<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫টি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১০৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে প্রায় সাড়ে ৪৭ লাখ শিক্ষার্থী। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখভালের জন্য রয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান <strong>অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ।</strong> গত বুধবার কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন তাঁর নানা পরিকল্পনার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র বিশেষ প্রতিনিধি <strong>শরীফুল আলম সুমন</strong></span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left">কালের কণ্ঠ : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছিলেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেকটাই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল। এখন কী অবস্থা?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : উপাচার্যদের পদত্যাগের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে খুব ভালোভাবেই চেষ্টা করা হচ্ছিল, যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য জায়গার জন্য নির্বাচন করা এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা করা। উপাচার্য ছাড়া যেসব বিশ্ববিদ্যালয় চলছিল সেটা তো চলার মতো করে চলছিল না। ছাত্রদের ক্লাসে ফিরতে হবে, গবেষণা সঠিকভাবে করতে হবে। এগুলো সামনে রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় চেষ্টা করেছে এবং অলমোস্ট উপাচার্য নিয়োগ কমপ্লিট করেছে। আর কয়েকটা বাকি আছে। আমাদের কমিশনে এখনো তিনজন মেম্বার নিয়োগ হয়নি। তবে আমরা বুঝতে পেরেছিলাম, মন্ত্রণালয় আগে ভিসি নিয়োগের ব্যাপারটা দেখছে। ভিসি নিয়োগের পর এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালোভাবে চলা শুরু করেছে। </p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : প্রায় তিন মাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ছিল। এই ক্ষতি পোষাতে আপনারা কিভাবে কাজ করছেন?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : বাস্তবতা হচ্ছে, বিরাট একটা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন একটা দেশ সৃষ্টি হলো। এত সেক্রিফাইস, এত ছেলের জীবন গেল, এতজন পঙ্গুত্ব বরণ করল, এত পরিবারের ক্ষতি হলো। এই যে ব্যাপার ঘটল, এতে অবাক হতে হয়, ছেলেদের কত আত্মত্যাগ? তারা যেজন্য সেক্রিফাইস করল, সেটাকে কতটা সমর্থন দিয়ে আমরা তাদের জায়গায় পৌঁছতে পারি, সেটাই আসল ব্যাপার। ছাত্ররা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তাদের বেশির ভাগই তো বিসিএস পরীক্ষা দেবে না, তার পরও তারা ন্যায়টা বেছে নিল। তারাও এগিয়ে এলো। তাই আমি মনে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার যে ক্ষতি হচ্ছে, তা ছাত্ররাই পুষিয়ে দেবে। আর আমাদের শিক্ষকরা হচ্ছেন, শহীদ আবু সাঈদদের শিক্ষক, মুগ্ধদের শিক্ষক। তাঁদের অবস্থানটাও সেভাবেই থাকবে। যা কিছু ক্ষতি হয়েছে, সবাই মিলে এগিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো লার্নিং লস পোষাতে নিজেরা পরিকল্পনা করছে এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। আমাদের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য সব ধরনের সহযোগিতা থাকবে।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি শুরু হলেও তাতে ভোগান্তি রয়েছে। একক ভর্তির পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। কোন প্রক্রিয়ায় আগামী শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম চলবে?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা হচ্ছে, সেখানে যে সমস্যা হচ্ছে সেগুলো আমরা দূর করতে চাই। ওগুলো দূর করার জন্য আমরা সব ধরনের উদ্যোগ নেব। গুচ্ছের মূল উদ্দেশ্য ছিল, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমানো। সেটাই আমরা করতে চাই। তবে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্র্যে আমরা হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তাই শিক্ষক, ছাত্র, অভিভাবক সবার সঙ্গে আলোচনা করে যে সহযোগিতা করা দরকার তা আমরা করব।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তিন সেমিস্টারেই শিক্ষার্থী ভর্তি করতে চায়। এ ক্ষেত্রে আপনারা কী নির্দেশনা দেবেন?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তিন সেমিস্টার চাচ্ছে। অর্থাৎ সব বিষয় না, কোনো কোনো বিষয়ে তারা তিন সেমিস্টার করার কথা বলেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনও আমাদের কাছে এসেছিল। আমরা সবাই মিলে বসে যেটা সঠিক হয়, সেটা করব।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে চাই।</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ব্যাপারে যেখানে ঝামেলা আছে, সেখানে যেটা উচিত সেটাই হবে। যেটা ন্যায্য সেটা হবে।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : উচ্চশিক্ষার মান নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। বিশেষ করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার মান কিভাবে উন্নয়ন করা সম্ভব?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : এখন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে সবাই এগিয়ে যাচ্ছে। ছাত্ররাও চাচ্ছে মেধার মধ্য দিয়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে। ছাত্ররা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে টিকে থাকতে চায়। এখন যেসব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ভালো করছে, তারাই টিকে থাকবে। ছাত্রদের এখন অনেক চোখ-কান খোলা। তারা এমন জায়গায় যাবে না, যেটা নামে কলেজ, কাজে না। ইউনিভার্সিটির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : ইউজিসিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের জন্য অনেক ফাইল পড়ে আছে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস ও স্টাডি সেন্টারও অনুমোদন পেতে চায়। আপনারা কী করবেন?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : অলরেডি তো অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেগুলো সঠিকভাবে চালানোই আমাদের প্রথম চেষ্টা থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গায় চলতে পারে। নতুন যারা আবেদন করছে, এ ব্যাপারে আমরা অনেক কেয়ারফুল। নতুন অনুমোদনের ব্যাপারে যারা শতভাগ শর্ত পূরণ করতে পারে, তাদেরটা আমরা দেখব। আমাদের মূল কনসার্ন এরই মধ্যে স্থাপিত বিশ্ববিদ্যালয়।</p> <p>এখন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ক্যাম্পাস বা স্টাডি সেন্টারের ব্যাপারে দেখতে হবে, এতে ছাত্ররা কতটুকু লাভবান হবে। নাকি বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কমার্শিয়াল ব্যাপারটা কাজ করবে, এটাই বিবেচ্য বিষয়।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : ইউজিসির যে কাঠামো-জনবল আছে তা দিয়ে কি এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় দেখভাল করা সম্ভব?</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : ইউজিসির যে কাঠামো, তাদের সবাই যদি সততার সঙ্গে কাজ করতে পারে, ছাত্রদের প্রত্যাশা যদি পূরণ করতে পারে, তাহলে আমাদের যে জনবল আছে তা দিয়েই আমরা সুন্দরভাবে কাজ করতে পারব। কমিশন যাতে সম্মানের জায়গায় নিজেকে নিয়ে আসতে পারে সেটাই বিবেচ্য বিষয়। ইউজিসিতে যে দুজন সদস্য আছেন, তাঁরা কিছু করতে চান। আমিও যে বয়সে এসেছি, আমার তিলে তিলে গড়ে ওঠা যে অবস্থান, সেটা ক্ষুণ্ন হোক সেটা আমি কোনো দিন চাইব না।</p> <p> </p> <p>কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।</p> <p>ড. এস এম এ ফায়েজ : আপনাকেও ধন্যবাদ।</p> <p> </p> <p> </p>