<p>এমনিতেই লোকবল ও চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে সব ধরনের কার্যক্রম। এর ওপর মেডিক্যাল অফিসারসহ ৯ জন দীর্ঘদিন ধরে ডেপুটেশনে (প্রেষণ) অন্যত্র থাকায় ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। তাঁদের পদগুলো শূন্য না থাকায় নতুন কেউ যোগ দিতেও পারছে না। বছরের পর বছর এভাবে থেকে মাসান্তে শুধু বেতন-ভাতা নিতে আসেন কর্মস্থলে। এমন ঘটনা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।</p> <p>সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নান্দাইল উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। এখানে প্রায় পাঁচ লাখ লোকের বসবাস। স্বাস্থ্যসেবার জন্য তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার ওপরই নির্ভশীল। বর্তমানে বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। আর শখানেক রোগী ভর্তি থাকে। জরুরি বিভাগেও রোগী আসে শতাধিক। এই অবস্থায় মেডিক্যাল অফিসার, কনসালট্যান্ট, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, সার্জারি ও সহকারী সার্জারিসহ ২১ জন চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন মাত্র তিনজন। এ ছাড়া সমমানের পদ রয়েছে আরো ১২টি। এর মধ্যে প্রেষণে রয়েছেন ৯ জন। তিনজন দিয়ে কাজ চলমান রয়েছে।</p> <p>জানা যায়, নান্দাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেওয়ার পর থেকেই মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল জান্নাত ২০২১ সালের ১৫ মার্চ থেকে প্রেষণে কর্মরত রয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের রোগ নিয়ন্ত্রক শাখায়। এ ছাড়া উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মোছা. খাদিজা বেগম নিজ উপজেলা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন ২০০৯ সালের ২৭ আগস্ট থেকে। মো. দুলাল ফকির কালিহাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট থেকে এবং একই পদের আব্দুর রশিদ ভুইয়া ঘাটাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করছেন ২০১৬ সালের ১ জুন থেকে। অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর এনামুল হক, ফার্মাসিস্ট ওয়ারেছ আলী ২০২১ সালের জানুয়ারি ও মার্চ মাস থেকে মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন অফিসে কাজ করছেন। অন্যদিকে প্রধান সহকারী মো. শফিকুল ইসলাম ২০২২ সালের ২১ মার্চ থেকে ও কম্পাউন্ডার মহসিন রেজা ২০১২ সাল থেকে গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ইমার্জেন্সি অ্যাটেনডেন্ট মো. আওয়াল হক ২০১৩ থেকে ফুলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করছেন। প্রেষণে থাকা ব্যক্তিরা নিজেদের বিশেষ সুবিধার জন্য বাড়ির বা বসবাস করা জায়গার কাছে থেকে নিজ নিজ পদের বিপরীতে কাজ করছেন। তবে কর্মস্থল থাকে ফাঁকা।</p> <p>এ ব্যাপারে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিবাকর ভাট বলেন, ‘আমি এই হাসপাতালে যোগদান করার পর অনুপস্থিত চিকিৎসকদের ফাইলটি দেখেছি। ওই ফাইলে বেশ কিছু চিঠির অফিস কপি রয়েছে। এ ছাড়া প্রেষণে থাকা ব্যক্তিদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং বিভাগীয় পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।’</p> <p>ময়মনসিংহ সিভিল সার্জন ডা. মো. নজরুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক প্রেষণে চলে যাওয়া হাসপাতালের জন্য বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। নতুন লোকবলও দেওয়া যায় না। এ অবস্থায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কে কোথায় সংযুক্ত আছেন তার একটি তালিকা পাঠানোর জন্য। পরে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হবে তাঁদের ফেরত পাঠানোর জন্য।</p> <p> </p> <p> </p>