<p>এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। দীর্ঘ সময় ধরে লড়াই চালাতে গিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর রিজার্ভ সেনারা ক্লান্তি ও অবসাদে ভুগছেন। এর মধ্যে লেবাননের সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুরু হওয়াটা তাদের হতাশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।</p> <p>গত বছরের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য অন্তত তিন লাখ রিজার্ভ সেনা সদস্যকে তলব করে ইসরায়েল। গাজা যুদ্ধে অংশ নেওয়া রিজার্ভ সেনাদের ১৮ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের ওপরে, যাদের মূলত সামরিক কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত ছিল। সেটি না করে রিজার্ভ সেনাদের কাজের মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছে। কয়েক দিন আগে ইসরায়েলি রিজার্ভ ফোর্সের সদস্য এরিয়েল সেরি লেভি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, সেনারা হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। এই যুদ্ধ শেষ করা উচিত। তারা কেউ নিয়মিত সেনা সদস্য নন। ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে রিজার্ভ সেনারা সব সময়ই প্রস্তুত। কিন্তু এখন এই মুহূর্তে তারা সত্যিই ক্লান্তি অনুভব করছেন।</p> <p><strong>যুদ্ধবিরতি নিয়ে আশাবাদী লেবাননের প্রধানমন্ত্রী</strong></p> <p>ইসরায়েলের সঙ্গে হিজবুল্লাহগোষ্ঠীর যুদ্ধবিরতি চুক্তি কয়েক দিন বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ঘোষণা করা হতে পারে বলে গভীর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি। মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন দূত আমোস হোচেস্টেইনের ইসরায়েল সফর করতে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে মিকাতি যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।</p> <p>মিকাতি বলেছেন, আগামী মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হবে বলে তাঁঁর বিশ্বাসই হচ্ছিল না। কিন্তু গত বুধবার মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন দূত আমোস হোচেস্টেইনের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এর পর থেকে তিনি এ বিষয়ে অনেক বেশি আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। লেবাননের আল জাদিদ টিভিকে মিকাতি বলেন, আমার সঙ্গে ফোন কলে আমোস বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আমাদের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি ৫ নভেম্বরের আগেই হতে পারে। এদিকে হিজবুল্লাহ প্রধান নাইম কাসেমও ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাত অবসানের বিষয়ে সুর নরম করেছেন। তিনিও গ্রহণযোগ্য শর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করতে হিজবুল্লাহর আগ্রহের বিষয়টি জানিয়েছেন।</p> <p>লেবাননে সংঘাত অবসানে সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ করার কথা। এই আলোচনায় মার্কিন দূত আমোস হোচেস্টেইন এবং ব্রেট ম্যাকগার্ক থাকবেন বলে ব্যাপকভাবে আশা করা হচ্ছে। গাজায় পৃথক স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির একটি সম্ভাব্য প্রস্তাব হামাস প্রত্যাখ্যান করার পর যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ইসরায়েল সফর করছেন।</p> <p>গত বছর ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই হামাস ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সীমান্ত এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের হিজবুল্লাহগোষ্ঠী সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে  দুই পক্ষের লড়াই নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। হিজবুল্লাহকে ধ্বংসের নামে লেবাননেও ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।</p> <p>এদিকে গাজায় কোনো ধরনের স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানবে না হামাস। গতকাল বৃহস্পতিবার গাজার স্বাধীনতাকামী সংগঠনটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা এ কথা বলেন। এদিকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে  খুব দ্রুত যুদ্ধবিরতি হতে পারে বলে গভীর আশাবাদ প্রকাশ করেছে লেবানন সরকার।</p> <p>হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা  তাহের আল নানু বলেন, যুদ্ধে সাময়িক বিরতি দেওয়ার চিন্তাধারার অর্থ দাঁড়ায় যে পরবর্তী সময়ে আগ্রাসন আবারও শুরু করা হবে। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থা এরই মধ্যে প্রকাশ করেছি। হামাস শুধু যুদ্ধের স্থায়ী অবসানকে সমর্থন করে। কোনো সাময়িক বিরতিতে হামাস রাজি নয়। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকারী মধ্যস্থতাকারীরা এক মাসের কম সময়ের মেয়াদের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিতে পারেন বলে আশা করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি আলোচনায় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গত বুধবার এ কথা জানায়। গত সোমবার দোহায় মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া, সিআইএ পরিচালক বিল বার্নস এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানি একটি বৈঠক শেষ করেছেন।</p> <p>সূত্র : এএফপি, আলজাজিরা</p>