<p>ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক ও সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের হাজার হাজার প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি আর লুটপাট হয়েছে সীমাহীন। প্রভাবশালীদের ইচ্ছায় অপ্রয়োজনীয়, কমিশননির্ভর এবং অপচয়ের এসব প্রকল্পের একটি বড় অংশই গেছে স্বার্থান্বেষী মহলের পেটে। সড়ক ও সেতু বিভাগের ওপর করা টিআইবির একটি গবেষণার তথ্য ধরলেও গড়ে এই অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতির অঙ্ক কমবেশি চার লাখ কোটি থেকে সাত লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।</p> <p>তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, অন্য সব প্রকল্পেও কমবেশি একই হারে অনিয়ম-দুর্নীতি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাঁরা মনে করেন, অপরিকল্পিত অবকাঠামোনির্ভর এসব প্রকল্প নেওয়াই হতো টাকা লুটপাটের জন্য।</p> <p>স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত বছর রাজধানীর মহাখালীর ক্যান্সার হাসপাতালে সেবা নিতে আসেন কুষ্টিয়ার রাজিয়া বেগম। চিকিৎসকরা তাঁকে কেমোথেরাপি ও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন।</p> <p>তবে টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারেননি ৫২ বছর বয়সী রাজিয়া। চলতি বছরের শুরুতে মারা যান তিনি। রাজিয়ার আত্মীয়রা জানান, ক্যান্সার হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকার পরও নার্সরা বাধ্য করেন বাইরে থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনতে। কোনো পরীক্ষা করাতে গেলে মেশিন নষ্টের অজুহাত দেখিয়ে বাইরে থেকে করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।</p> <p>নোয়াখালী থেকে ক্যান্সার ‘হাসপাতালে আসা রহিমা বেগম বলেন, হাসপাতালে ভর্তির জন্য তিন দিন ধরে অপেক্ষা করেও সিট পাচ্ছি না। রোগ শনাক্ত হতেই তিন লাখ টাকা শেষ। জমিজমাও সব বিক্রি করে নিঃশেষ।’</p> <p>বিআইডিএসের গবেষণা মতে, বাংলাদেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত একজন রোগীর চিকিৎসায় গড়ে পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪০ টাকা পকেট থেকে খরচ করতে হয়।</p> <p>জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে চিকিৎসা সক্ষমতা না থাকাই ক্যান্সার রোগীদের এমন দুর্ভোগের মূল কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।</p> <p>তাঁরা বলছেন, ব্যয়বহুল এই রোগের চিকিৎসায় দেশে সরকারিভাবে ২২টি চিকিৎসাকেন্দ্র থাকলেও বেশির ভাগেরই অনেক যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে আছে। দেশের সবচেয়ে বড় যে মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল, সেখানেও বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নষ্ট। ফলে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে বাইরে থেকেই সব টেস্ট করাতে হয়। সত্যিকার অর্থে ফ্রি চিকিংসাসেবা নেই।</p> <p>পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছরে বাস্তবায়নের প্রকল্পটি ১৬ বছরে শেষ হয়েছে। প্রকল্পে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হলেও এর বেশির ভাগই নষ্ট পাওয়া যায়। পরিদর্শনে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার বেহাল চিত্র দেখা যায়। শুধু মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল নয়, এ রকম চিত্র প্রায় সব হাসপাতালেই। গত ১৫ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ৮৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হলেও সেবায় এর প্রতিফলন নেই বললেই চলে। অথচ শুধু হাসপাতাল অবকাঠামো নির্মাণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। </p> <p>এ রকম যত্রতত্র বাছবিচারহীন প্রকল্পে নয়ছয় করে লুটে নেওয়া হয়েছে বিপুল অঙ্কের টাকা। হাসিনা সরকারের ১৫ বছরে উন্নয়ন প্রকল্পে মোট ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এ খরচের একটি বড় অংশই লোপাট ও অনিয়মে জলে গেছে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে পদধারী অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে প্রকল্পের অর্থ খরচ করার অভিযোগ রয়েছে। দেখা গেছে, উন্নয়নের নাম দিয়ে কোনো এমপি তাঁর বাড়ির পাশের রাস্তা পাকা করেছেন। কোনো মন্ত্রী নিজের কম দামের জমি বেশি দামে প্রকল্পে বিক্রি করেছেন। কোনো সচিব তাঁর বাড়ির পাশে মা-বাবার নামে করে নিয়েছেন হাসপাতাল; যেসব উন্নয়ন বর্তমানে একরকম বোঝায় পরিণত হয়েছে।</p> <p><strong>স্বাস্থ্য খাতের ৮৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পে অনিয়ম</strong></p> <p>ফেনীর সোনাগাজী ও সদর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্যে পাঁচ কোটি ৯২ লাখ ৮৮৭ টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালে নির্মাণ করা হয় মঙ্গলকান্দি ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল। কিন্তু এক দশক পার হলেও পুরোপুরি চালু হয়নি হাসপাতালটি। একই অবস্থা যশোরের সীমান্তবর্তী শার্শা উপজেলার ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ হাসপাতালের। ১০ বছর আগে নির্মিত হলেও এখনো চালু হয়নি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম। সারা দেশে এমন ২৭টিরও বেশি হাসপাতালের তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে জনবলের অভাবে দেশের ২১টি ট্রমা সেন্টার নিজেই যেন পঙ্গু! এসব হাসপাতাল নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ৫৬০ কোটি টাকা। অর্ধশতাধিক হাসপাতালে চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা।</p> <p>উপজেলা হাসপাতালগুলো ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও বাড়েনি স্বাস্থ্যসেবা কর্যক্রম। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও নেই আধুনিক সেবা। শুধু বরাদ্দের টাকাটা খরচ করে বানানো হয় ভবন। বাড়েনি জনবল, সেবার মান।</p> <p>বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা এসব হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন, তাঁদের আসল উদ্দেশ্যই ছিল ভবন বানানো, যাতে তাঁরা লাভবান হতে পারেন। এখন জরুরি ভিত্তিতে জনবল নিয়োগ করে হাসপাতালগুলো চালু করা দরকার, যাতে পুরোটাই ক্ষতি না হয়।’</p> <p><strong>শিক্ষার ১ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পও প্রশ্নবিদ্ধ</strong></p> <p>গত ১৫ বছরে দেড় লাখ কোটি টাকার বেশি খরচ করেও সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ধরে রাখা যাচ্ছে না। সরকারি প্রাথমিক ও ম্যাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষা নেই বলে দাবি অভিভাবকদের। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারা যা শিখছে তার কিছুই কাজে লাগছে না চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা দুই-তৃতীয়াংশ ছাত্র-ছাত্রীই বেকার থাকছে বলে উঠে এসেছে বিআইডিএসের গবেষণায়। দেশে মোট বেকারের ১২ শতাংশই উচ্চশিক্ষিত বলছে সরকারি সংস্থা বিবিএস। অর্থাৎ এত টাকা খরচ করে যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে, তা কোনো কাজেই লাগছে না তরুণদের। ফলে বেকারের হার বাড়ছেই। আর বেকার বাড়ার পেছনে কর্মমুখী শিক্ষা না থাকাকে দাবি করছেন শিক্ষানুরাগীরা।</p> <p>শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪১টি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫ হাজার ৩৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮৮ হাজার ৪৭৫টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করেছে। ১৩ হাজার ৪২টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মোট দুই হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার মেরামত ও সংস্কার করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বর্তমানে ৫৮ হাজার কোটি টাকার ৩৬টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান, যার বেশির ভাগই ভবন নির্মাণকেন্দ্রিক। অর্থাৎ শিক্ষার মান উন্নয়নের চেয়ে ভবন নির্মাণেই জোর দেওয়া হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, অনেক জায়গায় ভবন পড়ে আছে কিন্তু শিক্ষার্থী বা পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই।</p> <p>বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। শিক্ষাব্যবস্থা হতে হবে কর্মমুখী। লেখাপড়া হতে হবে জ্ঞানকেন্দ্রিক। শুধু কেতাবি শিক্ষা কাজে লাগছে না।’</p> <p><strong>এলজিইডির ৩ লাখ কোটির প্রকল্পেও বিপুল অর্থ লোপাট</strong></p> <p>গত ১৫ বছরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নয়ন হলেও তা ছিল অপরিকল্পিত। যত্রতত্র রাস্তা করে নষ্ট করা হয়েছে ফসলি জমি। অর্ধকিলোমিটার রাস্তাও পিচ ঢালাই করা হয়েছে, যার কারণে অবশেষে পরিকল্পনা কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, দুই কিলোমিটারের বেশি রাস্তা না থাকলে সেটি পাকা করা যাবে না। দেখা গেছে, রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা তেমন প্রয়োজন না থাকলেও বাড়ির পাশে রাস্তা, কালভার্ট, ব্রিজ করে সরকারের অর্থ নষ্ট করেছেন, যার কোনো অর্থনৈতিক আউটপুট নেই।</p> <p>এলজিইডির ২০১৯ সালের তথ্য মতে, মোট সড়কের ৫৩ শতাংশই নিম্নমানের। সংস্থাটির প্রায় ৬২ হাজার কিলোমিটার সড়ক খারাপ বা বেহাল বলে তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ ও অনিয়ম-দুর্নীতিই এলজিইডির বিশাল সড়ক নেটওয়ার্ককে ভঙ্গুর দশায় নিয়ে গেছে।</p> <p>বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, ‘একটি সড়ক নির্মাণের আগে অনেক বিষয় যাচাই করতে হয়। কিন্তু আমাদের এখানে কিছুই মানা হয় না। ঠিকাদারকে একটি রাস্তার কাজ ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে ঠিকাদার নিজের খেয়াল-খুশিমতো সড়ক নির্মাণ করেন। প্রয়োজনীয় তদারকি যেমন হয় না, তেমনি নিম্নমানের কাজের কারণে কাউকে জবাবদিহিও করতে হয় না।’</p> <p><strong>এক লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকার চার লেন প্রকল্পেও লুটপাট</strong></p> <p>গত ১৫ বছরে এক লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পেও লুটপাটের মচ্ছব চলেছে। ৩০ কোটির রাস্তায় খরচ করা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পে কিলোমিটারে ২১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। অথচ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে প্রতিকিলোমিটারে ৩০৬ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ করা হচ্ছে। অন্য প্রকল্প নির্মাণেও এ রকম কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার অপচয় হয়েছে।</p> <p>সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক জরিপে উঠে আসে, আওয়ামী সরকারের ১৪ বছরে সড়ক ও সেতু খাতে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দুর্নীতি করা হয়েছে। মোট ব্যয়ের ৭২ শতাংশ কাজ পেয়েছেন ১৫টি ঠিকাদার।  প্রকল্প নেওয়ার সময় অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় বাড়িয়ে ধরা এক প্রকার রীতিতে পরিণত হয়েছে।</p> <p>টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগে ঘুষ লেনদেনে ২৩ থেকে ৪০ শতাংশ অর্থ লোপাট হয়। ত্রিপক্ষীয় ‘সিন্ডিকেট’ ভাঙতে না পারলে দুর্নীতিবিরোধী কোনো কার্যক্রম সফল হবে না।</p> <p>সাধারণত নতুন সড়ক ২০ বছর পর্যন্ত টিকে থাকবে ধরে নিয়ে বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণের তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে মেরামতের দরকার পড়ে। এমনকি কিছু সড়ক দ্রুতই বেহাল হয়ে যাচ্ছে।</p> <p>বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাদিউজ্জামান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলমান স্থানীয় সড়ক নষ্ট করে দ্রুতগতির ফোর লেন করছি, এটা ঠিক হচ্ছে না। যেকোনো প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সঠিক সমীক্ষা হওয়া জরুরি।’</p> <p><strong>বিদ্যুতের ২ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পেও অনিয়ম-দুর্নীতি</strong></p> <p>আওয়ামী সরকারের ১৫ বছরে সবচেয়ে বেশি লুটপাট হয়েছে দুই লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ খাতের প্রকল্পে। শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে। অথচ বাড়েনি প্রকৃত সক্ষমতা।</p> <p>সম্প্রতি সরকারের বড় দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র মাতারবাড়ী ও রামপাল চালু হয়েছে। অথচ কয়লাসংকটের কারণে মাঝেমধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় এর উৎপাদন। একই অবস্থা কয়লাভিত্তিক অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোরও। এদিকে খুলনায় গ্যাসের জোগান নিশ্চিত না করেই তিনটি পাওয়ার প্লান্ট নির্মাণ করে আট হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ গচ্চা দিয়েছে সরকার। কেন্দ্রগুলো থেকে কখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে, তা কেউ বলতে পারছে না। একই অবস্থা সরকারের অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোরও।</p> <p>এদিকে ক্ষমতার বলয়ে থাকা প্রভাবশালীদের পকেট ভারী করতে বিদ্যুতের প্রি-পেইড মিটারের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে স্মার্ট মিটার ভাড়া বাবদ অত্যধিক চার্জ কেটে নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।</p> <p>এ ছাড়া উন্নয়নের নামে রেলপথ মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সেতু বিভাগ, নৌপরিবহন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত ও আইসিটির কয়েক লাখ কোটি টাকার প্রকল্পেও লুটপাটের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।</p>