<p>দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ‘গণরুম’ ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অন্যতম প্রধান সমস্যা। গণরুমে গাদাগাদি করে চারজনের কক্ষে ২০ থেকে ২৫ জন, দুজনের কক্ষে আট থেকে ১২ জন করে থাকতে হতো। আবার কয়েকটি হলে ছিল বড় গণরুম, সেখানে ৫০ জনেরও বেশি একসঙ্গে গাদাগাদি করে থাকতে হতো। বিগত বছরগুলোতে এই সমস্যা কাঁধে নিয়েই প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এবার ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা হলের গণরুম নয়, নিজ নামে বরাদ্দকৃত সিটে উঠে নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু করেছেন।</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা যায়, জাবিতে হলের সংখ্যা ২১টি। ছাত্রদের ১১টি ও ছাত্রীদের ১০টি। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বৈধ শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১২ হাজার। নবনির্মিত বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলে শিক্ষার্থীদের আসন বরাদ্দ দেওয়ায় সর্বমোট আবাসন সক্ষমতা আছে ১৪ হাজার ১০০ জনের। প্রতিবছর প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর আগের দিন হলে তোলা হয় নবীন শিক্ষার্থীদের। এরই ধারাবাহিতকায় গত শনিবার প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের তাঁদের সিটে ওঠানো হয়। দুজনের রুমে দুজন ও চারজনের রুমে চারজনই উঠেছেন।</p> <p>অর্থনীতি বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমার রুমটি হচ্ছে চারজনের রুম। চারজনের রুমে চারজন শিক্ষার্থীই থাকছি।</p> <p>গণরুম ছাত্রলীগের তৈরি কৃত্রিম সংকট : আগে ছেলেদের হলগুলোতে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে চারজনের কক্ষে একজন বা দুজন থাকতেন। সিট বণ্টনের দায়িত্বও ছিল তাঁদের হাতে এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষাজীবন শেষ হওয়া শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থানের ফলে সৃষ্টি হতো কৃত্রিম সংকট। গত ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ছাড়ার পর এ সংকট দূর হয়েছে। অন্যদিকে মেয়েদের হলে বিগত বছরগুলোতে সি সংকটের কারণে তৈরি হয়েছিল গণরুম। মেয়েদের নতুন হল তৈরি হওয়ায় এ বছর থেকে সেই সংকটও দূর হয়েছে।</p> <p>র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসন : ‘র‌্যাগিং’ নামক ভয়ংকর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো অনেককেই। তবে এবার প্রশাসন কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, ‘র‌্যাগিং একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি সাময়িক হতে চিরতরে বহিষ্কার।’</p>