<p>মাসের পর মাসের অচলাবস্থার পর ইসরায়েল ও হামাস গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি মুক্তির চুক্তির পথে এগোচ্ছে বলে নতুন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।</p> <p>পরোক্ষ আলোচনার সঙ্গে যুক্ত একজন জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, আলোচনা এখন ‘নির্ধারণী ও চূড়ান্ত পর্যায়ে’ রয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজও বলেছেন, এর আগে কোনো চুক্তি কখনো এতটা কাছাকাছি আসেনি।</p> <p>বিবিসি আরো জানিয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর তাদের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা ফের শুরু করেছে। একই সঙ্গে ১৪ মাসের যুদ্ধে উভয় পক্ষেরই চুক্তি করার আগ্রহ বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।</p> <p>এ ছাড়া একটি ‘কার্যকরী স্তরের’ ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল বর্তমানে কাতারের রাজধানী দোহায় রয়েছে। সেখানে কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="ইসরায়েল নিজস্ব পরিকল্পনায় মধ্যপ্রাচ্যের রূপান্তর চায়" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/12/1734018576-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>ইসরায়েল নিজস্ব পরিকল্পনায় মধ্যপ্রাচ্যের রূপান্তর চায়</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/12/12/1456798" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা একটি তিন পর্যায়ের পরিকল্পনার কথা বলেছেন, যার অধীনে প্রথম ৪৫ দিনের মধ্যে গাজায় আটক বেসামরিক নাগরিক ও নারী সেনা সদস্যদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং ইসরায়েলি বাহিনী শহরের কেন্দ্রস্থল, উপকূলবর্তী রাস্তা ও মিসর সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে সরে যাবে।</p> <p>এ ছাড়া গাজা থেকে বিতাড়িত জনগণ যাতে উত্তরে ফিরে যেতে পারে, সে জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করা হবে বলেও তিনি জানান। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি বন্দিদের মুক্তি ও সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে, আর তৃতীয় পর্যায়ে যুদ্ধ শেষ হবে। গাজায় এখনো আটক ৯৬ জনের মধ্যে ৬২ জন জীবিত আছে বলে ইসরায়েল ধারণা করছে।</p> <p>এই পরিকল্পনাটি ৩১ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষিত চুক্তির ওপর ভিত্তি করেই তৈরি বলে মনে হচ্ছে। তবে সব পক্ষের মতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় এখনো চূড়ান্ত করা বাকি। এর আগে অক্টোবরের মাঝামাঝি একটি আলোচনায় চুক্তি ব্যর্থ হয়। কারণ হামাস স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কাতারের মধ্যস্থতা ফের শুরু" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/05/1733411526-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কাতারের মধ্যস্থতা ফের শুরু</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/12/05/1454236" target="_blank"> </a></div> </div> <p>কাটজের মুখপাত্রের মতে, তিনি সোমবার ইসরায়েলি সংসদের পররাষ্ট্র কমিটিকে বলেছেন, ‘পূর্ববর্তী চুক্তির পর থেকে আমরা এতটা কাছাকাছি আসিনি।’ পূর্ববর্তী চুক্তি বলতে তিনি গত বছরের নভেম্বরের জিম্মি ও ফিলিস্তিনি বন্দি বিনিময়ের কথা বুঝিয়েছেন।</p> <p>পরে তিনি পশ্চিম তীরের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে এক্সে লেখেন, ‘গাজা নিয়ে আমার অবস্থান স্পষ্ট। গাজার সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা ধ্বংস করার পর ইসরায়েল গাজার ওপর নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ রাখবে এবং পুরোপুরি কার্যক্রম পরিচালনার স্বাধীনতা থাকবে। আমরা গাজা থেকে ইসরায়েলি সম্প্রদায় ও নাগরিকদের ওপর কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলতে দেব না। আমরা ৭ অক্টোবরের আগের বাস্তবতায় ফিরে যেতে দেব না।’</p> <p>কাটজের এমন মন্তব্য আলোচনায় একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হতে পারে, যেখানে হামাসের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা চলছে। তবে ইসরায়েলে এগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ চুক্তির পক্ষে কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রিসভার সমর্থন নিশ্চিত করতে এটি অপরিহার্য।</p> <p>গাজা শাসনকারী ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত এবং ২৫৩ জন জিম্মি হয়। তার পর থেকে ১০০ জনেরও বেশি জিম্মিকে আলোচনার মাধ্যমে বা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে মুক্ত করা হয়েছে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="কায়রোতে গুতেরেসের বার্তায় গাজার ‘ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক’ চিত্র" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/02/1733145188-22166c445cedd060e68c4c0dcdb545af.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>কায়রোতে গুতেরেসের বার্তায় গাজার ‘ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্মক’ চিত্র</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/12/02/1453106" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ফিলিস্তিনি সূত্রের মতে, ৭ ডিসেম্বর মধ্যস্থতাকারীদের অনুরোধে ইসরায়েল ছয় ঘণ্টার জন্য গাজায় বিমান ও ড্রোন নজরদারি বন্ধ রাখে, যাতে হামাস জিম্মিদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। কাতারপন্থী পত্রিকা আল-আরাবি আল-জাদিদ তখন জানায়, হামাস অসুস্থ ও প্রবীণ ইসরায়েলি জিম্মি ও মার্কিন নাগরিকদের একটি তালিকা মিসরের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। সেই তালিকায় ফিলিস্তিনি জিম্মিদের নাম রয়েছে বলেও পত্রিকাটি জানায়, যাদের মুক্তির দাবি করছে হামাস।</p> <p>গাজায় যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েল হামাসের শাসন ও সামরিক সক্ষমতা ধ্বংসের প্রতিশ্রুতি দেয়। হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এ যুদ্ধে নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা এই তথ্যকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। এ ছাড়া গাজার ২৩ লাখ জনসংখ্যার অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত হয়েছে, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে খাদ্য ও সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে এবং সেখানে এখন ব্যাপক অনাহার চলছে।</p> <p>সর্বশেষ নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় নতুন গতি এনেছে। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আবারও সতর্ক করে বলেছেন, তার দায়িত্ব নেওয়ার আগেই একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা উচিত, অন্যথায় ‘এটি সুখকর হবে না’।</p>