<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাড়ির উঠানে পানি। উঁচু করে কাঁচা ঘর বানিয়ে গবাদি পশুগুলো রাখা। সেখানেও পানি ছুঁইছুঁই। রাস্তা থেকে ঘরে ওঠার জন্য তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতেও ব্যবহৃত হয় সাঁকো। এমন অবর্ণনীয় দুর্ভোগের চিত্র খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের রমেন মণ্ডলের বাড়ির। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রমেন মণ্ডলের মতো শাহপুরের দেড়লী, কৃষ্ণনগর, বারানসি, বটবেড়া, মোজারঘোটা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, সারাভিটা, শলুয়া প্রভৃতি এলাকা বিল ডাকাতিয়া অঞ্চলবেষ্টিত। ওই এলাকার ১২ কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশেই মিলবে এমন অসংখ্য বাড়ি, যা পানির মধ্যে নিমজ্জিত। এ চিত্র দেড় মাস ধরে চলছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষ্ণনগরের তারক চন্দ্র মণ্ডল বললেন, ওই এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষিনির্ভর। লাউ, উচ্ছে, ঢেঁড়স, বেগুন প্রভৃতি সবজি লাগিয়ে জীবন চলে অনেকের। কিন্তু পানির কারণে সব পচে গেছে। অনেকেই এখন অভুক্ত থাকছেন অর্থাভাবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে পরিদর্শনকালে সেখানকার বাসিন্দারা বললেন, গত বছর থেকেই তাঁরা পানিবন্দি। আগেও পানি জমত। মাস তিনেক পরই আবার শুকিয়ে যেত। কিন্তু এবার আর পানি কমছে না, বরং দিনের পর দিন প্লাবিত এলাকা সম্প্রসারণ হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল রবিবার পর্যন্ত খুলনায় মোট ৬৬০ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এবারের অতিবৃষ্টি ছাড়াও উত্তরের পানিপ্রবাহ কম থাকায় স্থানীয় নদীগুলো</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">, বিশেষ করে কপোতাক্ষ, হামকুড়া, ভদ্রা, শ্রী হরি প্রভৃতিতে পলি জমে নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় স্থলভাগে পানি বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সাহা। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর একটি সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। অন্যগুলো আমাদের হাতে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আমাদের হাতে যেগুলো সেগুলোর সমাধানে চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে ডুমুরিয়া এলাকায় ১৭টি পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের পাশাপাশি শৌলমারী নদীর নিচু এলাকায় খনন কার্যক্রম চলছে। বিল ডাকাতিয়ার পানি তিনটি স্থান থেকে অপসারণ করা হচ্ছে। তিনি আশা করেন, আগামী বোরো মৌসুমের আগে পানি নিষ্কাশন করে কৃষিজমিগুলো উপযোগী করা সম্ভব হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতার ফলে শুধু খুলনার ডুমুরিয়া এলাকায়ই আট হাজার হেক্টর জমি প্লাবিত হয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হামকুড়া নদী খনন বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকুঞ্জি বলেন, ভরাট নদী দখলমুক্ত করে খনন ও জোয়ার-ভাটা করে নদী ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ সম্ভব। তা না হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অনেক এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে উত্তরণ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার ছয়টি উপজেলার প্লাবিত ২০৭টি গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বাস্তব চিত্র। মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে মানবিক সাহায্য নিয়েও এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয় ওই জরিপের উপসংহারে। জরিপটি ১৯ অক্টোবর শেষ হলেও এখনো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলেও সংস্থাটির অ্যাডভোকেসি অফিসার সেলিম আকতার স্বপন জানিয়েছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুলনার বিভাগীয় কমিশনার হেলাল মাহমুদ শরীফ জানান, বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, নিজ নিজ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করবেন।</span></span></span></span></p> <p> </p>