<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাতবদলে চড়া হয় ডিমের দাম। তা ছাড়া ডিমের মূল্যবৃদ্ধির জন্য মুরগির বাচ্চা, খাদ্য ও ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়াকেও দায়ী করছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভালুকার ডাকাতিয়া, ধীতপুর, ভরাডোবা উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে কমবেশি লেয়ার ও ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে। পাশাপাশি ভালুকার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় মুরগির খামার রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভালুকা উপজেলা সদর থেকে উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আংগারগাড়া গ্রামের দূরত্ব ১৪ থেকে ১৫ কিলোমিটার। ওই গ্রামের প্রান্তিক খামারিদের খামার থেকে ভালুকায় খুচরা বিক্রেতার কাছে ডিম পৌঁছাতে একবার হাত বদল করতে হয়। আর এই হাতবদলে ডিমের দামও পাল্টে যায়। খামার পর্যায়ে যে ডিমের মূল্য কমবেশি ১২ টাকা, ভালুকা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় একই ডিমের মূল্য ১৫ টাকার কাছাকাছি। বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম খাওয়া তারা অনেকটা কমিয়ে দিয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> ভালুকা মেজর ভিটার ব্যবসায়ী নবী হোসেন জানান, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূল্যবৃদ্ধির কারণে ডিমের চাহিদা আগের তুলনায় কমেছে। কয়েক দিন আগে প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকায় বিক্রি হতো। বর্তমানে প্রতি হালি ডিম ৫২-৫৩ টাকা দরে কিনে ৫৫ টাকায় বিক্রি করছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গেলে উপজেলার আংগারগাড়া গ্রামের কৃষানি মিনা আক্তার জানান, তাঁদের একটি খামার রয়েছে। স্বামীর সঙ্গে তিনিও ওই খামারের দেখভাল করেন। তাদের খামারের তিনটি শেডের মাঝে বর্তমানে একটি শেডে এক হাজার লেয়ার মুরগি বড় হচ্ছে। ওই শেডের মুরগি থেকে প্রতিদিন ২৯-৩০ কেস (প্রতি কেসে ৩০টি) ডিম পাওয়া যায়। তিন দিন পর পর ঢাকা থেকে গাড়ি এসে ওই ডিম নিয়ে যায়। বর্তমানে তাঁরা প্রতিটি ডিম কমবেশি সাড়ে ১২ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তিনি জানান, ওই একটি শেডে এক হাজার ২০০ লেয়ার বাচ্চা তোলা হয়েছিল। ২৭ দিনের মধ্যে বাচ্চাগুলো ডিম দিতে শুরু করেছে। ডিম দেওয়া পর্যন্ত বাচ্চাগুলো বড় করতে খাবার, ওষুধসহ সব মিলিয়ে তাদের ১২ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে তাদের ওই খামারে প্রতিদিন দুই বস্তা খাবার দিতে হয়। প্রতি বস্তা খাবারের মূল্য দুই হাজার ৬৮০ টাকা। খাবারের মূল্য আগের তুলনায় বস্তাপ্রতি ৭০ টাকা কমেছে। তবে বেড়েছে মুরগির বাচ্চার দাম। এক মাস আগে যে বচ্চা ৫৪ টাকায় পাওয়া যেতে তা এখন কিনতে হচ্ছে ৯২ টাকা করে। তার দাবি, দাম প্রায় প্রতিদিনই ওঠানামা করে। ডিমের বাজার অনেক দিন যাবৎ ভালো যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারমূল্য ভালো। এ দাম অব্যাহত থাকলে চাষিরা লাভবান হবেন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলার আংগারগাড়া বাজারের সোমাইয়া পোল্ট্রি নামের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, তাঁর আওতায় বর্তমানে মুরগির ৪০-৪৫টি শেড রয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি ডিম উৎপাদন ব্যয় কমবেশি ১০.৫০ টাকা। আবার বিক্রি হচ্ছে ১১.৯৫ টাকা থেকে ১২ টাকার (কমবেশি)। তিনি দাবি করেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মুরগির খাবারের দাম বাড়ানো হয় বেশি। কিন্তু কমানো হয় কম। তা ছাড়া মুরগির প্রতিটি ওষুধের দাম ধাপে ধাপে বেড়েই চলছে। একসময় যে ওষুধ তারা ১২৫ টাকায় কিনতেন তার দাম বর্তমানে ২৪৫ টাকা। একই ধরনের কথা জানান উপজেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি খামারি ও ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, মুরগির বাচ্চা, খাদ্যমূল্য ও ওষুধের বর্তমান মূল্যের সঙ্গে বর্তমান ডিমের বাজার সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মজনু মিয়া নামের একজন খাদ্য ব্যবসায়ী জানান, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিন থেকে চার মাস আগে ব্র্যান্ডেড কম্পানির এক বস্তা খাদ্যের দাম ছিল দুই হাজার ৮২৫ টাকা। হঠাৎ ওই একই বস্তার খাদ্যের দাম বাড়িয়ে করা হয় দুই হাজার ৯৫০ টাকা। পরে বিষয়টি নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলে বর্তমানে ওই এক বস্তা খাদ্য দুই হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আংগারগাড়া বাজারের একাধিক খুচরা বিক্রেতা জানান, তাঁরা প্রতি হালি ডিম ৬০ টাকা করে বিক্রি করছেন। স্থানীয় একাধিক পাইকার জানান, দূরের খামারের ডিম সংগ্রহ করে তা পরিবহনে করে খুচরা বিক্রেতা পর্যায়ে পৌঁছানো বাবদ যথেষ্ট খরচ হয়। তা ছাড়া পরিবহনের সময় ডিম ভাঙার বিষয়টি হিসেবে থাকতে হয়। এরপর তারা সীমিত লাভ করেন।    </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভালুকা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ভালুকায় ছোট-বড় এক হাজার ৩২০টি লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। চলতি বছর ডিম উৎপাদনের টার্গেট প্রায় আট কোটি। গত তিন মাসে উৎপাদন হয়েছে প্রায় দুই কোটি ৪২ লাখ। গত বছর উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ১০ কোটি ডিম। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, সরকারিভাবে উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।</span></span></span></span></p>