<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ডলারের দরবৃদ্ধিকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ব্যয় বারবার বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। বাড়ছে কাজের মেয়াদও। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এতে প্রকল্পটির ব্যয় এক হাজার ৫৫৫ কোটি ১১ লাখ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির চুক্তিতে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কিছুই করতে পারছে না। নাম প্রকাশ না করে কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, চুক্তি মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব বিশ্লেষণ ও যাচাই করতে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) একটি টিম গঠন করে দিতে পারেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির মূল ব্যয় ছিল তিন হাজার ৯৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় ৫৩৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের ব্যয় চার হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা করা হয়। বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় এক হাজার ৫৫৫ কোটি ১১ লাখ টাকা বা মোট ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। এতে দ্বিতীয় সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াবে ছয় হাজার ৭১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর দুই দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। এখন আবার নতুন করে দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি হচ্ছে পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যেসব খাতে বাড়ছে ব্যয় : প্রকল্পের আওতায় জেটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদার সিআরসিসি হারবার-সিসিইসিসির (জেভি) সঙ্গে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এতে চুক্তিমূল্য ছিল ৯১৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এ সময় করোনা মহামারি ও লকডাউন ছিল। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দ্রব্যমূল্য বাড়ে। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ১৮ মাসের বেশি হলে নিয়ম অনুযায়ী চুক্তিতে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের বিধান রাখা হয়। সব মিলিয়ে ঠিকাদারের মোট চুক্তিমূল্য দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ২৩৩ কোটি ৫৯ লাখ ২৩ হাজার টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ছাড়া ইয়ার্ড নির্মাণ অংশের ২০২০ সালের ২৯ জুন চুক্তি করা হয় সিএসআইসি ইন্টারন্যাশনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানির সঙ্গে। চুক্তিমূল্য ছিল এক হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এখানেও চুক্তির মেয়াদ ১৮ মাসের বেশি হলে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের সুযোগ রাখা হয়। দ্রব্যমূল্য বাড়ায় ঠিকাদার প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ বিল দিয়েছে ১৭১ কোটি আট লাখ পাঁচ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ডলারের দাম বাড়ায় ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করতে অতিরিক্ত ৩৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা প্রয়োজন। এই দুটি মিলিয়ে ২০৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ছে। সব মিলিয়ে ঠিকাদারের মোট চুক্তিমূল্য দাঁড়াবে এক হাজার ২৪২ কোটি ৯৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় আন্ধারমানিক নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণকাজ ডিপোজিটরি ওয়ার্ক হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মাধ্যমে করার পরিকল্পনা ছিল। সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুই বছরের বেশি সময়েও ঠিকাদার নিয়োগে ব্যর্থ হয়। পরবর্তী সময়ে দরপত্র আহ্বান করলে কাজটি পায় সিআরবিজি-সিসিইসিসি (জেভি)। মোট চুক্তিমূল্য ছিল ৯৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। চুক্তি মেয়াদ ১৮ মাসের বেশি হলে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্টের বিধান রাখা হয়। ফলে এখন প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ বাড়বে ৯৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকা এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধির জন্য ১১৯ কোটি ৮৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। দুটি মিলিয়ে মোট বাড়বে ২১৪ কোটি ২০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের চুক্তিমূল্য ও নতুন অতিরিক্ত অর্থ মিলিয়ে ঠিকাদারের মোট চুক্তিমূল্য হবে এক হজার ১৫৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইকুইপমেন্ট কেনাকাটায় দরপত্রদাতাদের দর প্রাক্কলিত মূল্যের চেয়ে বেশি হয়। সেই সঙ্গে মামলাজনিত কারণে দরপত্রপ্রক্রিয়া শেষ করা যায়নি। পরে করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য অনেক বেড়ে যায়। এ ছাড়া ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প প্রস্তাবে যে দাম ধরা হয়েছিল তা বেড়ে এই খাতে ব্যয় দাঁড়াবে ৫৪৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩১ হাজার ১৪৭ টাকা। পাশাপাশি পরামর্শকের মেয়াদ বৃদ্ধির কারণে ব্যয় বাড়বে ৩০ কোটি ৭৯ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ার কারণে বেশ কিছু খাতে ব্যয় বাড়বে। সব মিলিয়ে ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে।</span></span></span></span></span></p>