<p>পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্রায় এক হাজার সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। শহরের পুলিশপ্রধান বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।</p> <p>ইসলামাবাদের পুলিশপ্রধান আলী রিজভি জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের অভিযানে ৬০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে গত তিন দিনে মোট গ্রেপ্তারকৃতর সংখ্যা বেড়ে ৯৫৪-তে পৌঁছয়। আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, টিয়ার গ্যাস, বন্দুকসহ বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।</p> <p>ইমরান খানের সহযোগীরা অভিযোগ করেছেন, রাতভর পুলিশের বিক্ষোভ দমন অভিযানের সময় সহিংস সংঘর্ষে শত শত মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে, যেখানে ইমরানের স্ত্রী নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তবে তারা এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। তাদের দাবি, কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইমরান খানের শীর্ষ সহযোগী ও খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গন্ডাপুর অভিযোগ করেছেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘শত শত মানুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’</p> <p>অন্যদিকে রিজভি দাবি করেছেন, এই অভিযানে কোনো গুলি ছোড়া হয়নি এবং এটি আধাসামরিক বাহিনীর সহায়তায় পরিচালিত হয়েছে। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ও ইসলামাবাদ পুলিশের মুখপাত্র গন্ডাপুরের অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।</p> <p>গন্ডাপুর আরো বলেছেন, ‘ইমরান খানের স্ত্রী ও আমাকে সরাসরি আক্রমণ করা হয়েছে।’ তিনি মানসেহরায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।</p> <p>এদিকে হাজারো সমর্থকের নেতৃত্ব দেওয়া ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা খান কোনো অক্ষত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। তবে তিনি গন্ডাপুরের সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেননি।</p> <p>এ ছাড়া ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের মুখপাত্র জুলফিকার বুখারি জানান, ‘গণহত্যার’ কারণে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। তবে গন্ডাপুর বলেছেন, ‘ইমরান খান নিজে না বলা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’</p> <p>রবিবার শুরু হওয়া এ আন্দোলনে এর আগে সংঘর্ষে আধাসামরিক বাহিনীর চারজন সদস্য এবং দুজন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বুধবার আন্দোলনকারীদের অবস্থানস্থল পরিদর্শন করে জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সফলভাবে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, পিটিআইয়ের কাছে যদি কোনো প্রমাণ থাকে যে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালিয়েছে, তবে তা দাখিল করুক।</p> <p>জিও নিউজ ও এআরওয়াই অবশ্য জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী মধ্যরাতে অন্ধকারে অভিযান চালায় এবং ব্যাপক টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। বুধবার শহরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে এবং রাস্তায় রাখা শিপিং কনটেইনারগুলো অপসারণ করতে দেখা গেছে। শহরের রেড জোন, যেখানে পার্লামেন্ট, কূটনৈতিক অঞ্চল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভবন রয়েছে, সেখানে ওই সময় আন্দোলনকারীরা ছিল না। তবে বুশরা খানের ব্যবহৃত একটি ট্রাকসহ আন্দোলনকারীদের কিছু যানবাহনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পিটিআই গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে থাকা ইমরান খানের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত রেড জোনে অবস্থান কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছিল।</p> <p>সূত্র : রয়টার্স</p>