<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১৫ বছর অর্থ আর পেশিশক্তির ক্রমবর্ধমান প্রভাব দেখিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি এক চরম দুঃসময় পার করে এসেছে। রাজনীতিতে আদর্শ, জনকল্যাণ, আত্মত্যাগ ও নৈতিকতা দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। আদর্শচ্যুত রাজনীতি দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা বিঘ্নিত করেছে। গঠনমূলক সমালোচনা না থাকায় জবাবদিহি ছিল না। জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতির ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়েছে সাধারণ মানুষ। দেড় দশক ধরে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন স্তরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের এক চরম অবক্ষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। এতে কর্তৃত্ববাদ কিংবা স্বৈরাচার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন একটি বাস্তবতায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেয় গত ৮ আগস্ট। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার এটিই প্রথম নয়। এর আগেও দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এ ধরনের সরকার এসেছে। কিন্তু এবারের সরকার আগের যেকোনো অন্তর্বর্তী সরকারের চেয়ে আলাদা। কারণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার একটি গণবিপ্লবের ফসল। একটি গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিগত সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েছে এই সরকার। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্তমান সরকারের ১০০ দিন পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা উঠে এসেছে তাঁর এই ভাষণে। তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা বলেছেন। দেশের ভবিষ্যৎ নিষ্কণ্টক করতে এসব সংস্কার প্রয়োজন। প্রশাসন থেকে শুরু করে সর্বস্তরে এই সংস্কার করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে বলেছেন, কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারকাজ শেষ করেই কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন আয়োজন করবে তাঁর সরকার। সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিত করা যেতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে বলেছেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‌‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে যাবে। এর পর থেকে নির্বাচন আয়োজন করার সব দায়িত্ব তাদের ওপর বর্তাবে। নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদসহ আরো কিছু কাজ শুরু করে দিতে পারবে, যা একটি অবাধ নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিরা পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে যাতে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যেও সরকার কাজ করছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> স্থায়ী নির্বাচনব্যবস্থা প্রণয়নে গুরুত্বারোপ করে তিনি এমন একটি নির্বাচনব্যবস্থা সৃষ্টি করার কথা বলেছেন, যা যুগ যুগ ধরে অনুসরণ করা হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ কথা অনস্বীকার্য, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। জবাবদিহিমূলক সরকার গঠনেরও পূর্বশর্ত হচ্ছে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। নির্বাচন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশ। কিছুদিন ধরে দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ দাবি করে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি, পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্তের কথা তাঁর ভাষণে তুলে ধরেছেন, তাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটল।   </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত করতে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।</span></span></span></span></p> <p> </p>