<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহাকাশে কি রিয়েল এস্টেট বা আবাসন ব্যবসা সম্ভব? বিজ্ঞান বলছে, এটা অসম্ভব অথবা অবাস্তব কিছু নয়। এ জন্য লাগবে দুটি জিনিস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রযুক্তির বিকাশ আর যুগোপযোগী মহাকাশ আইন। এই মুহূর্তে শর্ত দুটির বাস্তবায়ন কঠিন। সময়ের ব্যবধানে ওটা জলভাতও হয়ে যেতে পারে। তবে মহাকাশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা নিয়ে কেউ কেউ ঠিকই ভাবছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মার্কিন নাগরিক ডেনিস এম হোপের কথাই ভাবুন। দেখে মনে হবে না তিনি কেউকেটা টাইপের কিছু। অথচ তিনিই গ্যালাকটিক গভর্নমেন্ট বা ছায়াপথ সরকারের প্রথম রাষ্ট্রপতি। চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ, ভেনাস, বুধ এমনকি জুপিটারের চাঁদ আইওর মালিক তিনি। ইচ্ছা করলেই তিনি চাঁদ অথবা মঙ্গলের শত শত একর জমি বিক্রি করতে পারেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৯৬৮ সালে সম্পাদিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আউটার স্পেস ট্রিটি</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তে বলা হয়েছে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহাজাগতিক বস্তুর ওপর কোনো জাতির সার্বভৌমত্ব অথবা নিয়ন্ত্রণ স্বীকৃত হবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এ আইন দেখিয়ে মিস্টার হোপ দাবি করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ধারাটি পরিষ্কারভাবে এটাই বলছে, মহাজাগতিক ভূমি এখনো মালিকানাহীন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি জাতিসংঘের কাছে ২০১৩ সালে এক চিঠিতে চাঁদের বুকে তাঁর গ্রুপের (লুনার অ্যাম্বাসি করপোরেশন) মালিকানা স্বীকার করে নিতে চিঠি দেন। কিন্তু জাতিসংঘ এই চিঠির জবাব দেওয়ার গরজ বোধ করেনি। কিন্তু হোপ থেমে থাকেননি। তিনি এরই মধ্যে প্রতি একর ১৯.৯৯ মার্কিন ডলার হারে চাঁদের ৬১ কোটি ১০ লাখ একর (চাঁদের ৭.৫ শতাংশেরও বেশি) বিক্রি করে ফেলেছেন। বিশ্বের নানা দেশের ৪২ লাখ ৫০ হাজার ব্যক্তি চাঁদে জমি কিনেছেন। তাঁদের মাঝে রয়েছেন আড়াই শ সেলিব্রিটি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক তিন প্রেসিডেন্ট জর্জ সিনিয়র বুশ, জিমি কার্টার এবং রোনাল্ড রিগানও এ কাতারে রয়েছেন। জমি কেনার তালিকায় রয়েছে অনেক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানও। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমানে গ্যালাকটিক গভর্নমেন্ট বা ছায়াপথ সরকারের রয়েছে নিজস্ব মুদ্রা। এটার নাম </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডেল্টা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। রয়েছে নিজস্ব সংবিধান। তারা চাঁদের বুকে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ ও আড়াই কিলোমিটার উঁচু একটি নগরী স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা দেখতে হবে চার কোনাকার পিরামিডের মতো। ৭০ হাজার লোক সেখানে থাকতে পারবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকৃতপক্ষে মহাজাগতিক উপনিবেশ স্থাপন অথবা মহাজাগতিক বস্তুর ওপর মালিকানা দাবির বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। ২০০০ সালে গ্রিগেরি ডব্লিউ নেমিটেজ নামে বারমুডার এক নাগরিক </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এস্টারয়েড ৪৩৩ ইরোস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামের একটি ধূমকেতুর বেশির ভাগ জমির মালিকানা দাবি করে বসেন, যার আর্থিক মূল্যমান ৪৯২,১৮৭,৫০০,০০০,০০০,০০০  মার্কিন ডলার বলে উল্লেখ করেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পৃথিবীর প্রায় ২০০টি দেশের কোনোটিই পৃথিবীর বাইরের মালিকানার স্বীকৃতি দেয় না। কিন্তু যেভাবেই হোক তিনি বারমুডা থেকে জমির মালিকানা রেজিস্ট্রি করতে সক্ষম হন। ২০০১ সালে নাসা এই ধূমকেতুর বুকে একটি মহাকাশযান নামায়। এই ঘটনা শুনেই নেমিটেজ ওই অবতরণ স্থানটিকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পার্কিং এরিয়া</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পার্কিং এরিয়া নং-২৯</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> উল্লেখ করে নাসার কাছে ২০ ডলারের একটি পার্কিং টিকিট পাঠান। কিন্তু এখন পর্যন্ত নাসা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পার্কিং টিকিটের মূল্য দিতে রাজি হননি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা মহাজাগতিক বিভিন্ন সম্পত্তির মালিকানার দাবি করে আসছে। অথচ ১৯৬৭ সালে চালু হওয়া এক আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি বা সংস্থার পৃথিবীবহির্ভূত কোনো সম্পত্তির মালিকানা স্বীকৃত নয়। এ চুক্তিতে পৃথিবীবহির্ভূত যাবতীয় বস্তুকে সমগ্র মানবজাতির ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আসলে চাঁদ ও অন্যান্য মহাকাশীয় বস্তুর অংশবিশেষ এখনো সর্বসাধারণের কেনার জন্য নয়। কিন্তু মহাজাগতিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসা মোটেও থেমে নেই। কয়েকজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সাধারণত যুক্তি দেখান, যদিও ১৯৬৭ সালের পৃথিবীবহির্ভূত সম্পত্তি চুক্তি অনুযায়ী কোনো দেশ পৃথিবীবহির্ভূত কোনো বস্তুর মালিকানা দাবি করতে পারবে না; কিন্তু এই ধারাটি মোটেও ব্যক্তি পর্যায়ে প্রযোজ্য নয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে, এ চুক্তির অনুচ্ছেদ ৬-এ বলা হয়েছে, বেসরকারি যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে মহাকাশে যে কোনো কর্মকাণ্ড চালানোর জন্য নিজ নিজ দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমতি নিতে হবে। ফলে কার্যত রাষ্ট্রের ওপর আরোপিত বিধি-নিষেধ ব্যক্তিগত পর্যায়েও পড়বে। তা ছাড়া কোনো দেশের সরকারই এখন পর্যন্ত এসব সম্পত্তির মালিকানাসংবলিত </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দলিলপত্রের</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্বীকৃতি দেয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে ১৯৫৩ সালে চাঁদের মালিকানা দাবি করে প্রথম আলোচনায় আসেন চিলির আইনজীবী জেনারো গ্যাজার্ডো ভেরা। ১৯৯৬ সালে জার্মান নাগরিক মাইকেল জারগেনস দাবি করেন, ১৭৫৬ সালের ১৫ জুলাই থেকেই চাঁদ তাদের পারিবারিক সম্পত্তি। কারণ ওই দিনই তৎকালীন জার্মান শাসক ফ্রেডরিক দ্য গ্রেট জারগেনসের পূর্বপুরুষকে চাঁদ উপহার দেন। একই কায়দায় ১৯৯৭ সালে ২৪ জুলাই ইয়েমেনের আদম ইসমাইল, মুস্তাফা খলিল ও আবদুল্লাহ আল-উমারি মঙ্গলগ্রহের মালিকানা দাবি করে ওখানে হানা দেওয়ার জন্য নাসাকে অভিযুক্ত করেন। তাঁদের সাফ কথা হচ্ছে, উত্তরাধিকার সূত্রে তাঁরা তিন হাজার বছর আগেই পূর্বপুরুষের কাছ থেকে মঙ্গলের মালিক বনে বসে আছেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এবার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে কী বলছেন, তা শুনুন : অনুমতি থাকুক আর নাই থাকুক মহাকাশে, বিশেষ করে বিভিন্ন গ্রহে মানুষের বসবাসের উপযোগী অপরিমেয় জায়গা পড়ে আছে। অতএব মহাকাশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার ধারণা আপনি উড়িয়ে দিতে পারেন না।</span></span></span></span></p>