<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার পরিবর্তন হলেও জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর মজুদ সংকট কাটেনি। এক বছর ধরে এই সংকট চলছে। বর্তমানে দম্পতিদের প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সুরক্ষাসামগ্রী প্রায় শূন্যের কোটায় পৌঁছেছে। কনডম ও খাবার বড়ি সময়মতো দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ ১১টি দাতা সংস্থার বিনিয়োগে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মসূচি হুমকির মুখে পড়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় গত বছর থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর তীব্র সংকট চলছে। কোনো কোনো উপজেলা ও মাঠ পর্যায়ে মজুদ প্রায় শেষের দিকে। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, এই মুহূর্তে দেশের ১০৫টি উপজেলায় কনডম ও ৪৪৫টি উপজেলায় খাওয়ার বড়ি নেই। এই দুটি সামগ্রী দেশের জন্ম নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রেখে এসেছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জেলা ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সূত্রে জানা গেছে, ১০ শতাংশ দম্পতি প্রয়োজনের সময় পাচ্ছেন না জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী। মাঠ পর্যায়ে এসব সামগ্রীর অভাবে অপূর্ণ চাহিদার হার আরো বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক সময়ে হাতের কাছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী না থাকায় বাড়বে অপরিকল্পিত গর্ভধারণ। ফলে বেড়ে যেতে পারে মাতৃমৃত্যু। আর এ ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের মধ্যে অপূর্ণ চাহিদার হার ও মাতৃমৃত্যু শূন্যে নামিয়ে আনার যে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি আছে, তা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা গেছে, মাঠকর্মীরা সাধারণত পাঁচ ধরনের জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী দম্পতিদের মাঝে বিলি করে থাকেন। এগুলো হলো কনডম, খাওয়ার বড়ি, আইইউডি, ইনজেক্টেবল ও ইমপ্লান্ট। কনডম ছাড়া বাকি সামগ্রীগুলো নারীদের ব্যবহারের জন্য। সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কনডম ও খাওয়ার বড়ি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের দেওয়া হিসাবে, প্রতি মাসে মাঠকর্মীরা ৫০ লাখ ৩৫ হাজার কনডম ও ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার খাওয়ার বড়ি দম্পতিদের কাছে পৌঁছে দেন। সার্বিকভাবে সক্ষম দম্পতিরা এখন বেসরকারি খাত থেকেই জন্ম নিয়ন্ত্রণের সামগ্রী বেশি সংগ্রহ করেন। সরকারের কাছ থেকে সামগ্রী নেয় মূলত সমাজের দরিদ্র শ্রেণি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ৪৯৩টি উপজেলায় জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর তথ্য প্রতিদিন হালনাগাদ করা হয়। এতে দেখা গেছে, ১০৫টি উপজেলায় কনডমের মজুদ শূন্য। আর মজুদ শূন্য হতে যাচ্ছে ১৯১টি উপজেলায়। ৮৩টি উপজেলায় মজুদ যা থাকার কথা তেমনটা নেই। কনডমের সন্তোষজনক মজুদ আছে ৭২টি উপজেলায় এবং ৪২টি উপজেলায় অতিরিক্ত মজুদ আছে। খাওয়ার বড়ির পরিস্থিতি আরো নাজুক। ৪৪৫টি উপজেলায় মাঠকর্মীদের কাছে নারীদের হাতে দেওয়ার মতো বড়ি নেই। ৪০টি উপজেলার বড়ি শেষ হয়ে যাবে শিগগিরই। প্রয়োজনের চেয়ে কম বড়ি মজুদ আছে দুটি উপজেলায়। সন্তোষজনক পরিমাণ বড়ি আছে ছয়টি উপজেলায়। অতিরিক্ত বড়ি কোনো উপজেলায় নেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সামগ্রী হিসেবে তৃতীয় স্থানে আছে ইনজেক্টেবল। মাসে ছয় লাখ ৮০ হাজারের বেশি ইনজেক্টেবল সরকারি পর্যায়ে ব্যবহৃত হয়। সরকারি ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে, ২৫টি উপজেলায় এই সামগ্রী একটিও নেই, ১৫৫টি উপজেলায় ইনজেক্টেবলের মজুদ খুব শিগগির শেষ হয়ে যাবে এবং ১৭২টি উপজেলায় প্রয়োজনের চেয়ে কম মজুদ আছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রাজস্ব বাজেট থেকে খরচ করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। তবে গত বছর মন্ত্রণালয় সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যতবারই অধিদপ্তর উদ্যোগ নেয়, ততবারই তৎকালীন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ সচিবের অবহেলায় থেমে যায় প্রক্রিয়া। ফলে প্রয়োজনের সময় রাজস্ব বাজেট ব্যবহার করতে পারেনি অধিদপ্তর। অন্যদিকে উন্নয়ন বাজেট থেকে কিনতে হলে, প্রক্রিয়া শুরু করে শেষ করতে লেগে যায় কয়েক মাস।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উন্নয়ন বাজেট থেকে জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রী কেনার জন্য গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহবান করা হয়। ৭ মার্চ দরপত্র মূল্যায়ন করা হয়। যোগ্য ও সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে দরপত্র বাতিল করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একাধিক স্থানে অভিযোগ দেন ও হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই জট এখনো খোলেনি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহিল আজম সাংবাদিকদের বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা সংকট দূর করে যাননি। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি সংকট কাটানোর।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>