<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশ্বিনের বৃষ্টিতে গতকাল শনিবার ডুবে যায় ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়কসহ পাড়া-মহল্লার রাস্তা। বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় এক রকম যুদ্ধই করতে হয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষকে। অনেক সড়কে যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। আবার উবার-পাঠাওচালকদের সড়কের পাশে যাত্রীদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। নিজের রেইন কোট থাকলেও যাত্রীর জন্য না থাকায় ভাড়া মারতে পারছিলেন না মোটরসাইকেলচালকরা। কখনো থেমে থেমে, কখনো টানা বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েন রিকশাচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষজন। এই বৃষ্টি শুরু হয় গত শুক্রবার দিবাগত রাতে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল দুপুরে দেখা যায়, রাজধানীর কাকরাইল, নয়াপল্টন, শান্তিনগর, মোহাম্মদপুরের কিছু অংশ, মেরুল বাড্ডা, ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকা, ইসিবি, মালিবাগ, সায়েদাবাদ, আগারগাঁও থেকে জাহাঙ্গীর গেটের নতুন রাস্তায়, খামারবাড়ি থেকে ফার্মগেট, ফার্মগেট-তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকা, নিউ মার্কেট, শনির আখড়া, পুরান ঢাকা, বংশাল, নাজিমুদ্দিন রোড, ধানমণ্ডি, মিরপুর ১৩, হাতিরঝিলের কিছু অংশের সড়ক ও অলিগলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নয়াপল্টনে কথা হয় ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী আজহার শাহীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার বাসা মালিবাগ আবুল হোটেলের পেছনের গলিতে। অফিস পল্টন এলাকায়। বাসার সামনের গলির রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। গলিতে রিকশাও পাওয়া যায় না। অল্প একটু জায়গা বৃষ্টির জন্য আসতে এক ঘণ্টার বেশি লাগল।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাতা মাথায় নিয়ে কাজে বের হওয়া অনেক মানুষও বৃষ্টিতে ভিজে গেছেন। জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সড়কে দীর্ঘ যানজট লাগে। সব মিলিয়ে কাজের জন্য বাইরে বের হওয়া মানুষদের দিনভর ভোগান্তির শেষ ছিল না।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুপুর ১টার দিকে গুলশান-২ চত্বরের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলচালক বলেন, গুলশানের এই এলাকায় পানি জমেনি। কিন্তু একটানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে যাত্রীরা প্রাইভেট কার বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আবার যাঁরা আসছেন, তাঁরা পুরান ঢাকা, বিমানবন্দর, আবদুল্লাহপুরের যাত্রী হওয়াতে তাঁদের তাঁরা (মোটরসাইকেলচালক) নিতে পারছেন না। এসব এলাকায় অনেক পানি জমে আছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নয়াপল্টন থেকে কাকরাইল হয়ে শান্তিনগরের রাস্তায় প্রায় হাঁটু পানি জমে ছিল। যানবাহন চলাচলের কারণে ঢেউয়ের পানি ফুটপাতে ও দোকানে উঠে যাচ্ছিল। সাইফুল ইসলাম নামের এক দোকানি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাঁদের খুব প্রয়োজন এমন লোকই মনে হয় বাসা থেকে বের হচ্ছেন। কারণ বৃষ্টি তো লেগেই আছে। আমার নয়াপল্টনে প্রিন্টের দোকান রয়েছে। বৃষ্টি উপেক্ষা করে দোকানে এলেও খুব একটা কাজ নেই। আমার মতো সব দোকানিরই হয়তো একই অবস্থা।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাইদা পরিবহনের চালক লোকমান হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবুল হোটেল, রামপুরা বাজার পুরো এলাকাজুড়ে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে আছে বৃষ্টির কারণে। বিভিন্ন রাস্তায় জলাবদ্ধতা থাকায় গাড়ি খুব ধীরগতিতে চলছে। অনেক রাস্তায় হাঁটু পানি জমে গাড়ি বিকল হয়ে যাচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজধানীর লালমাটিয়া বি-ব্লকের ১৬ নম্বর বাড়ির সামনে কথা হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আতাহার আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আজিমপুর থেকে ধানমণ্ডি ২৭ হয়ে এই পর্যন্ত আসতে পানি আর যানজটের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৃষ্টি আর পানিতে বেশ কষ্টে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ। রিকশা-ভ্যানের চালক, হকারসহ জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে যাঁরা বেরিয়েছেন তাঁদের কাকভেজা হয়ে কাজ করতে হয়েছে। সকাল থেকে কয়েক দফা বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার পাশে জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন অনেকে। আবার বৃষ্টির পানিতে যেন ঠাণ্ডা না লাগে সে জন্য মাথায় ও গায়ে পলিথিন জড়িয়েও অনেককে জীবিকার সন্ধান করতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ রিকশাচালকই পলিথিন গায়ে বা মাথায় জড়িয়ে কোনো রকমে বৃষ্টি থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন। মোহাম্মদপুরে ইয়াসিন মিয়া নামের এক রিকশাচালক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৃষ্টির জন্যি ভাড়া মারতাম পারি না। রোদ বেশি হইলে তো কষ্ট হইলেও যাত্রী পাই। এহন তাও পাচ্ছি না। মালিককে জমা আর সংসার কেমনে চালামু আল্লাহ জানে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>