<p>ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে ‘মিথ্যাচার’ করায় মো. সাহাবুদ্দিন আর রাষ্ট্রপতির পদে থাকতে পারেন না বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। </p> <p>শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীতে এক সমাবেশে নাগরিক কমিটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, বঙ্গভবনে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন সাহাবুদ্দিন। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে তাঁকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারণ করতে হবে।</p> <p>‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে’ রাজধানীর লালবাগের হাজী আব্দুল আলীম ঈদগাহ মাঠে এ সমাবেশ করে জাতীয় নাগরিক কমিটি। ‘ঢাকা রাইজিং’ শিরোনামে এটি তাদের তৃতীয় সমাবেশ। এতে দুই শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে ৬ অক্টোবর যাত্রাবাড়ী প্রথম এবং ১৮ অক্টোবর মেরুল বাড্ডায় দ্বিতীয় সমাবেশ করে তারা। রাজধানীর লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, চকবাজার, বংশাল ও কোতোয়ালি এলাকাকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ‘পাল্‌স পয়েন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি।</p> <p>দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য রাষ্ট্রপতি পাঁয়তারা করছেন বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির বিষয়ে ৫ আগস্ট দফারফা হয়ে গেছে। গণ-অভ্যুত্থানের দিনই সংবিধান অকার্যকর হয়ে গেছে। সাহাবুদ্দিন আর বঙ্গভবনে থাকতে পারবেন না। জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে এই রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করার দাবি জানান তিনি।</p> <p>এ ছাড়া নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপতির পদে থেকে যিনি ‘মহামিথ্যাচার’ করতে পারেন, তিনি কোনোভাবেই আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি থাকতে পারেন না। রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সাহাবুদ্দিনকে অপসারণের ব্যাপারে বিএনপি, জামায়াত, গণতন্ত্র মঞ্চ ও গণ-অধিকার পরিষদসহ সব রাজনৈতিক দলকে অতি দ্রুত এক হতে হবে। ঐকমত্য না থাকলে হাসিনার দোসরদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়তে হবে।</p> <p>শেখ হাসিনা চলে গেলেও সংকট এখনো কাটেনি বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মানজুর-আল-মতিন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে কয়েক শ চলে গেছে। বাকিরা তো রয়ে গেছে। তারা চাইছে, আগের পুরোনো ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে।</p> <p>গুম-খুনের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে সমাবেশে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আরেক সদস্য সানজিদা রহমান। তিনি বলেন, যুদ্ধ এখনো শেষ হয়ে যায়নি। দেশের কোথাও ‘আওয়ামী শক্তিকে’ মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না।</p> <p>পুরান ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা ফোন করে চাঁদাবাজদের হাত থেকে রক্ষা করার আকুতি জানাচ্ছেন বলে সমাবেশে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আবদুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল। তিনি বলেন, খুনিরা বিভিন্ন নামে আবার পুনর্বাসিত হচ্ছে। এদের রুখে দিতে হবে।</p> <p>যারাই লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তারাই স্বৈরাচার হয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আরেক সদস্য মশিউর রহমান। তিনি বলেন, যদি একটি সঠিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করা না যায়, তাহলে আগামী প্রজন্মের কাছে ভিলেন (খলনায়ক) হয়ে যেতে হবে।</p> <p>সমাবেশে ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়া হয়। এই সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সাইফ মোস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মো. নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।</p>