্যে আধিপত্য ধরে রাখার লড়াইয়ে তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র জোগাড় করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ব্যবহার করেছে। এসবের গডফাদার আওয়ামী লীগের নেতা লিটন এবং ডাবলু সরকার অস্ত্রের ভাণ্ডারের মালিক।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জামায়াতের সেক্রেটারি ইমাজ উদ্দীন মণ্ডল বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যে পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর ব্যবহার করেছে, দুজনকে শহীদ করেছে, শত শত আহত করেছে, পঙ্গু করেছে সে তুলনায় গ্রেপ্তারে পুলিশের কোনো অগ্রগতি নেই। অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারে পুলিশের আরো সক্রিয় ভূমিকা আশা করি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের আরেক শহীদ সাকিব আনজুমের বাবা মাইনুল হক বলেন, যাদের বিরুদ্ধে মামলা করলাম তারা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ছিলেন বেশ সক্রিয়, রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত, মহানগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী মহানগর আওয়ামী লীগের অফিস ও রাজশাহী নগর ভবনে অস্ত্রের মজুদ গড়ে তুলেছিল। ছাত্র-জনতার মিছিল ৫ আগস্ট নগরীর সাগরপাড়া এলাকায় এসে পৌঁছলে মুহুর্মুহু ককটেল হামলা, পিস্তল, শটগান, ওয়ান শ্যুটার গান দিয়ে গুলি চালায় ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা চেষ্টা করছি, আসামি ধরার এবং অস্ত্র উদ্ধারের। কিন্তু আসামিরা এক জায়গায় স্থির নয়, আজ এখানে তো কাল ওখানে। যে অস্ত্রগুলো ব্যবহার করেছে তারা তা আওয়ামী লীগের নগর কার্যালয় থেকে পেত এবং কাজ শেষে সেখানেই জমা দিত, রিমান্ডে এসব কথা স্বীকার করেছে আওয়ামী লীগ নেতা ডাবলু সরকার ও যুবলীগের সন্ত্রাসী জহিরুল ইসলাম রুবেল।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>