<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কয়েক বছর ধরেই দেশে মাছের উৎপাদন বাড়ছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে মাছের উৎপাদন ৪৯ লাখ টন হলেও সদ্যোবিদায়ি অর্থবছরে মাছের উৎপাদন অর্ধকোটি টন ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে চাষের মাছের উৎপাদন ছাড়িয়েছে ২৯ লাখ টন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাধীনতার উষালগ্নে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে চাষের মাছের উৎপাদন ছিল মাত্র ৬৮ হাজার টন। ফলে চাষের মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪০ গুণ। চাষের মাছের উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক নেতৃত্বে চলে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ২০২৪-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিঠা পানির মাছ আহরণে চীনকে টপকে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বদ্ধ জলাশয়ে চাষ করা মাছ উৎপাদনে পঞ্চম স্থানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। এ ছাড়া ইলিশ মাছ উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম, ক্রাস্টাশিয়ানস (কঠিন আবরণ বা খোলসযুক্ত সামুদ্রিক মাছ ও জলজ প্রাণী) উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম এবং সামুদ্রিক মাছ উৎপাদনে ১৪তম স্থান অধিকার করেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এফএওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালে চীনের মিঠা পানির মৎস্য উৎপাদন ছিল ১৪ লাখ ৬০ হাজার টন এবং বৈশ্বিক অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। অন্যদিকে বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার টন। বৈশ্বিক অবস্থান ছিল তৃতীয়। গত দুই বছরে বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ লাখ ২০ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে। পক্ষান্তরে চীনের উৎপাদন কমে ১১ লাখ ১৬ হাজার টনে নেমে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের মাছ উৎপাদনের এই অর্জনের মধ্যেই আজ শুরু হচ্ছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪। আজ থেকে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে মৎস্য সপ্তাহ। এ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। এ ছাড়া বিকেল ৪টায় হাতিরঝিলের পুলিশ কনভেনশন হল এলাকা থেকে বের করা হবে নৌ শোভাযাত্রা। আজ সকাল ১১টায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করবেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাকোয়াকালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত মাছের ৮০ শতাংশ আসে পুকুর থেকে। এর পাশাপাশি রয়েছে মৌসুমি জলাশয়, ধানক্ষেত, বাঁওড়, চিংড়িঘের ইত্যাদি। মৎস্য চাষের ভ্যালু-চেইনে হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন থেকে শুরু করে মাছের খুচরা বাজার পর্যন্ত প্রায় ২৫ ধরনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাছের ধারাবাহিক উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে মাথাপিছু মাছের দৈনিক গ্রহণ বৃদ্ধি পেয়ে ৬৮ গ্রামে উন্নীত হয়েছে। অ্যাকোয়াকালচারের মাধ্যমে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ পৃথিবীতে পঞ্চম স্থানে অবস্থান করলেও আন্তর্জাতিক রপ্তানিতে বাংলাদেশের কোনো অবস্থান নেই। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক রিপন বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাছের রপ্তানি বাজার প্রতিযোগিতামূলক, সেখানে প্রবেশ করতে গেলে মূল্য সংযোজনের বিকল্প নেই। বাংলাদেশে অ্যাকোয়াকালচার সেক্টরে উৎপাদিত মাছের (যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, কার্পজাতীয় মাছ) মূল্য সংযোজন নেই বললেই চলে। মৎস্য চাষে স্থানীয় ও আমদানি করা নিম্নমানের খাদ্যের ব্যবহার, নিয়ন্ত্রণহীন রাসায়নিক ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ, পুকুরের পানির গুণাগুণ রক্ষায় চাষিদের অসচেতনতা ইত্যাদি কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল স্রোতে আমরা প্রবেশ করতে পারছি না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মৎস্য খাতে বেশ কিছু সংস্কার প্রয়োজন জানিয়ে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মৎস্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নিরাপদ গুণগত মানের মৎস্য উৎপাদনের জন্য চাষিদের বিশেষ সার্টিফিকেশন স্কিমের আওতায় গুড অ্যাকোয়াকালচার প্র্যাকটিস সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এটি বাস্তবায়নের জন্য কারিগরি সহযোগিতা এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করতে হবে। মাছ চাষে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় উপকরণ হলো প্রোটিনসমৃদ্ধ ফিশ মিল, সয়াবিন মিল, খৈল, ইত্যাদি। প্রতিবছর জাতীয় বজেটে কৃষি ভর্তুকির বেশির ভাগই সার আমদানিতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু মৎস্য খাতকে কৃষির উপখাত হিসেবে বিবেচনা করলেও এতে কোনো ভর্তুকি থাকে না। মৎস্য চাষিদের জন্য ভর্তুকির ব্যবস্থা না করতে পারলে মৎস্য চাষ পিছিয়ে পড়বে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>