<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৬ বছরের কিশোর মো. সিয়াম। এখনো ছেলেবেলার দুষ্টমি যায়নি। এ বয়সে বিদ্যালয়ের সহপাঠী ও বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাঠে থাকার কথা। কিন্তু এ বয়সেই তাকে হাল ধরতে হয়েছে পুরো একটি পরিবারের। ছোটবেলা থেকেই চঞ্চল ছেলেটি সে নিজেও জানত না তার এ বয়সেই সংসারের খরচ জোগাতে বাবার ব্যবসার হাল ধরতে হবে। বলছিলাম ভোলা শহরের ছাতা মেরামতের কাজ করা ছাত্র আন্দোলনে নিহত মো. জসিম উদ্দিনের একমাত্র ছেলে মো. সিয়ামের কথা। গত ৪ আগস্ট ভোলার নতুন বাজারে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সঙ্গে সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন জসিম। নিহত জসিম ভোলা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর নবীপুর এলাকার মৃত আবু কালাম খলিফার ছেলে। তাঁর এক ছেলে দুই মেয়ে। জসিম উদ্দিন ভোলা শহরের নতুন বাজার ফুটপাতে ছাতা মেরামতের কাজ করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতেন। বাবা মারা যাওয়ায় ওই দোকানে কাজ করে সংসারের খরচ জোগায় একমাত্র ছেলে সিয়াম।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত রবিবার দুপুরের দিকে ভোলার নতুন বাজারে নিহত জসিম উদ্দিনের দোকানে গিয়ে দেখা যায় ছেলে সিয়াম ছাতা মেরামত করছে। এ সময় তার সঙ্গে কথা বললে সে জানায়, তাদের সংসার চালানোর মতো আর কোনো উপায় নেই। তাই পড়ালেখার ফাঁকে বাবার রেখে যাওয়া দোকানে বসে কাজ করে সে। এ দিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই মা ও দুই বোন নিয়ে চলে তাদের সংসার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাবার কথা জিজ্ঞেস করতেই চোখে পানি চলে আসে সিয়ামের। সিয়াম বলে, বাবার দোকান থাকা সত্ত্বেও সে কখনো এ কাজ করেননি। বাবা মারা যাওয়ায় সংসারের খরচ জোগাতে এখন এ কাজ করছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, গত ৪ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে শহরের নতুন বাজারে মুক্তিযোদ্ধা অফিস, পৌরভবন, ডিসি অফিসে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় জসিম দোকান বন্ধ করে নতুন বাজার জিন্না মিয়ার মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় একটি গুলি এসে জসিম উদ্দিনের মাথায় লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে খলিফাপট্টি মসজিদের কাছে নিয়ে গেলে তিনি মারা যান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই মো. সবুজ জানান, তাঁরা দুপুরের পর খবর পেয়ে শহরের খলিফাপট্টি মসজিদের সামনে থেকে লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সবুজ বলেন, তাঁর ভাই ছাতা মেরামত করে সংসার চালাতেন। তাঁর স্ত্রী ও তিনটি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে।  জসিম উদ্দিন মারা যাওয়ায় তাঁর সংসার চলে অনেক কষ্টে। তাই তিনি ভাই জসিম উদ্দিনের হত্যার বিচারের পাশাপাশি তাঁর পরিবার যাতে ভালোভাবে চলতে পারে তার জন্য কিছু করতে সরকারের কাছে দাবি করেন।</span></span></span></span></span></p>