<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পট্ট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলতে বোঝায় কাপড়। তুলি দিয়ে নিজ হাতে ছবি আঁকাকে বলে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিত্রলিখন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। এককালে এপার-ওপার দুই বাংলায় কাপড়ের ওপর ছবি আঁকার রীতি বেশ প্রচলিত ছিল। তবে এর শুরুটা হয়েছিল কলকাতায়। উত্তরে বটতলা ও দক্ষিণে কালীঘাট কলকাতা শহরের। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে বটতলা ও কালীঘাট  ছিল কলকাতার দুই প্রধান সংস্কৃতিকেন্দ্র। বটতলায় শেঠ ও জমিদারদের বাস ছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য, হাট-বাজারের জন্যও এর ছিল বেশ নামডাক। অন্যদিকে কালীঘাট ছিল কিছুটা নির্জন। কালীঘাটে আগে থেকে একটি মন্দির থাকলেও সেখানে নতুন করে মন্দির নির্মাণ করেন চৌধুরী বংশের সন্তান সন্তোষ রায়, ১৮০৯ সালে। ধীরে ধীরে মন্দিরে তীর্থযাত্রীদের আসা-যাওয়া বাড়তে থাকে। অধিক লোকসমাগমের কারণে স্বর্ণকার, কুম্ভকার, শঙ্খকার প্রভৃতির সঙ্গে চিত্রকর পটুয়ারাও এখানে আসন গাড়তে শুরু করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নতুন মন্দির প্রতিষ্ঠার বছর বিশেক পর কালীঘাটের পটের জনপ্রিয়তা ক্রমে বাড়তে শুরু করে। কালীঘাটের পট প্রথম আঁকা শুরু করে স্থানীয় কুমার সম্প্রদায়। শুরুর দিকে সাদা কাগজে কালো কালির সাদামাটা ড্রয়িং, এরপর শিব, দুর্গা, কালীর চিত্র ফুটে উঠত পটে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দেব-দেবীর মূর্তির ছবি অঙ্কন চলল বেশ কিছু দিন। ধীরে ধীরে শিল্পীরা সামাজিক ঘটনাবলির দৃশ্য, নাটকের দৃশ্য, গুরুঠাকুর, মেছুনি, নর্তকী, কামাখ্যার পুরুষদের ভেড়া বানিয়ে ছবি আঁকাতে শুরু করেন। তারকেশ্বরের মহান্ত আর এলোকেশীকে নিয়েও অসংখ্য পট আঁকা হয়েছে। ধারণা করা হয়, এসব শিল্পী এসেছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কালো কালির ড্রয়িং দিয়ে শুরু হলেও চাহিদার কারণে পটুয়ারা আঁকতে শুরু করেন রঙিন পট। বিলাতি জলরঙে আঁকা এসব পট ছিল জীবন্ত এক শিল্প। পটের ব্যবসা শুরু হয় তীর্থপণ্য হিসেবে। তীর্থযাত্রীরা কালীঘাটে এলে তীর্থের স্মারক হিসেবে এসব পট কিনে নিয়ে বাসায় ফিরতেন। সাধারণত দুই শ্রেণির পট ছিল</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক চিত্রের ছোট ছোট চৌকো পট ও বহু চিত্রের </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দিঘল পট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বা </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জড়ানো পট</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। ১০ থেকে ২০ হাত কাপড় বা কাগজের ওপর পৌরাণিক কাহিনি চিত্রিত করতেন পটুয়ারা। এরপর সুর সহযোগে সেই কাহিনিকাব্য আবৃত্তি করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন। দীর্ঘ এই পটগুলোর দুই প্রান্তে দুটি বাঁশের দণ্ড লাগিয়ে একটিতে পট জড়িয়ে রাখা হতো। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৮২০-২২ সালের মধ্যে কলকাতায় লিথোগ্রাফিক প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রেসে ছবি ও ছবির বই ছাপানো শুরু হলে কালীঘাটের পটুয়াদের দুর্দিন ঘনিয়ে আসে। </span></span></span></span></p> <p> </p>