<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে তাকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আরেক আদেশে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ ১৩ জনকে কারাগারে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি, হত্যা, আটক-নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগের তদন্ত চলছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারক মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কারাগারে রাখার নির্দেশ দেওয়া ১৩ জন হলেন : সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, শাজাহান খান, গোলাম দস্তগীর গাজী, জুনাইদ আহমেদ পলক, কামাল আহমেদ মজুমদার, আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ১৭ অক্টোবর প্রথম বিচারিক কাজে বসেন ট্রাইব্যুনাল। প্রথম দিনই শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির দুটি আবেদন করে প্রসিকিউশন। অবেদনে শুনানির পর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। তাদের গ্রেপ্তার করে ১৮ নভেম্বর আদালতে হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালের এই আদেশের আগেই অভিযুক্ত ৪৬ জনের মধ্যে ১৪ জন বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। গতকাল সকাল পৌনে ১১টার দিকে তাদের কাঠগড়ায় তোলা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অপরাধের সর্বোচ্চ দায় শেখ হাসিনার </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিচারিক কাজের শুরুতেই চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে সংবিধানের বিভিন্ন সংশোধনী, বিভিন্ন ঘটনায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তুলে ধরেন নিবর্তনমূলক বিভিন্ন আইনের হয়রানিমূলক মামলার পরিসংখ্যানও। তুলে ধরা হয় ক্ষমতার দেড় দশকে অর্থপাচারের পরিসংখ্যান। শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, শেখ হাসিনা নিজ কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করার জন্য তিনি এবং তার ক্ষমতার সহযোগীরা শান্তি-সংহতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে জাতিকে বিভক্ত করেছেন। ১৪ দলভুক্ত রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা এ কাজে তাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তাজুল ইসলাম বলেন, গত জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে আগ্নেয়াস্ত্র এমনকি মরণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। তার অনুগত বাহিনী, দলীয় নেতাকর্মীরা ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে চালিয়েছেন গণহত্যা। নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চ পদধারী (সরকারপ্রধান) হিসেবে এসব অপরাধের সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (ঊর্ধ্বতনের দায়) অবশ্যই শেখ হাসিনার। এসব অভিযোগের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দুই মাস সময় চান তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেখ হাসিনা কোথায়? </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ সময় শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারের অগ্রগতি জানতে চেয়ে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জিজ্ঞেস করেন, শেখ হাসিনা কোথায়? জবাবে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এবং সরকারের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাকে ধরতে ইনটারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে তাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গতকাল (১৭ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে তুলে ধরেছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গোটা জাতিকে হত্যা করতেও কুণ্ঠা বোধ করতেন না</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-আন্দোলনে হত্যা-গণহত্যা চালানোর পরও তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা-অনুতাপ নেই। একজন ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে তারা গোটা জতিকে হত্যা করতেও কুণ্ঠা বোধ করতেন না। এর প্রমাণ হচ্ছে, গত ৫ আগস্ট বিকেলে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও পূর্বনির্দেশনা অনুসারে ওই দিন মধ্যরাত পর্যন্ত গণহত্যা চলে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনকে হাজির করার বিষয়ে শুনানিতে তাজুল ইসলাম বলেন, গত ২৭ অক্টোবর ১৪ জনকে হাজির করার নির্দেশ ছিল। এই ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনকে হাজির করা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আরেক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে টাঙ্গাইলের মির্জপুর থানার অধীনে রিমান্ডে আছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ট্রাইব্যুনালে পাঁচ অভিযুক্তের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী, আজিজুর রহমান দুলু, ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ, নাজিয়া কবির ও শাহরিয়ার কবির বিপ্লব। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শুনানির শুরুতে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীর বিষয়ে ট্রাইব্যুনালকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেখতে পাচ্ছি বিজ্ঞ আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আছেন। খুব সম্ভবত তিনি আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতে চাচ্ছেন। কিন্তু সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানতে পেরেছি, তিনি সরকারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট পদে যুক্ত হতে যাচ্ছেন। এ অবস্থায় তিনি যদি আসামিপক্ষের আইনজীবী নিযুক্ত হন, তাহলে তাতে স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ সময় আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। সরকার যদি কোনো পদে আমাকে নিতে চায়, সে পদে আমি না-ও যেতে পারি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল রেজিস্ট্রারের তত্ত্বাবধানে আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলুকে তার মক্কেল তৌফিক-ই-এলাহী ও ফারুক খানের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রাখা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পেয়ে যাব। এর পরই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>