<p style="text-align:justify">দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে গত ১৫ বছরে যেসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে তার মধ্যে ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনৈতিক ট্যাগে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ইসলামী ছাত্রশিবির ও ২ শতাংশ শিক্ষার্থী ছাত্রদলের রাজনীতি করার কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। </p> <p style="text-align:justify">যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ’ বাংলাদেশের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য উঠে আসে। আজ সোমবার (৭ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে অনলাইন মাধ্যমে একটি ওয়েবিনারে তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। নির্যাতিত হওয়া ৫০ জন ভিক্টিমের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ এ প্রতিবেদন তৈরি করেন।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ছাত্রলীগের ছুরিকাঘাতে ছাত্র আন্দোলনের সদস্য জুনায়েদ নিহত" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728317147-d6d55a82f7452d28747769bddd786a39.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ছাত্রলীগের ছুরিকাঘাতে ছাত্র আন্দোলনের সদস্য জুনায়েদ নিহত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/country-news/2024/10/07/1432834" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংগঠনটির সভাপতি ড. শিব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ শতাংশ ও বুয়েটে ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০১৭ সালে সবচেয়ে বেশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া সবচেয়ে বেশি নির্যাতনে এ বছরের আগস্ট মাসেই ঘটেছে।’</p> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘এ নির্যাতন বন্ধ করতে হলে সরকারি কমিশন গঠন করে তদন্ত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা তদন্ত কমিটি ও প্রাতিষ্ঠানিক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ভিক্টিম সাপোর্ট সেল গঠন, প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির জন্য বিধিমালা তৈরি করা, ছাত্ররাজনীতির সংস্কার, হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি মুক্ত করা, ইনক্লুসিভ ক্যাম্পাস সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ, আবাসনের সংকটের সমাধান ও ৭ অক্টোবর ক্যাম্পাস নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করতে হবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম সাময়িক বরখাস্ত" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728297928-d792b8b490aef953d009f0fbd3211c80.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>সেই ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম সাময়িক বরখাস্ত</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/07/1432756" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">ওয়েবিনারে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসগুলোতে নির্যাতনের ঘটনা গত ১৫ বছর ধরে অব্যাহত ছিল। আবরার ফাহাদের নির্যাতনের ঘটনা সারা বাংলাদেশের মানুষকে কাঁপিয়ে দেয়। সবাই এর প্রতিবাদ করেছে। গত ৫ আগস্টের পর আমরা যে আশা দেখছি সে জায়গা থেকে অনেক আশা পূরণ হয়েছে। একই সঙ্গে আবরার ফাহাদসহ যত নির্যাতন হয়েছে সেগুলোরও বিচার করতে হবে। আর যাতে আগামী ৫-১০ কিংবা ১৫ বছর পর আর কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">অধিকারের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, ‘৫ বছর আগে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড সকলকে নাড়া দিয়েছিল। তৎকালীন সরকারের তাবেদার শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীরা এ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি। আবরার ফাহাদ তথাকথিত বন্ধু রাষ্ট্র নিয়ে কথা বলেছিলেন। আবরার ফাহাদ যে কথাগুলো বলে গিয়েছিলেন সেটি আমাদের ভাবতে হবে।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ম্যাজিস্ট্রেট তাপসীকে বরখাস্তে রনির ক্ষোভ, ‘আমরা কিভাবে অগ্রসর হবো’" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728312153-4cdf551601d6c7f9abbd061ebd247d38.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ম্যাজিস্ট্রেট তাপসীকে বরখাস্তে রনির ক্ষোভ, ‘আমরা কিভাবে অগ্রসর হবো’</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/07/1432816" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘রুলিং পার্টির স্বেচ্ছারিতার জায়গায় পরিণত হয়েছিল কাম্পাসগুলো। শিক্ষকরা দলদাসে পরিণত হয়েছে। তাদেরকেও এর দায় নিতে হবে। এখানে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের একটা আলোচনা চলছে। আমি মনে করি, দলীয় লেজুড়ভিত্তি বাদ দিয়ে ছাত্ররাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর পাশাপাশি ক্যাম্পাসগুলোকে নিরাপদ করে সব শিক্ষার্থীর জন্য সুন্দর ক্যাম্পাস তৈরি করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, ‘ছাত্র নির্যাতনের ঘটনা হলো মর্মান্তিক ঘটনা। এর ইতিহাস অনেক বড়। স্বাধীনতার আগে ও পড়ে হয়েছে। এটার সঙ্গে মূল রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ৮০ ও ৯০ দশকে ছিল ছাত্র সংঘর্ষ। আর গত ১৫ বছরে ধরে যা হয়েছে তার চরিত্রে ভিন্নতা রয়েছে। গত ১৫ বছরের ঘটনা ছাত্র সংঘর্ষ নয়। গত ১৫ বছরে হয়েছে ছাত্র নিপীড়ন ও নির্যাতন। গত ১৫ বছরে আমরা দেখেছি, উৎসব করে বিশেষ কক্ষে নির্যাতনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এখানে ছাত্রসংগঠন ও সরকার মিলেমিশে নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। যারা মূল ভিত্তিতে ছিল বিচারহীনতা।’</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="একনেকে ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার চার প্রকল্পের অনুমোদন" height="66" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/2024/10/07/1728313582-da1e6dbeac98c3fd05cb31634ee5da28.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>একনেকে ২৪ হাজার ৪১২ কোটি টাকার চার প্রকল্পের অনুমোদন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/national/2024/10/07/1432822" target="_blank"> </a></div> </div> <p style="text-align:justify">তিনি আরো বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে একটি বড় অংশ চুপ ছিল। খুব অল্পসংখ্যক মানুষ কথা বলেছেন। এটা ছিলো পুরোপুরি একটা অপশাসন ও ফ্যাসিস্ট কাঠামো। পুরো দেশসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বজায় ছিল এই ফ্যাসিবাদ। যার ফলে বেশির ভাগ মানুষকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। এই রকম অন্যায়-অপশাসন এর আগে কখনো হয়নি। গত ১৫ বছর ধরে নির্যাতনের মহামারি ঘটানো হয়েছিল। এগুলো আটকে ফেলা সম্ভব। আমরা ইতিমধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছি। সুশাসন ও ন্যায়বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।’</p> <p style="text-align:justify">অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চোধুরী, আইন ও শালিস কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরিন আমিন ভুঁইয়া ও মানবাধিকার আইনজীবী ব্যারিস্টার শাইখ মাহদি।</p>