<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হাসান মাহমুদ আশাবাদী, আজ ম্যাচের তৃতীয় দিনে যদি ২০০ রানের মতো </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">লিড</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> নেওয়া যায়, তবে ভাগ্যের চাকা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যাবে বাংলাদেশের। মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে স্কোরবোর্ডের অবস্থা বিবেচনায় খুবই আশাবাদী উচ্চারণ। ৭ উইকেট হাতে আছে বটে, তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে পাঠাতেই বাংলাদেশ দলকে করতে হবে আরো ১০১ রান। সেখানে বাড়তি আরো ২০০ রান করে প্রোটিয়াদের ওপর চড়াও হওয়া আপাতত বাংলাদেশের জন্য দুঃসাহসিক অভিযান।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অবশ্য টেস্ট ক্রিকেট মুহুর্মুহু রং বদলায়। মাহমুদুল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের মধ্যকার চলমান জুটিতে আস্থার ছায়া আছে। দিনের খেলা শেষে তাঁরা ফেরার সময় ডাগ আউটের সামনে দৃশ্যমান হলেন প্যাড পরিহিত লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তার মানে ব্যাটিং লাইনআপে ভরসাও আছে। ঠিক পেছনে, গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে সারি সারি সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য হাততালি দিচ্ছেন, দু-একজন সাজঘরফেরত মাহমুদুল-মুশফিককে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে সহকর্মীকে দিয়ে ছবিও তুললেন। পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই, মিরপুরে বাংলাদেশের ওপর হার থাবা মেলে আছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">খেলা শেষ হওয়ার আগে মাঠ থেকে পুরো গ্যালারি রুদ্ধশ্বাসে তাকিয়ে স্টেডিয়ামের জায়ান্ট স্ক্রিনে, মাহমুদুল স্টাম্পড হননি তো! ডেন পিটকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে তুলে মারতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন বাংলাদেশি ওপেনার। প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক বল ধরে স্টাম্প ভাঙার আগে মাহমুদুলের ব্যাট ক্রিজে ঢুকেছিল কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। টিভি আম্পায়ার লম্বা সময় নিলেন, বারবার রিপ্লে দেখার পর ব্যাটারের পক্ষে যায় সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট, তা-ও আবার টেস্টের মতো আপাত নীরস খেলার এই মুহূর্তে টিভি আম্পায়ার সবুজ বাতি জ্বালাতেই জোর হাততালি দেন ভেন্যুর নিরাপত্তায় নিয়োজিত সেনা সদস্যরা।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অন্য দিন এই আসনগুলোয় বসত দর্শকরা, কিন্তু নিরাপত্তার কারণে মিরপুর টেস্টে গ্যালারির নিচের সারিতে দর্শকদের বসা বারণ। তাতে নির্ঝঞ্ঝাটে এগিয়ে চলেছে ক্রিকেট, কিন্তু মাঠের ২২ গজে তো আর নিরাপত্তা দেওয়ার বিধান নেই। ব্যাট-বলের লড়াই উন্মুক্ত ওখানে। সেই লড়াইয়ে জয়ী হন সামর্থ্যবান, বুদ্ধিমান ও অকুতোভয় যোদ্ধা। যেমন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কাইল ভেরেইন। গত পরশু তিনি যখন ব্যাট হাতে নামেন, তখন দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৯ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে কিছুটা চিন্তিত। অন্যদিকে ৫ উইকেট নিয়ে উত্ফুল্ল তাইজুল ইসলাম। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকাল হলো পালাবদল। ক্রমাগত সুইপ শট খেলে তাইজুল তো বটেই, বাংলাদেশের আর সব স্পিনারকে নির্বিষ করে দিয়েছেন ভেরেইন। দিনের শেষে এসে অবশ্য তিনি বলেছেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গতকালের (প্রথম দিন) তুলনায় আজ উইকেট (ব্যাটিংয়ের জন্য) ভালো ছিল।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> তার চেয়েও ভালো ছিল এই প্রোটিয়া উইকেটরক্ষকের ব্যাটিং মানসিকতা। গরম, উইকেটে অনভ্যস্ততা, ম্যাচ পরিস্থিতি ইত্যাকার সব প্রতিকূলতা যে দক্ষতায় জয় করেছেন ভেরেইন, তা দেখে মুগ্ধ জাতীয় দলের নির্বাচক কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">দেখলেন, কী ইজি (সহজ) ব্যাটিং করল!</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> ভেরেইনের দেখাদেখি উইয়ান মুল্ডারও নিজেকে অলরাউন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিতে তৎপর হলেন। তাতে মনে হচ্ছিল, ঘরের মাঠে বাংলাদেশ নয়, প্রোটিয়ারা খেলছে! অবশ্য ভেরেইনের কাছে কন্ডিশন খুব বড় ব্যাপার নয় সম্ভবত। ১৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে গতকাল দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা এই প্রোটিয়া প্রথমবার তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ক্রাইস্টচার্চে। তার মানে শীত কিংবা গরম, স্পিন কিংবা সুইং</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কোনোটাই বুকে কাঁপন ধরায় না তাঁর। তবে নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনের সঙ্গে নিজ দেশের সামান্য মিল আছে। সে কারণেই কিনা, মিরপুরের সেঞ্চুরিটাকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন ভেরেইন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরিস্থিতি মেনে ম্যাচ গড়ালে ম্যাচসেরার পুরস্কার তাঁরই প্রাপ্য। নাকি আজ সব সরল অঙ্ক উল্টে দেবেন মাহমুদুল, মুশফিক কিংবা অন্য কেউ। ভেরেইন মাত্রই ক্যারিয়ারের ১৯তম টেস্ট খেলছেন। তা-ও আবার অচেনা কন্ডিশনে। সে তুলনায় বাংলাদেশের ড্রেসিংরুম অভিজ্ঞতায় টইটম্বুর।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">শুধু অনিশ্চয়তাকে জয় করার সাহসে ঘাটতি। গতকাল কাগিসো রাবাদার বলটাকে যেভাবে চামচে করে ফিল্ডারের হাতে তুলে দিয়েছেন সাদমান ইসলাম, তার মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা একটাই</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভয়। কেশব মহারাজের বল সামলাতে ফ্রন্ট ফুটে গিয়েও কেন শেষ মুহূর্তে ওপেন স্টান্স হয়ে গেলেন নাজমুল হোসেন? উত্তর কাছাকাছি</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনিশ্চয়তা। মাঝে রাবাদার ছোবল মারা বল থেকে ব্যাটটাকে দূরে রাখতে পারেননি মমিনুল হক। তাতে আবারও ব্যর্থ টপ অর্ডার</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">৫৯ রানে ৩ উইকেট নেই বাংলাদেশের। তাতে দ্বিতীয় দিনেই টেস্ট শেষের মন খারাপ করা গল্প লিখতে দেয়নি তরুণ ওপেনার মাহমুদুল ও মুশফিকের ইতিবাচক ব্যাটিং। তাঁদের ওপরই আপাতত বাজি ধরছে বাংলাদেশ দল।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশ দলের প্রথম বাজিটা অবশ্য কাজে আসেনি। স্পিনার বাড়াতে গিয়ে একাদশে মাত্র একজন পেসার নিয়ে খেলছে স্বাগতিকরা। তাইজুল মুখে হাসি ফোটালেও তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রোটিয়া লোয়ার অর্ডার শেষ করার জন্য একমাত্র পেসার হাসানই সহায় হয়েছেন নাজমুলের। মুল্ডার ও মহারাজকে টানা দুই বলে ফেরানো এই পেসারের হ্যাটট্রিক অবশ্য হয়নি। শেষ দুটি উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ততক্ষণে প্রথম ইনিংসে ২০২ রানের লিড নিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, মিরপুরের ইতিহাস যে অগ্রগামিতাকে জয়ের নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। </span></span></span></span></span></p> <p> </p>