<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবছরের শুরুতে একটি শিক্ষাপঞ্জি তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী বছরজুড়ে চলে ক্লাস-পরীক্ষা। কিন্তু চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রম এবং প্রথমে বন্যার কারণে পিছিয়ে পড়ে শিক্ষা কার্যক্রম। এরপর আবার গত ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে বন্ধ হয়ে যায় ক্লাস ও পরীক্ষা। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ও অস্থিরতা বর্তমানে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে গত ১৭ জুলাই থেকে দেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে ওলটপালট হয়ে পড়েছে শিক্ষাসূচি, যার কারণে বড় ধরনের সেশনজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল বুধবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারছি না। এই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আর চলমান এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করা আমাদের মূল অগ্রাধিকার।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিক্ষাপঞ্জি অনুসারে, প্রতিবছরের ১ এপ্রিল থেকে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু করোনাকালীন প্রভাবে ২০২৪ সালের পরীক্ষা পিছিয়ে গত ৩০ জুন থেকে শুরু করা হয়। এরপর আবার বন্যার কারণে সিলেট বিভাগের পরীক্ষা ৮ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছিল। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সহিসংসতার কারণে সব বোর্ডের গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। আগামী ২৮ জুলাই থেকে আবারও পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও আদৌ তা সম্ভব কি না সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত নন শিক্ষা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাঁরা বলছেন, এইচএসসি পরীক্ষার সঙ্গে উচ্চশিক্ষার বড় ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। কারণ এইচএসসি উত্তীর্ণরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। আগে সাধারণত জুলাই মাসের মধ্যে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হতো। এরপর অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তিপ্রক্রিয়া শেষ করত। কিন্তু চলতি বছর যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে পরীক্ষা শেষ করে ফল প্রকাশ করতেই অক্টোবর-নভেম্বর মাস পর্যন্ত লেগে যাবে। ফলে সব প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাবে। এতে এই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র মতে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ষাণ্মাষিক মূল্যায়ন সাধারণত জুন বা জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে শেষ করা হয়। কিন্তু চলতি বছর নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় কিছুটা বাধার সৃষ্টি হয়। এরপর আবার গ্রীষ্মকালীন ছুটি ও ঈদুল আজহার কারণে ষাণ্মাসিক পরীক্ষা ৩ জুলাই থেকে শুরু হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল আগামী ৩ আগস্ট। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে গত ১৮ জুলাই থেকে সব পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারের সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রত্যয়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে নামেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জোরদার হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। গত ৭ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে শিক্ষার্থীরা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলা ব্লকেড</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কর্মসূচিতে নামেন। এরপর ১০ জুলাই থেকে শুরু হয় সকাল-সন্ধ্যা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলা ব্লকেড</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। ১৮ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কমপ্লিট শাটডাউনে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র ডাক দেন। এতে শিক্ষকদের কর্মবিরতির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এমন পরিস্থিতিতে গত ১৭ জুলাই থেকে সরকার সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশনা দেয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বর্ষের ক্লাসের পাশাপাশি সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১৮ জুলাই থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে ১১টি পরীক্ষা স্থগিত করতে হয়েছে। এর মধ্যে ডিগ্রি পার্ট-২ পরীক্ষা, অনার্স চতুর্থ বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা, অনার্স ও মাস্টার্সের প্রফেশনাল কোর্সের একাধিক পরীক্ষা অন্যতম। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অলরেডি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেশনজটের মধ্যে আছে। কারণ করোনার সময় যে জট সৃষ্টি হয়েছিল, তা এখনো ঠিক হয়নি। এরপর আবার শিক্ষকদের আন্দোলন ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে বড় ধরনের সেশনজট তৈরি হতে যাচ্ছে। এখন মূল কাজ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নানা পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Arial Unicode MS Bold"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সেশনজট না থাকায় বর্তমানে অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান। বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকলেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলে। আবার অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি ক্লাস নেওয়া সম্ভব না হলে অনলাইনে ক্লাস নেয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। বড় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় চলতি মাসে জুলাই-ডিসেম্বর সেমিস্টারের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। সেই পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে গত ১২ জুলাই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৫ থেকে ২৫ জুলাই ছিল একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময়সীমা। আর ৩০ জুলাই থেকে ক্লাস শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় গত ১৭ জুলাই থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমও স্থগিত রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অবশ্য গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত ভর্তির নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ৬ আগস্ট থেকে একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলমান পরিস্থিতিতে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সব পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে। এতে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা, অর্ধবার্ষিক বিভাগীয় পরীক্ষা (জুন-২০২৪), নন-ক্যাডারের স্ট্যান্ডার্ড অ্যাপটিচুড টেস্টসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা স্থগিত থাকছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>