<p>দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা ও ফসলহানির আশঙ্কা বেড়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে বিস্তারিত :</p> <p>ঝালকাঠি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কয়েকটি বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গাছপালা বিধ্বস্ত হয়েছে। বিষখালী নদীর কাঁঠালিয়া অংশের প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে।</p> <p>স্থানীয়রা জানায়, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে কাঁঠালিয়া উপজেলার ছিটকী নেছারিয়া ফাজিল মাদরাসার কাঠের ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। বড় কাঁঠালিয়া গ্রামের কৃষক আবু হানিফের গোয়ালঘরে গাছচাপায় একটি গরু মারা গেছে। বড় কাঁঠালিয়া গ্রামের জেলে আলতাফ হোসেন জমাদ্দারের বসতঘর গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিষখালী নদীর কাঁঠালিয়া লঞ্চঘাট ও কচুয়া ফেরিঘাট এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার বেরিবাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে ওই এলাকায় ফসলের ক্ষেতে পানি ঢুকে আমন ধান ও শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।</p> <p>ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুর রহমান বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কাঁঠালিয়া উপজেলায় বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমরা এসব এলাকায় গিয়ে ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ের কাজ করছি।’</p> <p>বাগেরহাট : ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বাগেরহাটে দমকা বাতাস ও নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তাল বঙ্গোপসাগরের প্রচণ্ড ঢেউ সুন্দরবনের বাগেরহাট উপকূলে আছড়ে পড়ছে। তবে ঝড় আতঙ্ক কেটে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।</p> <p>জেলার মোংলা ও রামপাল এলাকার বেশ কয়েকজন চিংড়ি চাষি জানান, নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।</p> <p>বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী জানান, ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারে প্রায় দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনো বিপত্সীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।</p> <p>বেতাগী (বরগুনা) : ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার গাছচাপা পড়ে বরগুনার বেতাগীতে আশরাফ আলী হাওলাদার (৫৫) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।</p> <p>বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, ‘নিহতের পরিবারের স্বজনদের এরই মধ্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’</p> <p>কেশবপুর (যশোর) : দানার প্রভাবে ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি ৫২ বিলের পানি ২৭ বিলে ঢুকে আসায় কেশবপুরের জলাবদ্ধ এলাকার মানুষের অবস্থা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে কেশবপুর উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের বেতিখোলা গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের বাড়িতে পানি উঠে এসেছে। ওই গ্রামের মানুষ যাতায়াতের জন্য বাড়ির ভেতর বাঁশের সাঁকো ও কলার ভেলা তৈরি করে নিয়েছে। গত দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে কেশবপুরের ১১টি ইউনিয়নের পাশাপাশি পৌর এলাকায় পানি বেড়ে গেছে। এতে মানুষের ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।</p> <p> </p>